উত্তর প্রদেশ সরকার রাজস্ব সংক্রান্ত বিষয়গুলির অভিযোগের তদন্ত প্রক্রিয়ায় একটি বড় প্রশাসনিক পরিবর্তন এনেছে। এত দিন পর্যন্ত যে সব মামলার তদন্ত করতেন লেখপাল, তাঁদের রিপোর্টকে চূড়ান্ত হিসেবে গণ্য করা হবে না। নতুন ব্যবস্থার অধীনে, এখন নায়েব তহসিলদার স্তরে তদন্ত হবে এবং চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন উপ-জেলাশাসক (এসডিএম)। মুখ্যমন্ত্রী কার্যালয় কর্তৃক ‘জনতা দর্শন’ কর্মসূচির সময় ক্রমাগত আসা অভিযোগগুলি বিবেচনা করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
লেখপালের বদলে নায়েব তহসিলদারের উপর দায়িত্ব
এত দিন পর্যন্ত জমি বিবাদ, আয়-প্রমাণপত্র, আবাসিক-প্রমাণপত্র, জাতি-প্রমাণপত্র, উত্তরাধিকারের মতো রাজস্ব সংক্রান্ত অভিযোগের প্রাথমিক তদন্ত করতেন লেখপাল। কিন্তু সরকারের কাছে ক্রমাগত এই ফিডব্যাক আসছিল যে অভিযোগকারীরা লেখপাল স্তরের তদন্তে সন্তুষ্ট নন। এই সমস্ত ক্ষেত্রে স্বচ্ছতার অভাব এবং পক্ষপাতিত্বের অভিযোগও উঠছিল।
এই পরিস্থিতি বিবেচনা করে, মুখ্যমন্ত্রী কার্যালয় তদন্ত প্রক্রিয়াকে আরও স্বচ্ছ ও কার্যকর করতে একটি বড় পদক্ষেপ নিয়েছে। এখন লেখপালের রিপোর্টকে কেবল একটি সহায়ক নথি হিসেবে গণ্য করা হবে, যেখানে তদন্তের সম্পূর্ণ দায়িত্ব থাকবে নায়েব তহসিলদারের উপর। নায়েব তহসিলদার এখন প্রতিটি ক্ষেত্রে অভিযোগকারীর ব্যক্তিগত শুনানির পরেই রিপোর্ট তৈরি করবেন।
চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এসডিএম স্তরে
রাজস্ব বিভাগে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য এই ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে যে, এখন থেকে যেকোনো অভিযোগের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন উপ-জেলাশাসক (এসডিএম)। অতিরিক্ত মুখ্য সচিব (রাজস্ব) এস পি গোয়েল সকল বিভাগীয় কমিশনার এবং জেলাশাসকদের স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন যে, নায়েব তহসিলদারের নীচের কোনো আধিকারিক এখন থেকে রাজস্ব মামলার তদন্ত করবেন না।
সরকারের ধারণা, এর ফলে অভিযোগ নিষ্পত্তিতে স্বচ্ছতা বাড়বে এবং দুর্নীতির রাশ টানা যাবে। একই সঙ্গে, উচ্চ স্তরে তদন্ত ও সিদ্ধান্তের প্রক্রিয়া হওয়ার কারণে জনগণের কাছে আরও নির্ভরযোগ্য ও নিরপেক্ষ সমাধান পৌঁছানো সম্ভব হবে।
প্রশাসন সক্রিয়
মুখ্যমন্ত্রী কার্যালয়ের পক্ষ থেকে এই সিদ্ধান্ত ‘জনতা দর্শন’-এ ক্রমাগত আসা অভিযোগের ভিত্তিতে নেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, এখন থেকে কেবল কাগজপত্রি কাজ চলবে না, বরং অভিযোগকারীর শুনানিও বাধ্যতামূলক করা হবে। সরকারের উদ্দেশ্য হল সাধারণ মানুষের জন্য ন্যায় নিশ্চিত করা এবং রাজস্ব সংক্রান্ত বিষয়গুলিতে দুর্নীতির সম্ভাবনা সম্পূর্ণভাবে দূর করা।
এই সিদ্ধান্ত রাজ্য প্রশাসনের সেই সক্রিয়তাকে প্রতিফলিত করে, যেখানে সাধারণ মানুষের সমস্যাগুলিকে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে দ্রুত এবং কার্যকর সমাধানের দিকে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। নতুন ব্যবস্থা শুধু তদন্ত প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করবে না, বরং শাসন ব্যবস্থার উপর মানুষের আস্থা বাড়াবে।