স্বাস্থ্য ভবনে গ্রুপ সি-তে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে লক্ষাধিক টাকার প্রতারণার অভিযোগে ধরা পড়েছেন রাজীব দাস নামের এক হুগলি বাসিন্দা। ইলেকট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানার পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এই ধৃত ব্যক্তি নিজেকে স্বাস্থ্য ভবনের কর্মী পরিচয় দিয়ে একজন যুবকের কাছ থেকে কয়েক লক্ষ টাকা হাতিয়ার করেন। যুবককে চাকরির অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটারও দেওয়া হয়, যা পরে নকল হিসেবে ধরা পড়ে।পুলিশের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঘটনার সূত্রপাত চলতি বছরের জুন মাসে। ওই যুবক ইলেকট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানায় অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। অভিযোগে বলা হয়েছে, রাজীব দাস ওই যুবককে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে টাকা নিয়ে নেন এবং একটি নকল অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটারও সরবরাহ করেন। যুবক ছুটি নিয়ে স্বাস্থ্য ভবনে পৌঁছালে বুঝতে পারেন যে লেটারটি ভুয়া। এরপরই তিনি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
পুলিশি অভিযান ও গ্রেফতার
তদন্তের ভিত্তিতে পুলিশ রাজীব দাসকে গ্রেফতার করে। ইলেকট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানার পুলিশ জানিয়েছে, তারা এখনও দেখছে যে এই প্রতারণার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কিনা। ধৃত রাজীব দাসকে বৃহস্পতিবার বিধাননগর মহকুমা আদালতে তোলা হবে। পুলিশ আশা করছে, আদালতের নির্দেশনার পর আরও তথ্য বেরিয়ে আসবে, যা পুরো প্রতারণার চক্র উন্মোচন করতে সাহায্য করবে।
প্রতারণার কৌশল ও সতর্কবার্তা
পুলিশের বিশ্লেষণে জানা গেছে, প্রতারকরা সাধারণত যুবকদের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেন। এই ধরনের নকল অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার প্রায়শই লোভনীয় চাকরির সুযোগের আড়ালে লুকিয়ে থাকে। রাজীব দাসের ক্ষেত্রে দেখা গেছে, তিনি যুবকের আত্মবিশ্বাস ও চাকরির আকাঙ্ক্ষা ব্যবহার করে অর্থ হাতিয়ার করেছেন। পুলিশ শিক্ষিত ও সচেতন যুবকদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে, যেন তারা এমন ফাঁদে না পড়ে।
ভবিষ্যতের পদক্ষেপ
ইলেকট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানার পুলিশ গ্রেফতারকৃত রাজীব দাসের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। তদুপরি, তারা অনুসন্ধান চালাচ্ছে যে, এই প্রতারণা এককভাবে ঘটেছে নাকি অন্য কোনও চক্রের অংশ। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী, তদন্ত আরও বিস্তৃত করা হবে এবং প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। পুলিশের লক্ষ্য, শুধু রাজীব দাসকে শাস্তি দেওয়া নয়, ভবিষ্যতে এমন প্রতারণা প্রতিরোধের ব্যবস্থা তৈরি করা।
যাত্রী ও সাধারণ মানুষকে সতর্কবার্তা
পুলিশ এবং স্থানীয় প্রশাসন সাধারণ মানুষকে সতর্ক করে বলেছে, কোনো অননুমোদিত ব্যক্তি বা সংস্থার কাছ থেকে চাকরির প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেলে তার সত্যতা যাচাই করা অপরিহার্য। বৈধ সরকারি সূত্র এবং স্বীকৃত সংস্থার মাধ্যমেই চাকরির প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা উচিত।এই ঘটনায় শুধু ক্ষতিগ্রস্ত যুবকই নয়, বরং সাধারণ জনগণও সতর্ক হতে শিখেছে যে চাকরির লোভে অন্ধ হওয়ার কারণে ব্যক্তিগত অর্থের ক্ষতি হতে পারে। পুলিশ মনে করিয়ে দিচ্ছে, তথ্য যাচাই ও সতর্কতা প্রতারণা প্রতিরোধে সবচেয়ে কার্যকর হাতিয়ার।
সারসংক্ষেপ
রাজীব দাসের গ্রেফতারের ঘটনায় দেখা যাচ্ছে, চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে অর্থ হাতানোর মতো প্রতারণা এখনও চলে আসছে। ইলেকট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানার পুলিশ সক্রিয়ভাবে এই চক্র ভেঙে দিচ্ছে। যুবকদের সতর্কতা, সরকারি নির্দেশনা মানা এবং থানা পর্যায়ের তৎপরতা মিলিত হয়ে এমন প্রতারণা কমাতে পারে। প্রশাসনের পদক্ষেপের ফলে আশা করা যাচ্ছে, ভবিষ্যতে এই ধরনের প্রতারণা কমবে এবং যুবকরা নিরাপদে চাকরির সুযোগের সন্ধান করতে পারবে।