হায়দ্রাবাদে স্বাধীনতা দিবস ও জন্মাষ্টমীতে মাংস বিক্রি নিষিদ্ধ: বিতর্ক ও প্রতিক্রিয়া

হায়দ্রাবাদে স্বাধীনতা দিবস ও জন্মাষ্টমীতে মাংস বিক্রি নিষিদ্ধ: বিতর্ক ও প্রতিক্রিয়া

হায়দ্রাবাদ জিএইচএমসি স্বাধীনতা দিবস এবং জন্মাষ্টমীতে ১৫-১৬ অগাস্ট মাংস বিক্রেতাদের বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে। সাংসদ ওয়াইসি এটিকে অসাংবিধানিক বলেছেন। এই আদেশ নিয়ে আইনি ও রাজনৈতিক বিতর্ক চলছে।

Hyderabad: হায়দ্রাবাদে গ্রেটার হায়দ্রাবাদ মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন (জিএইচএমসি) স্বাধীনতা দিবস ও জন্মাষ্টমী উপলক্ষে মাংস বিক্রি সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করার নির্দেশ জারি করেছে। জিএইচএমসি কমিশনার আরভি কারনান জিএইচএমসি আইন, ১৯৫৫-এর ধারা ৫৩৩(বি) এর অধীনে এই নির্দেশ জারি করেছেন। এই আদেশ অনুসারে, ১৫ এবং ১৬ অগাস্ট জিএইচএমসি-র আওতাধীন সমস্ত পশু জবাইখানা এবং মাংসের দোকান বন্ধ রাখতে হবে।

জিএইচএমসি এই আদেশের বাস্তবায়নে হায়দ্রাবাদ, সাইবারাবাদ এবং রাচাকোন্ডার পুলিশ কমিশনারদের সহযোগিতা করার জন্য অবহিত করেছে। আদেশের উদ্দেশ্য হল উৎসবের সময় শান্তি বজায় রাখা এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে সম্মান জানানো।

আইনি বিতর্ক এবং উচ্চ আদালতের শুনানি

এই আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে তেলেঙ্গানা হাইকোর্টে একটি পিটিশন দাখিল করা হয়েছে। আবেদনকারীদের যুক্তি হল জিএইচএমসি আইনের ধারা ৫৩৩(বি) কমিশনারকে কোনো সুস্পষ্ট ও দৃঢ় কারণ দর্শানো ছাড়াই সম্পূর্ণ বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার অধিকার দেয় না।

আদালত জিএইচএমসি-কে তাদের আদেশের আইনি ভিত্তি স্পষ্ট করতে নির্দেশ দিয়েছে। এতে সংবিধানের ১৪ এবং ১৯(১)(জি) অনুচ্ছেদের অধীনে ব্যবসা ও জীবিকার অধিকারের সম্ভাব্য লঙ্ঘনের উল্লেখ করা বাধ্যতামূলক। এই মামলার শুনানি ১৩ অগাস্ট হবে।

আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে যেকোনো ধরনের বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা সংবিধানের সুরক্ষার অধীনে থাকা ব্যক্তিগত ও অর্থনৈতিক অধিকারের প্রতি সংবেদনশীল হওয়া উচিত। যদি কোনো সুস্পষ্ট ভিত্তি ছাড়াই এই আদেশ জারি করা হয়, তবে এটিকে অসাংবিধানিক হিসেবে গণ্য করা যেতে পারে।

রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া

হায়দ্রাবাদের সাংসদ আসাদুদ্দিন ওয়াইসি সহ অনেক রাজনৈতিক নেতা এই আদেশের সমালোচনা করেছেন। ওয়াইসি এটিকে "কঠোর এবং অসাংবিধানিক" আখ্যা দিয়ে বলেছেন যে এটি ব্যক্তিগত খাদ্য পছন্দের স্বাধীনতা, বহুত্ববাদী সমাজে বৈচিত্র্য এবং মানুষের জীবিকার অধিকারের লঙ্ঘন করে।

ওয়াইসি এই উপলক্ষে বলেছিলেন যে আমরা কী খাব, তা আমাদের ব্যক্তিগত স্বাধীনতার অংশ। তিনি আরও যোগ করেন যে উৎসবের সম্মান করা উচিত, তবে এর জন্য কোনো কারণ ছাড়াই পুরো ব্যবসায়ী শ্রেণীকে প্রভাবিত করা উচিত নয়।

অন্যান্য রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং সমাজকর্মীরাও জিএইচএমসি-র এই আদেশের সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রভাব নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। তাদের মতে, এই ধরনের আদেশ সমাজে ধর্মীয় ও অর্থনৈতিক অসন্তোষ সৃষ্টি করতে পারে।

উৎসবের সময় মাংস বিক্রির পূর্ববর্তী উদাহরণ

ভারতে সরকারি ছুটি এবং ধর্মীয় উৎসবের সময় মাংস বিক্রির উপর আগেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। অনেক রাজ্য এবং পৌরসভা এই ধরনের আদেশ জারি করেছে, তবে সাধারণত এগুলি ধর্মীয় ঐতিহ্যকে সম্মান জানানো এবং জনশৃঙ্খলা বজায় রাখার উদ্দেশ্যে প্রয়োগ করা হয়।

 

Leave a comment