জাতিসংঘে ইজরায়েল-প্যালেস্তাইন সংঘাত: দ্বি-রাষ্ট্র নীতিতে ভারতের সমর্থন

জাতিসংঘে ইজরায়েল-প্যালেস্তাইন সংঘাত: দ্বি-রাষ্ট্র নীতিতে ভারতের সমর্থন

জাতিসংঘে ইজরায়েল-প্যালেস্তাইন সংঘাতের সমাধানে দ্বি-রাষ্ট্র নীতিকে পুনরায় সমর্থন জানাল ভারত। ভারত অবিলম্বে একটি ব্যবহারিক সমাধান, যুদ্ধবিরতি এবং মানবিক সহায়তার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছে।

UN Update: জাতিসংঘে ইজরায়েল-প্যালেস্তাইন বিরোধের স্থায়ী সমাধান নিয়ে সম্প্রতি একটি উচ্চ-পর্যায়ের সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল, যেখানে ভারত দ্বি-রাষ্ট্র (Two-State Solution) সমাধানকেই এই দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতের একমাত্র ব্যবহারিক বিকল্প হিসেবে উল্লেখ করেছে। ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত পারভথানেনি হরিশ বলেছেন যে, আমাদের শুধুমাত্র কাগজের সমাধান নয়, বরং বাস্তবে প্রভাব ফেলবে এমন দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে হবে।

সংলাপ ও কূটনীতিতে ভারতের জোর

রাষ্ট্রদূত হরিশ বলেছেন, বিশ্ব সম্প্রদায়কে এখন এই বিষয়টির ওপর মনোযোগ দেওয়া উচিত যে কীভাবে ইজরায়েল ও প্যালেস্তাইনের মধ্যে সরাসরি আলোচনা শুরু করা যায়, যাতে উভয় পক্ষের মধ্যে বিশ্বাস পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়। তিনি আরও বলেন, দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের জন্য সমর্থন শুধুমাত্র ঘোষণায় সীমাবদ্ধ থাকা উচিত নয়, বরং আমাদের সেই ব্যবহারিক উপায়গুলো চিহ্নিত করতে হবে যা এই সমাধানকে সম্ভব করে তুলবে।

ভারতের ঐতিহাসিক অবস্থান

ভারত এই উপলক্ষে আবারও জানিয়েছে যে তারা শুরু থেকেই প্যালেস্টাইনের স্বাধীনতা এবং একটি রাষ্ট্র হিসেবে তার নির্মাণের পক্ষে রয়েছে। ১৯৮৮ সালে ভারত সেই প্রথম দিকের দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল, যারা প্যালেস্তাইনকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিল। ভারত মনে করে যে মধ্যপ্রাচ্য (Middle East) অঞ্চলে স্থিতিশীলতা ও শান্তির জন্য একটি স্বাধীন প্যালেস্তাইন অপরিহার্য।

গাজায় মানবিক সংকট নিয়ে উদ্বেগ

গাজা ভূখণ্ডে চলমান মানবিক সংকট নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত। ভারত বলেছে যে, হাজার হাজার নাগরিকের মৃত্যু, চিকিৎসা পরিষেবা ভেঙে পড়া এবং শিশুদের শিক্ষা ব্যাহত হওয়া অত্যন্ত গুরুতর বিষয়। ভারত স্পষ্টভাবে জানিয়েছে যে গাজায় মানবিক সাহায্য কোনো বাধা ছাড়াই পৌঁছানো উচিত। খাদ্য, পানীয়, জ্বালানি এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস প্যালেস্তাইনীয়দের কাছে পৌঁছে দেওয়া একটি অগ্রাধিকার হওয়া উচিত।

হামাসের ভূমিকা নিয়ে জাতিসংঘের অবস্থান

সম্মেলনের সময় প্রকাশিত ২৫ পৃষ্ঠার একটি নথিতে বলা হয়েছে যে গাজায় হামাসকে তাদের শাসন শেষ করতে হবে এবং তাদের অস্ত্র প্যালেস্টাইনীয় কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করতে হবে। এছাড়াও, যুদ্ধবিরতির तुरंत পরেই গাজায় একটি প্রশাসনিক কমিটি গঠনের কথাও বলা হয়েছে, যাতে সেখানকার প্রশাসন সুষ্ঠুভাবে চালানো যায়।

সন্ত্রাসবাদের প্রতি কোনো সমর্থন নয়

ভারত তাদের বিবৃতিতে যেকোনো ধরনের সন্ত্রাসবাদকে अस्वीकार्य বলেছে। ভারত বলেছে যে রাজনৈতিক সমস্যা হোক বা অন্য কোনো বিষয়, সন্ত্রাসবাদকে কোনো অবস্থাতেই ন্যায্যতা দেওয়া যায় না। ভারত আরও স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, নাগরিক, বিশেষ করে নারী ও শিশুদের স্বাভাবিক জীবন যাপনের পূর্ণ অধিকার রয়েছে এবং তাদের জীবনের সুরক্ষা করা বিশ্ব সম্প্রদায়ের দায়িত্ব।

গঠনমূলক সমাধান ও পুনর্গঠনের ওপর জোর

রাষ্ট্রদূত হরিশ বলেছেন যে গাজায় শুধু পুনর্গঠনই নয়, সেখানকার অর্থনৈতিক কাঠামোকেও শক্তিশালী করতে হবে, যাতে মানুষের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়ে। ভারত এই লক্ষ্যে আগে থেকেই বেশ কয়েকটি মানব-কেন্দ্রিক প্রকল্পে কাজ করছে। ফিলিস্তিনকে ভারতের দেওয়া মোট সহায়তার পরিমাণ প্রায় ১৬০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে।

Leave a comment