নিউইয়র্কে জয়শঙ্করের আয়োজনে FIPIC বিদেশ মন্ত্রীদের বৈঠক: স্বাস্থ্য ও প্রযুক্তিতে সহযোগিতা জোরদার

নিউইয়র্কে জয়শঙ্করের আয়োজনে FIPIC বিদেশ মন্ত্রীদের বৈঠক: স্বাস্থ্য ও প্রযুক্তিতে সহযোগিতা জোরদার

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর নিউইয়র্কে FIPIC বিদেশ মন্ত্রীদের বৈঠকের আয়োজন করেন। বৈঠকে স্বাস্থ্য, প্রযুক্তি, সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং জন-কেন্দ্রিক এজেন্ডা নিয়ে আলোচনা হয়। ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ দেশগুলির মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি পায়।

নয়াদিল্লি। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর নিউইয়র্কে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জ সহযোগিতা মঞ্চ (FIPIC)-এর বিদেশ মন্ত্রীদের বৈঠকের আয়োজন করেন। এই বৈঠকটি সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনের পাশাপাশি অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে স্বাস্থ্য, প্রযুক্তি, সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং দক্ষতা উন্নয়নে ব্যাপক আলোচনা হয় এবং "জন-কেন্দ্রিক" এজেন্ডার উপর জোর দেওয়া হয়।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর বৈঠকের পর বলেন যে, FIPIC শুধুমাত্র একটি কূটনৈতিক মঞ্চ নয়, বরং এটি ভারতের অ্যাক্ট ইস্ট পলিসির অংশ এবং এটি এশিয়া-প্রশান্ত অঞ্চলে ভারতের শক্তিশালী উপস্থিতি নিশ্চিত করতে সহায়তা করে।

FIPIC বৈঠকে আলোচনা

বৈঠকে প্রধানত স্বাস্থ্য, প্রযুক্তি, সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং প্রশিক্ষণ-এর মতো বিষয়গুলির উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করা হয়। জয়শঙ্কর জানান যে, বৈঠকে FIPIC-৩ শীর্ষ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কর্তৃক ঘোষিত ১২-দফা কর্মপরিকল্পনার অগ্রগতির মূল্যায়নও করা হয়েছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, "ভারত এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ দেশগুলি উন্নয়ন সহযোগী। আমাদের এজেন্ডা জন-কেন্দ্রিক এবং আমরা স্বাস্থ্য, প্রযুক্তি, সক্ষমতা বৃদ্ধি ও প্রশিক্ষণের উপর মনোযোগ দিচ্ছি।" বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার সুযোগ এবং অভিন্ন স্বার্থ জোরদার করার বিষয়েও আলোচনা হয়।

এর আগে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর নিউইয়র্কে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের তাঁর সমকক্ষদের সঙ্গে বেশ কয়েকটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। এই বৈঠকগুলিতে আঞ্চলিক ঘটনাবলী, বিশ্বব্যাপী সংঘাত এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক সহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।

FIPIC সম্পর্কে

FIPIC-এর পুরো নাম হল Forum for India-Pacific Islands Cooperation। এই মঞ্চটি ভারত এবং প্রশান্ত মহাসাগরের দ্বীপ দেশগুলির মধ্যে সহযোগিতা, উন্নয়ন ও অংশীদারিত্ব বাড়ানোর জন্য তৈরি করা হয়েছে। ছোট দ্বীপ দেশগুলির কৌশলগত এবং ভৌগোলিক গুরুত্ব অপরিসীম। FIPIC ভারতকে এই দেশগুলির সঙ্গে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক সহযোগিতার নতুন সুযোগ প্রদান করে।

FIPIC-এর মাধ্যমে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, শক্তি এবং প্রযুক্তির মতো ক্ষেত্রগুলিতে অংশীদারিত্বকে উৎসাহিত করা হয়। এই মঞ্চটি ভারত এবং দ্বীপ দেশগুলির মধ্যে শক্তিশালী কূটনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে সাহায্য করে।

FIPIC-এর সূচনা ও বিকাশ

FIPIC-এর সূচনা ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি করেছিলেন। এর প্রথম শীর্ষ সম্মেলন ফিজি-তে আয়োজিত হয়েছিল। এই মঞ্চে ১৪টি প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ দেশ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যেমন – ফিজি, পাপুয়া নিউ গিনি, সলোমন দ্বীপপুঞ্জ, সামোয়া, টোঙ্গা, ভানুয়াতু এবং অন্যান্য।

শীর্ষ সম্মেলনে ভারত এবং দ্বীপ দেশগুলির মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা জোরদার করার উপর জোর দেওয়া হয়। এই মঞ্চটি ভারতের পররাষ্ট্র নীতির সম্প্রসারণ এবং অ্যাক্ট ইস্ট পলিসির অংশ।

ভারত এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ দেশগুলির মধ্যে সহযোগিতার গুরুত্ব

পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর বলেন যে, FIPIC ভারত এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ দেশগুলির মধ্যে উন্নয়ন অংশীদারিত্বকে উৎসাহিত করে। এই অংশীদারিত্ব জন-কেন্দ্রিক এবং এর উদ্দেশ্য হল মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত করা। স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং প্রযুক্তিতে সহযোগিতার মাধ্যমে ভারত এই দেশগুলির চাহিদা বোঝে এবং পূরণ করে।

FIPIC দ্বীপ দেশগুলির সাথে ভারতের কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক সম্পর্ককে শক্তিশালী করে। এই মঞ্চটি এশিয়া-প্রশান্ত অঞ্চলে ভারতকে একটি সক্রিয় ও প্রভাবশালী ভূমিকা পালন করার সুযোগ দেয়।

Leave a comment