নীতীশ কুমারের বড় ঘোষণা: বিহারে ২০ টাকায় খাবার, পেনশন বৃদ্ধি ও বিনামূল্যে বিদ্যুৎ

নীতীশ কুমারের বড় ঘোষণা: বিহারে ২০ টাকায় খাবার, পেনশন বৃদ্ধি ও বিনামূল্যে বিদ্যুৎ

বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার রাজ্যে 'দিদি কি রসোই'-এর নতুন ঘোষণা করেছেন। এখন ২০ টাকায় সুষম খাবার পাওয়া যাবে। এর পাশাপাশি পেনশন বৃদ্ধি, বিনামূল্যে বিদ্যুৎ এবং সৌরশক্তি প্ল্যান্টের প্রকল্পেরও ঘোষণা করা হয়েছে।

ভভুয়া, কাইমুর: বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার কাইমুর জেলার ভভুয়া নগরের জগজীবন স্টেডিয়ামে আয়োজিত এনডিএ-র জনসভায় একাধিক বড় ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেন যে, সরকার রাজ্যের সকল নাগরিকের উন্নয়ন ও মঙ্গলের জন্য কাজ করছে। এর আওতায় এখন 'দিদি কি রসোই'-তে ৪০ টাকার পরিবর্তে মাত্র ২০ টাকায় খাবার পাওয়া যাবে। এই পদক্ষেপটি দরিদ্র এবং মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষকে উপকৃত করার উদ্দেশ্যে নেওয়া হয়েছে।

'দিদি কি রসোই'-তে সস্তা ও পুষ্টিকর খাবার

মুখ্যমন্ত্রী জনসভায় জানান যে, 'দিদি কি রসোই'-তে এখন প্রত্যেক নাগরিক ২০ টাকায় পুষ্টিকর ও সুষম খাবার পাবেন। তিনি বলেন যে, এর সুবিধা সকল শ্রেণীর মানুষ পাবেন এবং এর ফলে দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী পরিবারগুলির জন্য খাবার সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী হবে।

নীতীশ কুমার এও জানান যে, সরকার খাবারের গুণগত মান ও পুষ্টির ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। খাবার পরিষ্কার, নিরাপদ ও পুষ্টিকর হবে, যাতে সকল নাগরিক স্বাস্থ্যগত সুবিধা পান। তিনি জনগণের কাছে এর সর্বাধিক সুবিধা গ্রহণ করার আবেদন জানান।

পেনশন বৃদ্ধি: ৪০০ টাকা থেকে বেড়ে ১১০০ টাকা

মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান যে, রাজ্য সরকার বৃদ্ধ, প্রতিবন্ধী এবং বিধবা মহিলাদের জন্য পেনশন বৃদ্ধি করেছে। পূর্বে এই পেনশন ৪০০ টাকা ছিল, যা এখন ১১০০ টাকা করা হয়েছে। নীতীশ কুমার বলেন যে, এই অর্থ সকল সুবিধাভোগীকে দেওয়া হবে এবং এর ফলে তাদের জীবনযাত্রা সহজ হবে।

তিনি এও বলেন যে, রাজ্য সরকার এই প্রকল্পের আওতায় সকল অভাবী মানুষকে সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করেছে। পেনশন বৃদ্ধির ফলে আর্থিক নিরাপত্তা ও জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে।

বিনামূল্যে বিদ্যুৎ ও সৌরশক্তি প্ল্যান্ট

মুখ্যমন্ত্রী বলেন যে, বিহার সরকার সমস্ত বাড়িতে বিনামূল্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর পাশাপাশি, বাড়ির ছাদে সৌরশক্তি প্ল্যান্ট বসানোর কাজও দ্রুত গতিতে চলছে।

মুখ্যমন্ত্রী জনসভায় উপস্থিত জনগণের উদ্দেশ্যে বলেন যে, তারা যেন তাদের বাড়িতে সৌরশক্তি প্ল্যান্ট লাগানোর জন্য অনুপ্রাণিত হন। তিনি জানান যে, এর ফলে বিদ্যুতের সাশ্রয় হবে এবং পরিবেশেরও উপকার হবে। সৌরশক্তি প্ল্যান্ট ঘরোয়া বিদ্যুতের চাহিদা পূরণে সহায়তা করবে এবং বিদ্যুতের বিলে হ্রাস আনবে।

সাত নিশ্চয় যোজনা এবং এর প্রভাব

নীতীশ কুমার ২০১৫ সালে শুরু হওয়া সাত নিশ্চয় যোজনা এবং পরবর্তীতে ২০২০ সালে কার্যকর হওয়া সাত নিশ্চয় যোজনা-২ সম্পর্কে বিস্তারিত জানান।

সাত নিশ্চয় যোজনার প্রধান কাজ:

  • প্রত্যেক বাড়িতে নলবাহিত জল সরবরাহ
  • প্রত্যেক বাড়িতে শৌচালয় নির্মাণ
  • প্রতিটি টোলা পর্যন্ত পাকা রাস্তা
  • স্ট্রিট লাইটের ব্যবস্থা
  • সেচ সুবিধার সম্প্রসারণ
  • টেলি মেডিসিনের সুবিধা
  • বাল হৃদয় যোজনা পরিচালনা

মুখ্যমন্ত্রী বলেন যে, এই প্রকল্পগুলির মাধ্যমে গ্রামীণ ও শহুরে অঞ্চলে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। মানুষজন মৌলিক সুবিধা পাচ্ছেন এবং জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়েছে।

উন্নত সড়ক যোগাযোগ: পাটনা ৫ ঘণ্টায়

নীতীশ কুমার বলেন যে, বিহার সরকার রাজ্যের সমস্ত জেলা থেকে পাটনা পর্যন্ত উন্নত সড়ক যোগাযোগ নিশ্চিত করেছে। এখন যে কোনো ব্যক্তি পাঁচ ঘণ্টার মধ্যে পাটনায় পৌঁছাতে পারবেন। এর ফলে যাত্রীদের সময় বাঁচবে এবং পরিবহনের সুবিধা বাড়বে।

তিনি এও জানান যে, সড়ক নির্মাণ ও সংস্কার কাজ ক্রমাগত চলছে, যাতে সকল নাগরিক রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে নিরাপদ ও দ্রুত গতিতে ভ্রমণ করতে পারেন।

উন্নয়নমূলক প্রকল্পের ব্যাপক প্রভাব

মুখ্যমন্ত্রী জানান যে, সাত নিশ্চয় যোজনা এবং এর সম্প্রসারণ বিহারের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। মানুষজন শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান, সেচ এবং বিদ্যুতের মতো মৌলিক সুবিধাগুলি এখন সহজেই পাচ্ছেন।

নীতীশ কুমার বলেন যে, রাজ্য সরকার দরিদ্র, মধ্যবিত্ত এবং আদিবাসী শ্রেণীর মানুষের জন্য বিশেষ প্রকল্প চালাচ্ছে। এই প্রচেষ্টার ফলে সকল শ্রেণী উপকৃত হচ্ছে এবং বিহারের সার্বিক উন্নয়ন হচ্ছে।

Leave a comment