ঝাড়খণ্ড হাইকোর্টের নির্দেশে রাজ্যে প্রেসার হর্ন, ফ্ল্যাগ রড, মাল্টি-টোন হর্ন এবং অতিরিক্ত আলো লাগানো গাড়ি নিষিদ্ধ। রাত ১০টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত লাউডস্পিকার ব্যবহারেও নিষেধাজ্ঞা।
ঝাড়খণ্ড: সড়ক নিরাপত্তা, শব্দ দূষণ এবং নিয়ম লঙ্ঘনকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে ঝাড়খণ্ড হাইকোর্ট একটি ঐতিহাসিক নির্দেশ দিয়েছে। আদালত রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে যে, ঝাড়খণ্ডে প্রেসার হর্ন, মাল্টি-টোন হর্ন, ফ্ল্যাগ রড এবং অতিরিক্ত আলো লাগানো কোনো গাড়িকে রাস্তায় চলতে দেওয়া যাবে না। আদালত স্পষ্ট করে জানিয়েছে যে, এই নির্দেশ রাজ্যের সকল নাগরিক, রাজনৈতিক সংগঠন এবং ধর্মীয় সম্প্রদায়ের জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য হবে।
আদালত কী বলেছে?
ঝাড়খণ্ড হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ তাদের নির্দেশে বলেছে যে, গাড়িতে লাগানো প্রেসার হর্ন এবং মাল্টি-টোন হর্ন রাজ্যের রাস্তায় নিষিদ্ধ করা হল। আদালত প্রশাসনকে কড়া নির্দেশ দিয়েছে, অবিলম্বে এই ধরনের হর্ন বাজেয়াপ্ত করতে হবে এবং এর উৎপাদন, বিতরণ ও ব্যবহার সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করতে হবে।
অতিরিক্ত আলো ও ফ্ল্যাগ রডের উপরও নিষেধাজ্ঞা
আদালত তাদের নির্দেশে আরও বলেছে যে, অতিরিক্ত আলো, বিশেষ করে লাল ও নীল রঙের আলো, যা জরুরি পরিষেবার (যেমন অ্যাম্বুলেন্স বা দমকল) গাড়িতে দেখা যায়, সেগুলিও পুরোপুরি সরিয়ে ফেলতে হবে। সাধারণ মানুষের এই ধরনের গাড়ি চালানো শুধু অবৈধ নয়, একইসঙ্গে এটি সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্তও করতে পারে।
ফ্ল্যাগ রড অর্থাৎ পতাকার দণ্ডের উপরও আদালত কঠোর মনোভাব দেখিয়েছে। আদালত স্পষ্ট জানিয়েছে, কোনো রাজনৈতিক দল, সংগঠন বা ধর্মীয় গোষ্ঠীর নামাঙ্কিত পতাকা বা ফ্ল্যাগ রড যদি গাড়িতে লাগানো থাকে, তবে সেগুলি তৎক্ষণাৎ সরিয়ে ফেলতে হবে।
পতাকা বিধি ও মোটর ভেহিকেল আইন মানা বাধ্যতামূলক
আদালত নির্দেশ দিয়েছে যে, ঝাড়খণ্ড রাজ্যে পতাকা বিধি (Flag Code of India) কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে। এর পাশাপাশি কেন্দ্রীয় মোটর ভেহিকেল নিয়মাবলী ১৯৮৯ (Central Motor Vehicles Rules) এবং শব্দ দূষণ (নিয়ন্ত্রণ ও নিয়মাবলী) ২০০০ (Noise Pollution Rules) অক্ষরে অক্ষরে পালন করা নিশ্চিত করতে হবে। আদালতের বক্তব্য, আইন শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এবং রাস্তায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে এটা অত্যন্ত জরুরি।
লাউডস্পিকারের উপরেও নির্দেশ
হাইকোর্ট তাদের নির্দেশে আরও স্পষ্ট করেছে যে, ঝাড়খণ্ডে রাত ১০টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত লাউডস্পিকারের ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকবে, যতক্ষণ না এর জন্য বিশেষ অনুমতি নেওয়া হয়। আদালত প্রশাসনকে এই নির্দেশ লঙ্ঘন না করার বিষয়টি নিশ্চিত করতে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে বলেছে।
প্রশাসনের দায়িত্ব নির্দিষ্ট
আদালত ঝাড়খণ্ড সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে, এই সমস্ত নির্দেশের পালন সুনিশ্চিত করার জন্য অবিলম্বে একটি নজরদারি ব্যবস্থা (Monitoring Mechanism) তৈরি করতে হবে। এর অধীনে পুলিশ, পরিবহন বিভাগ এবং স্থানীয় প্রশাসনের যৌথ দায়িত্ব থাকবে যে, তারা নিশ্চিত করবে কোথাও যেন নিষিদ্ধ যন্ত্র বা প্রতীকের ব্যবহার না হয়।