পেইন্ট শিল্পে এক বিরাট আলোড়ন সৃষ্টি করে, JSW পেইন্টস Akzo Nobel ইন্ডিয়া-তে অতিরিক্ত অংশীদারিত্ব অর্জনের জন্য একটি ওপেন অফারের ঘোষণা করেছে। এই ওপেন অফারটি ৩৯২৯ কোটি টাকার এবং এর উদ্দেশ্য হল কোম্পানির ২৫.২৪ শতাংশ শেয়ার কেনা। এই প্রস্তাবটি শেয়ার প্রতি ৩৪১৭.৭৭ টাকা দামে দেওয়া হয়েছে।
এর আগে, জুন ২০২৫-এ, JSW পেইন্টস ডাচ প্রমোটর কোম্পানিগুলি থেকে Akzo Nobel ইন্ডিয়ার কন্ট্রোলিং অংশীদারিত্ব কেনার একটি বড় চুক্তি করেছিল। এখন, কোম্পানি সেই অধিগ্রহণের পরে অবশিষ্ট অংশ নেওয়ার জন্য এই ওপেন অফারটি নিয়ে আসছে, যার মাধ্যমে কোম্পানির পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনার উপর আরও বেশি প্রভাব ফেলতে পারবে।
২৫.২৪ শতাংশ শেয়ার কেনার জন্য ওপেন অফার পেশ করা হয়েছে

Akzo Nobel ইন্ডিয়ার পক্ষ থেকে শুক্রবার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, JSW পেইন্টস লিমিটেড ওপেন অফারের অধীনে ১,১৪,৯৫,৯৭৯ সম্পূর্ণ পরিশোধিত ইক্যুইটি শেয়ার কেনার পরিকল্পনা করেছে। এই অংশটি মোট ভোটিং ক্যাপিটালের প্রায় ২৫.২৪ শতাংশ।
এই ওপেন অফারের মাধ্যমে, JSW পেইন্টস বাজার থেকে শেয়ার কিনে কোম্পানিতে তাদের অবস্থান আরও শক্তিশালী করতে চাইছে। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, কোনও কোম্পানিতে যদি কোনও প্রমোটর ২৫ শতাংশের বেশি অংশীদারিত্ব কেনেন, তাহলে তাকে SEBI-র নিয়ম অনুসারে একটি ওপেন অফার আনতে হয়।
নিয়ম অনুযায়ী ৭৫ শতাংশ অংশীদারিত্বের সীমার পালন
JSW পেইন্টসের এই ওপেন অফারটি এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যাতে মোট অংশীদারিত্ব ৭৫ শতাংশের বেশি না হয়। ভারতীয় সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড (SEBI)-এর নিয়ম অনুযায়ী, কোনও তালিকাভুক্ত কোম্পানিতে পাবলিক শেয়ারহোল্ডিং কমপক্ষে ২৫ শতাংশ থাকতে হবে।
এই নিয়মটি অনুসরণ করে, JSW পেইন্টসের লক্ষ্য হল এটি নিশ্চিত করা যে তারা কোম্পানিতে সংখ্যাগরিষ্ঠ থাকবে, কিন্তু আইনের নির্ধারিত সীমা অতিক্রম করবে না।
শেয়ার বাজারে আলোড়ন, স্টকে সামান্য পতন
JSW পেইন্টসের এই ঘোষণার প্রভাব শেয়ার বাজারেও দেখা গেছে। শুক্রবার Akzo Nobel ইন্ডিয়ার শেয়ার ১.৬৩ শতাংশ পতনের সাথে ৬০.৪২ টাকায় বন্ধ হয়েছে। যদিও, গত এক বছরে কোম্পানির শেয়ারে ৫.৬৩ শতাংশের বৃদ্ধি দেখা গেছে।
বাজার বিশ্লেষকদের মতে, JSW পেইন্টসের এই পদক্ষেপে বিনিয়োগকারীরা কোম্পানির ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন আশা পেতে পারে, যদিও স্বল্প মেয়াদে শেয়ারে উত্থান-পতন চলতে পারে।
ডিলের জন্য SEBI-র অনুমোদনও পাওয়া যাবে

যদিও এই ওপেন অফারটি কার্যকর করার আগে JSW পেইন্টসকে SEBI (সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অফ ইন্ডিয়া)-এর অনুমোদন নিতে হবে। এর জন্য কোম্পানি একটি ড্রাফট লেটার অফার (DLO) জারি করেছে, যেখানে অফারের সম্পূর্ণ তথ্য, প্রক্রিয়া এবং সময়সীমা দেওয়া হয়েছে।
এখন SEBI-র অনুমোদন এবং পাবলিক শেয়ারহোল্ডারদের প্রতিক্রিয়ার ভিত্তিতে এটি নির্ধারিত হবে যে JSW পেইন্টস কত অংশীদারিত্ব অর্জন করতে পারবে।
JSW পেইন্টসের পরিকল্পনা কী?
JSW পেইন্টসের লক্ষ্য হল ভারতীয় পেইন্ট শিল্পে শীর্ষ তিনটি কোম্পানির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হওয়া। এর জন্য তারা বিস্তার, অধিগ্রহণ এবং ব্র্যান্ডিংয়ের উপর জোর দিচ্ছে। Akzo Nobel-এর মতো একটি প্রতিষ্ঠিত ব্র্যান্ডের অধিগ্রহণ তাদের এই रणनीতির একটি অংশ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
Akzo Nobel ইন্ডিয়া ইতিমধ্যে বিভিন্ন বিভাগে উপস্থিতি রাখে, যার মধ্যে রয়েছে ইন্ডাস্ট্রিয়াল কোটিংস, ডেকোরেটিভ পেইন্টস এবং স্পেশালিটি কেমিক্যালস। JSW পেইন্টস এই পুরো পোর্টফোলিওকে তার নেটওয়ার্কের সাথে যুক্ত করে দ্রুত বাজারে তার অংশীদারিত্ব বাড়াতে পারে।
বাজারের নজর JSW-এর পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে
এখন সকলের দৃষ্টি এই দিকে যে JSW পেইন্টস কীভাবে এই অধিগ্রহণকে এগিয়ে নিয়ে যায় এবং তারা সফলভাবে Akzo Nobel ইন্ডিয়াকে তাদের পরিচালনাগত নিয়ন্ত্রণে আনতে পারে কিনা। এছাড়াও, এটি দেখাটাও আকর্ষণীয় হবে যে এর প্রভাব অন্যান্য পেইন্ট কোম্পানিগুলির শেয়ার এবং বাজারের কৌশলের উপর কী পড়ে।












