দিল্লির আলোচিত কাঞ্জাওয়ালা হিট অ্যান্ড রান মামলায় ২১ মাস পর আদালত একটি গুরুত্বপূর্ণ রায় দিয়েছে। রোহিণীর মোটর অ্যাকসিডেন্ট ক্লেমস ট্রাইব্যুনাল (MACT) কোর্ট মৃত অঞ্জলি সিংয়ের পরিবারকে ₹36,69,700 (ছত্রিশ লাখ ঊনসত্তর হাজার সাতশ টাকা) ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
কাঞ্জাওয়ালা হিট অ্যান্ড রান মামলা: দিল্লির বহু-আলোচিত কাঞ্জাওয়ালা হিট অ্যান্ড রান মামলায় রোহিণী আদালত মৃত অঞ্জলির পরিবারের পক্ষে একটি বড় রায় দিয়েছে। আদালত ভুক্তভোগীর পরিবারকে ₹36 লক্ষ 69 হাজার 700 টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। আদালত মনে করেছে যে এই দুর্ঘটনাটি অভিযুক্ত অমিত খান্নার অবহেলার কারণে হয়েছিল।
এই রায়টি ২৭শে অক্টোবর জেলা বিচারক (MACT) বিক্রম ঘোষণা করেন। আদালত নির্দেশ দিয়েছে যে, বিমা কোম্পানি বাজাজ অ্যালিয়ান্স জেনারেল ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড এই পরিমাণ অর্থ ৩০ দিনের মধ্যে আদালতে জমা দেবে।
আদালতের রায়: বিমা কোম্পানি ক্ষতিপূরণ দেবে, চালকের কাছ থেকে আদায়ের অধিকার বজায় থাকবে
এই রায়টি ২৭শে অক্টোবর ২০২৫ তারিখে জেলা বিচারক (MACT) বিক্রমের আদালত ঘোষণা করেন। আদালত নির্দেশ দিয়েছে যে, বাজাজ অ্যালিয়ান্স জেনারেল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি ৩০ দিনের মধ্যে এই অর্থ মৃতার পরিবারকে দেবে। একই সঙ্গে, আদালত এও স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, দুর্ঘটনার সময় অভিযুক্ত চালক অমিত খান্নার কাছে বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স ছিল না, তাই বিমা কোম্পানি অর্থ পরিশোধের পর এই পরিমাণ অর্থ অমিত খান্না এবং গাড়ির মালিক লোকেশ প্রসাদ শর্মার কাছ থেকে পুনরুদ্ধার করতে পারবে।
আদালত আদেশে বলেছে যে, "সিসিটিভি ফুটেজ থেকে গাড়ির পরিচয় এবং দুর্ঘটনার পরিস্থিতি স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়। চালকের অবহেলা এই দুর্ঘটনার প্রধান কারণ ছিল। আদালত আরও নির্দেশ দিয়েছে যে, ক্ষতিপূরণের অর্থের উপর ৭.৫% বার্ষিক সুদের হার প্রযোজ্য হবে, যা ৩রা এপ্রিল ২০২৩ থেকে গণনা করা হবে — অর্থাৎ, দুর্ঘটনার পর থেকে অর্থ পরিশোধের তারিখ পর্যন্ত পরিবার সুদও পাবে।

দুর্ঘটনার রাত: ৩১শে ডিসেম্বর ২০২২ এর সেই মর্মান্তিক ঘটনা
এই দুর্ঘটনাটি দিল্লির সুলতানপুরী-কাঞ্জাওয়ালা রোডে ৩১শে ডিসেম্বর ২০২২ রাতে ঘটেছিল। মৃত অঞ্জলি সিং, যিনি একটি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ফার্মে কাজ করতেন, নিজের স্কুটিতে বাড়ি ফিরছিলেন। তখনই শনি বাজার রোডে পিছন থেকে আসা ধূসর রঙের একটি বালেনো গাড়ি (DL8CAQxxxx) তাঁর স্কুটিতে সজোরে ধাক্কা মারে।
অঞ্জলির বন্ধু নিধি, যিনি সেই সময় তাঁর সাথে ছিলেন, স্কুটি থেকে পড়ে গিয়ে বেঁচে যান। কিন্তু অঞ্জলি গাড়ির নিচে আটকে যান এবং কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত টেনে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে পুলিশ তার মৃতদেহ কাঞ্জাওয়ালা-কুতুবগড় রোডে নগ্ন অবস্থায় উদ্ধার করে। ঘটনাস্থল থেকে একটি কালো জুতো, স্কার্ফ, ইয়ারপড এবং স্কুটির ভাঙা অংশ উদ্ধার করা হয়েছিল।
দিল্লি পুলিশের তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে যে দুর্ঘটনার সময় অমিত খান্নাই গাড়ি চালাচ্ছিলেন। ফরেনসিক রিপোর্ট এবং সিসিটিভি ফুটেজ থেকে এই তথ্য প্রমাণিত হয়। এর ভিত্তিতে পুলিশ IPC-এর ২৭৯ ধারা (অবহেলা করে গাড়ি চালানো) এবং ৩০৪এ ধারা (অবহেলা করে মৃত্যু ঘটানো) এর অধীনে চার্জশিট দাখিল করে।
মৃতার মা রেখা দেবী তাঁর দুই মেয়ে ও ছোট ছেলের সাথে আদালতে ক্ষতিপূরণের আবেদন জানিয়েছিলেন। যদিও আদালত মনে করেছে যে মৃতার আয়ের সাথে সম্পর্কিত কোনো নির্দিষ্ট নথি পাওয়া যায়নি, তবে বিচারক আনুমানিক আয় এবং পরিবারের আর্থিক নির্ভরতা বিবেচনা করে ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ করেছেন।











