কাওঁড় যাত্রা রুটে দোকানগুলির নামফলক লাগানোর নির্দেশের সমর্থনে বরেলীর মৌলানা তৌকির রেজা। একই সঙ্গে, তিনি কাওঁড়িয়াদের আচরণ নিয়ে সমালোচনা করেছেন এবং সরকারের অভিপ্রায় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
UP সংবাদ: উত্তর প্রদেশের মুজাফ্ফরনগর সহ একাধিক জেলায় কাওঁড় যাত্রা চলাকালীন দোকান, রেস্তোরাঁ এবং ধাবাগুলিতে নামফলক লাগানোর নির্দেশ জারি করা হয়েছে। সরকারের বক্তব্য, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে নিশ্চিত করা হবে যে, যাত্রাপথে কোনও প্রকার ধর্মীয় মতবিরোধ বা বিভ্রান্তির সৃষ্টি না হয়। এই নির্দেশের ওপর বিভিন্ন ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে।
মৌলানা তৌকির রেজার মিশ্র প্রতিক্রিয়া
বরেলীর মৌলানা তৌকির রেজা এই নির্দেশ নিয়ে দ্বিধাহীন প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। একদিকে, তিনি সরকারের সিদ্ধান্তের সমর্থন করে বলেছেন, "আস্থা-বিশ্বাসের বিষয়ে কোনও রকম হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়।" অন্যদিকে, তিনি বলেছেন, এই নির্দেশের পিছনে বিদ্বেষ ছড়ানোরও উদ্দেশ্য থাকতে পারে। তিনি আরও যোগ করেছেন যে, মুসলমানদের নিজেদের পরিচয় লুকানোর প্রয়োজন নেই।
হিন্দু ও মুসলিম পরিচয় নিয়ে মন্তব্য
মৌলানা বলেন, "যেমন মুসলিমরা তাঁদের দাড়ি, টুপি ও পোশাকের মাধ্যমে পরিচিত হন, তেমনই হিন্দুদেরও তাঁদের ধর্মীয় পরিচয় প্রকাশ করা উচিত।" তিনি বলেন, "যদি কেউ খাঁটি সনাতনী হন, তবে তাঁর তিলক পরা উচিত এবং গর্বের সঙ্গে নিজেকে হিন্দু বলা উচিত।" তিনি এটিকে সাম্য ও স্বচ্ছতার ইঙ্গিত হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
'নামফলক ঠিক আছে, তবে প্যান্ট খুলতে বলাটা ভুল'
মৌলানা তৌকির রেজা মুজাফ্ফরনগরের সেই ঘটনার তীব্র সমালোচনা করেছেন, যেখানে এক ধাবা মালিকের প্যান্ট খুলে তাঁর ধর্মীয় পরিচয় যাচাই করার চেষ্টা করা হয়েছিল। তিনি বলেন, "নামের পরিচয় পর্যন্ত বিষয়টি বোঝা যায়, তবে এই ধরনের কাজ সমাজকে বিভক্ত করে এবং পরিবেশকে কলুষিত করে।" তিনি এটিকে "গার্হস্থ্য সন্ত্রাসবাদ" হিসেবে অভিহিত করে বলেন, "এর চেয়ে বড় বিপদ দেশের জন্য আর কিছু হতে পারে না।"
ব্লাড ব্যাংকের উদাহরণ দিয়ে প্রশ্ন
মৌলানা একটি প্রশ্ন তুলেছেন যে, যখন কোনো পণ্ডিত বা ঠাকুরের রক্তের প্রয়োজন হয়, তখন ব্লাড ব্যাংক থেকে রক্ত নেওয়ার সময় দেখা হয় না যে, সেটি কোন ধর্মের ব্যক্তির রক্ত। তিনি জানতে চান, "তখন কেন নামফলক লাগানো হয় না?" তাঁর যুক্তি ছিল, "ধর্ম কেবল খাওয়া-দাওয়া বা দোকান পর্যন্ত সীমাবদ্ধ নয়। যদি ধর্মকে পরিচয়ের সঙ্গে যুক্ত করতে হয়, তবে সব স্তরে একই নিয়ম কার্যকর করতে হবে।"
সরকারের অভিপ্রায় নিয়ে সন্দেহ
মৌলানা আরও বলেছেন যে, সরকারের অভিপ্রায় নিয়ে প্রশ্ন জাগে। তিনি বলেন, "সরকার মুসলমানদের ঘৃণা করে এবং এই ধরনের নির্দেশ সেই মানসিকতারই প্রতিফলন।" তবুও তিনি পুনর্ব্যক্ত করেন যে, "মুসলমানদের নিজেদের পরিচয় লুকানোর প্রয়োজন নেই। তাঁদের গর্বের সঙ্গে দেখানো উচিত যে, তাঁরা মুসলমান এবং একইসঙ্গে খাঁটি ভারতীয়।"