পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার রাজুয়া গ্রামে ঘটে যাওয়া বোমা বিস্ফোরণের ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য তুঙ্গে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, এই বিস্ফোরণের লক্ষ্য ছিলেন রাজনীতির এক হেভিওয়েট নেতা। সম্ভাব্য ষড়যন্ত্রের গন্ধ পেয়ে শক্ত হাতে তদন্তে নামে পুলিশ এবং ইতিমধ্যেই গ্রেফতার হয়েছে ছয় জন। ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন মূল চক্রী, বোমা বাঁধার ঘরের দুই মালিক এবং স্থানীয় চার বাসিন্দা।
রাতের অন্ধকারে মৃত্যু ও বিভীষিকা, বিস্ফোরণে প্রাণ গেল ১ জনের
শুক্রবার রাতে রাজুয়া গ্রামের একটি বাড়িতে হঠাৎ ঘটে ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণ। পুলিশ জানিয়েছে, বিস্ফোরণের সময় ওই বাড়িতে অবৈধভাবে বোমা তৈরি হচ্ছিল। বিস্ফোরণে এক জন ঘটনাস্থলেই মারা যান, আহত হন আরও তিন জন। এলাকাবাসীর দাবি, এমন ভয়াবহ শব্দ আগে কেউ শোনেনি।
প্রথমে ধরা পড়ল তুফান চৌধুরী, তদন্তে এল ষড়যন্ত্রের নকশা
এই ঘটনায় প্রথম গ্রেফতার হয় বোমা তৈরির মূল কারিগর তুফান চৌধুরী। বিস্ফোরণে সে নিজেও জখম হয়েছিল। পুলিশি জেরা ও মোবাইল কল ডিটেলস ঘেঁটে উঠে আসে বিস্ফোরণের নেপথ্যে থাকা বিস্তৃত নেটওয়ার্ক। জানা যায়, তুফানের অন্যতম সহযোগী জামির শেখ, যিনি বালি ব্যবসার আড়ালে বোমা চক্রে যুক্ত ছিলেন।
বাড়ির মালিকও জড়িত? চাপানউতোরে গ্রেফতার আবু তাহের ও পিনু
যে বাড়িতে বসে এই বিস্ফোরক তৈরি হচ্ছিল, সেই বাড়ির দুই মালিক—আবু তাহের ওরফে হাসু এবং অনুপ কায়িম সেখ ওরফে পিনুর বিরুদ্ধেও প্রমাণ পায় পুলিশ। তারা জানায়, ওই দু’জন শুধু বাড়ি দেননি, বরং সক্রিয়ভাবে মদত দিয়েছিলেন বিস্ফোরক তৈরি করতে। এর প্রেক্ষিতে শনিবার রাতে তাঁদেরও গ্রেফতার করা হয়।
পাহারাদার থেকে অপরাধী! ধরা পড়ল নজরুল ও জোমেইদ
স্থানীয় নজরুল মোল্লা ও জোমেইদ সেখের ভূমিকা নিয়েও ছিল সন্দেহ। তদন্তে উঠে আসে, তাঁরা বিস্ফোরক তৈরির সময় পাহারার দায়িত্বে ছিলেন। অপরাধমূলক সহায়তার অপরাধে তাঁদেরকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রাতভর অভিযান চালিয়ে একে একে সব অভিযুক্তকে আটক করে কাটোয়া থানার পুলিশ।
গোটা চক্রে আরও কেউ কি জড়িত? প্রশ্নে জিইয়ে তদন্ত
পুলিশ জানায়, ধৃত ছয় জন ছাড়াও এই ঘটনায় আরও কেউ জড়িত থাকতে পারে। তদন্তে উঠে আসছে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত। পুলিশের এক কর্তার কথায়, "যেভাবে বিস্ফোরক তৈরি হচ্ছিল এবং যাদের লক্ষ্য করে তা তৈরি হচ্ছিল, তা যথেষ্ট উদ্বেগজনক। আমরা সমস্ত দিক খতিয়ে দেখছি।