আমেরিকা BRICS সহ বাণিজ্যিক অংশীদারদের ৯ই জুলাই পর্যন্ত বাণিজ্য চুক্তির আলটিমেটাম দিয়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প সতর্ক করেছেন যে নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে চুক্তি না হলে ১লা আগস্ট থেকে ১০% শুল্ক কার্যকর করা হবে।
ট্রাম্প শুল্ক: আমেরিকা তার বাণিজ্যিক অংশীদার দেশগুলোকে ৯ই জুলাই পর্যন্ত চুক্তির চূড়ান্ত সুযোগ দিয়েছে। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প BRICS সমর্থনকারী দেশগুলোর প্রতি কঠোর মনোভাব দেখিয়ে ১লা আগস্ট থেকে ১০% অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের चेतावनी দিয়েছেন। ট্রাম্প প্রশাসনের মতে, এটি কোনো হুমকি নয়, বরং নীতির অংশ। এখন পর্যন্ত, আমেরিকা ব্রিটেন, ভিয়েতনাম এবং চীনের সঙ্গে সীমিত চুক্তি করেছে, যেখানে অনেক দেশের উপর এখনও চাপ অব্যাহত রয়েছে।
১লা আগস্ট থেকে ভারী শুল্ক কার্যকর হবে
ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন এপ্রিলে ১০% শুল্ক আরোপের ঘোষণা করেছিল, যা বাণিজ্য আলোচনার জন্য কিছু সময়ের জন্য স্থগিত করা হয়েছিল। এখন এই সময়সীমা ৯ই জুলাই শেষ হচ্ছে। আমেরিকা স্পষ্ট করে দিয়েছে যে যদি কোনো দেশ এই সময়সীমার মধ্যে বাণিজ্য চুক্তিতে সম্মত না হয়, তাহলে ১লা আগস্ট থেকে শুল্ক কার্যকর করা হবে।
আমেরিকার ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট CNN-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন যে এটি কোনো হুমকি নয়, বরং আমেরিকার প্রতিষ্ঠিত নীতির অংশ। তিনি বলেন, "যদি কোনো চুক্তি না হয়, তাহলে শুল্ক বুমেরাংয়ের মতো ফিরে আসবে।"
ট্রাম্পের নীতি: 'সর্বোচ্চ চাপ'
প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তার প্রশাসনের কৌশল স্পষ্ট। তারা তাদের অংশীদার দেশগুলোর উপর 'সর্বোচ্চ চাপ' সৃষ্টি করে বাণিজ্য ভারসাম্য আমেরিকার পক্ষে আনতে চান। ট্রাম্প বলেছেন যে প্রত্যেক দেশকে জানিয়ে দেওয়া হবে যে তাদের আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্য করার জন্য কত শুল্ক দিতে হবে।
এই নীতির উদ্দেশ্য হল, আমেরিকার শর্ত অনুযায়ী দেশগুলো চুক্তি করুক এবং তাদের বাজারে মার্কিন পণ্যের জন্য জায়গা তৈরি করুক। এর অধীনে ১২টি দেশকে চিঠি পাঠানো হয়েছে, যেখানে তাদের ৯ই জুলাই পর্যন্ত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়েছে।
কোন কোন দেশের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে
এখন পর্যন্ত আমেরিকা কিছু দেশের সঙ্গে সীমিত চুক্তিতে সম্মতি তৈরি করেছে। এর মধ্যে রয়েছে:
ব্রিটেন: আমেরিকা এবং ব্রিটেনের মধ্যে শুল্ক নিয়ে চুক্তি হয়েছে। উভয় দেশ দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্পর্ক স্থিতিশীল রাখতে সম্মত হয়েছে।
ভিয়েতনাম: ভিয়েতনাম আমেরিকার শর্তের কিছু অংশ মেনে চুক্তিতে চূড়ান্ত রূপ দিয়েছে।
চীন: আমেরিকা এবং চীনের মধ্যে একটি অস্থায়ী চুক্তি হয়েছে, যেখানে কিছু শুল্ক কমানো হয়েছে। যদিও চীন স্পষ্ট করে দিয়েছে যে তারা সম্পূর্ণভাবে আমেরিকার চাপে নতি স্বীকার করবে না।
ফ্রান্স, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাপানের সঙ্গে আলোচনা চলছে
ফ্রান্স এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে আমেরিকার আলোচনা এখনও চলছে। মার্কিন কর্মকর্তারা আশা করছেন যে জুলাই মাসের শেষ নাগাদ আরও কিছু চুক্তি সম্পন্ন হতে পারে।
জাপানের প্রতিক্রিয়া কঠোর ছিল। জাপানের প্রধানমন্ত্রী স্পষ্টভাবে বলেছেন, "আমরা সহজে আপস করব না।" জাপানের মতে, আমেরিকার শুল্ক নীতি আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের স্বাধীনতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
BRICS দেশগুলির বিরোধিতা
ট্রাম্পের শুল্ক নীতির সবচেয়ে বেশি বিরোধিতা BRICS দেশগুলি থেকে এসেছে। ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন এবং দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দেশগুলি সম্প্রতি রিও ডি জেনেইরোর BRICS বৈঠকে এই নীতিকে 'অবৈধ' এবং 'বৈশ্বিক অর্থনীতির জন্য বিপজ্জনক' বলে অভিহিত করেছে।
BRICS দেশগুলোর বক্তব্য হল, আমেরিকার এই একতরফা নীতি বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (WTO)-এর নিয়ম লঙ্ঘন করে এবং এর ফলে বাণিজ্য অস্থিরতা তৈরি হবে। ভারতসহ বেশ কয়েকটি উদীয়মান অর্থনীতি এই নীতিকে ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টিকারী হিসেবে মনে করে।