কেরির উদ্বেগ: ভারত-মার্কিন বাণিজ্য সম্পর্ক কি চাপের মুখে?

কেরির উদ্বেগ: ভারত-মার্কিন বাণিজ্য সম্পর্ক কি চাপের মুখে?

প্রাক্তন মার্কিন বিদেশ সচিব জন কেরি ভারত ও আমেরিকার মধ্যে বাণিজ্যিক উত্তেজনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, চরমপত্র দিয়ে সমাধান হবে না এবং প্রধানমন্ত্রী মোদী ও গোয়েল সহযোগিতা করবেন।

India US Trade: প্রাক্তন মার্কিন বিদেশ সচিব জন কেরি আমেরিকা ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্যিক উত্তেজনা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ভারতের মতো একটি বিশ্বস্ত মিত্রকে বিচ্ছিন্ন করা শুধু দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের জন্যই ক্ষতিকর নয়, বরং আমেরিকার বিশ্বস্ততার ওপরও প্রভাব ফেলতে পারে।

জন কেরি দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক প্রচেষ্টার অভাবের প্রতি হতাশা প্রকাশ করেছেন এবং আশ্বাস দিয়েছেন যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল একসঙ্গে এই বিবাদের সমাধান করবেন। তিনি বলেন, আমেরিকা ও ভারতের মধ্যে সহযোগিতা ও আলোচনার ঐতিহ্য শক্তিশালী, এবং এটিকে বজায় রাখা সব পরিস্থিতিতেই জরুরি।

ভারত-মার্কিন বাণিজ্যিক বিরোধের কারণ

সাম্প্রতিক সময়ে ভারত ও আমেরিকার মধ্যে বাণিজ্যিক উত্তেজনা বেড়েছে। মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়ার থেকে তেল কেনার জন্য ভারতের উপর ২৫ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক চাপানোর ঘোষণা করেছেন।

এছাড়াও, আমেরিকা ভারতকে ব্রাজিলের মতো সবচেয়ে উঁচু শুল্কের ব্র্যাকেটে রেখেছে, যার ফলে ভারতের উপর ৫০ শতাংশ পর্যন্ত অতিরিক্ত শুল্ক প্রযোজ্য হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের কারণে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও কঠিন হয়ে উঠেছে। জন কেরি এটিকে অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক পদক্ষেপ বলেছেন এবং জানান, এই ধরনের সংঘাতের ফলে শুধু অর্থনৈতিক নয়, রাজনৈতিক স্বার্থও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

চরমপত্র দিলে মহত্ত্ব আসে না, কূটনীতি জরুরি

জন কেরি স্পষ্ট করে বলেন যে কোনও জাতির মহত্ত্ব শুধু আদেশ দেওয়া বা চরমপত্র দেওয়ার মধ্যে নিহিত নয়। তিনি বলেন, আসল মহত্ত্ব বাস্তব কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মধ্যে নিহিত থাকে। তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন যে রাষ্ট্রপতি ওবামার আমলে আমেরিকার বিদেশনীতি সহযোগিতা, সম্মান ও আলোচনার উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছিল।

বর্তমানে তিনি দেখেছেন যে আদেশ, চাপ ও নতি স্বীকারের মতো কৌশল বাড়ছে, যা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে দুর্বল করে। তিনি মনে করেন যে শুধু চাপ ও চরমপত্র দিয়ে সমাধান বার করা যায় না, বরং আলোচনা ও চুক্তির মাধ্যমেই স্থায়ী সমাধান সম্ভব।

ভারতের বাস্তবসম্মত কৌশল

প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী ভরসা রেখেছেন যে ভারত ও আমেরিকা তাদের বাণিজ্যিক বিবাদকে কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সমাধান করবে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী মোদী ও বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েলের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে এবং এটি মাথায় রেখে উভয় পক্ষ সমাধানের দিকে এগিয়ে যাবে। জন কেরি ভারতের পক্ষ থেকে নেওয়া বাস্তবসম্মত ও ভারসাম্যপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গির প্রশংসা করেছেন। তাঁর মতে, ভারতের সিদ্ধান্ত সবসময় জাতীয় স্বার্থ, কৌশলগত স্বায়ত্তশাসন এবং বিশ্ব বাণিজ্য স্থিতিশীলতাকে মাথায় রেখে নেওয়া হয়।

Leave a comment