ভুয়ো প্রেমের ফাঁদে পড়ে নিঃস্ব তরুণী, কৃষ্ণনগরে উঠল শোরগোল
প্রেম, বিশ্বাস আর ভবিষ্যতের স্বপ্ন—এই তিনটি শব্দের উপর দাঁড়িয়ে ছিল সম্পর্ক। কিন্তু শেষমেশ তা পরিণত হল প্রতারণার যন্ত্রণায়। কৃষ্ণনগরে এক তরুণীকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস এবং লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠল এক সিভিক ভলান্টিয়ারের বিরুদ্ধে।
লিভ-ইন সম্পর্কের সুযোগে চার লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ
অভিযোগ অনুযায়ী, কৃষ্ণনগর কোতোয়ালি থানায় কর্মরত সিভিক ভলান্টিয়ার পিন্টু দেবনাথ দীর্ঘদিন ধরেই ওই তরুণীর সঙ্গে লিভ-ইন সম্পর্কে ছিলেন। সম্পর্কের আড়ালে গড়ে ওঠে আর্থিক লেনদেন, যেখান থেকে প্রায় ৪ লক্ষ টাকা সংগ্রহ করেন পিন্টু।
মনোমালিন্যের পর নিগ্রহ, বিয়ে না করে ঘুরিয়ে দেন সিভিক
তরুণীর দাবি, বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরেও কোনওরকম স্থায়ী সম্পর্কের উদ্যোগ নেয়নি অভিযুক্ত। উল্টে মনোমালিন্য শুরু হতেই তাঁর উপর শারীরিক নির্যাতন শুরু করে পিন্টু। মারধরের ঘটনাও ঘটেছে বলে অভিযোগ।
পুলিশে লিখিত অভিযোগ, গ্রেপ্তার পিন্টু দেবনাথ
শেষমেশ সব সহ্য করতে না পেরে কৃষ্ণনগর কোতোয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তরুণী। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তদন্তে নেমে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে। বুধবার আদালতে পেশ করা হলে অভিযুক্তকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয় বিচারক।
সিভিক ভলান্টিয়ারকে পদচ্যুত করল পুলিশ প্রশাসন
এই ঘটনার পর অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার পিন্টু দেবনাথকে কর্মস্থল থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। কৃষ্ণনগর কোতোয়ালি থানারই একাংশের দাবি, এমন ঘটনায় গোটা বিভাগই প্রশ্নের মুখে পড়েছে, তাই কড়া সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।
সম্পর্কের আড়ালে ছলনার পর্দা, প্রশ্ন উঠছে মূল্যবোধ নিয়ে
তরুণীর জীবনে ভরসা ও ভালবাসার নামে প্রতারণা শুধু তাঁর ব্যক্তিগত ক্ষতি নয়, সমাজেও তা তুলে ধরছে গভীর মূল্যবোধের সংকট। একজন সিভিক ভলান্টিয়ার, যাঁর দায়িত্ব ছিল নাগরিক সুরক্ষা নিশ্চিত করা—তাঁর বিরুদ্ধেই এ হেন অভিযোগ আরও গভীর আঘাত হেনেছে সমাজচেতনায়।
ঘটনার পর এলাকায় উত্তেজনা, ন্যায়বিচার চান তরুণী ও তাঁর পরিবার
এই ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই কৃষ্ণনগরের বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়। তরুণীর পরিবারের দাবি, অভিযুক্তের যেন কঠোর শাস্তি হয়। তাঁদের স্পষ্ট বক্তব্য—যারা প্রেম ও বিশ্বাসের নাম করে প্রতারণা করে, তাদের রেহাই দেওয়া উচিত নয়।
নারী নিগ্রহের ঘটনায় আরও এক বার প্রশ্নবিদ্ধ 'বিশ্বাস'
এটি নিছক প্রতারণা নয়, বরং নারীকে আত্মসম্মানহীন করে দেওয়ার এক নির্মম প্রয়াস—এমনটাই বলছেন স্থানীয় মহিলা সংগঠনের প্রতিনিধিরা। তাঁরা দ্রুত বিচার চেয়ে থানায় স্মারকলিপিও জমা দিয়েছেন।