কুশীনগরের দোকানে ৮ ফুটের অজগর, এলাকায় চাঞ্চল্য, পরে নিরাপদ স্থানে ছাড়া হল

কুশীনগরের দোকানে ৮ ফুটের অজগর, এলাকায় চাঞ্চল্য, পরে নিরাপদ স্থানে ছাড়া হল

কুশীনগরের বুদ্ধা মার্গে অবস্থিত মুন্না আর্ট গ্যালারিতে দোকান খোলার সময়ই ৮ ফুট লম্বা একটি অজগর দেখা যায়, যার ফলে এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। স্থানীয়রা সেটিকে ধরে নিরাপদ স্থানে ছেড়ে দেন।

কুশীনগর: উত্তর প্রদেশের কুশীনগর জেলার কাসিয়া থানা এলাকার বুদ্ধা মার্গে অবস্থিত মুন্না আর্ট গ্যালারি শৃঙ্গার ভবনে হঠাৎ করেই ৮ ফুট লম্বা একটি অজগর ঢুকে পড়ে। দোকানের শাটার খুলতেই বিশাল অজগরটিকে দেখে দোকানদার ও আশেপাশের লোকজন আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে এবং কিছু সময়ের জন্য সড়কে যান চলাচলও ব্যাহত হয়।

দোকানে হঠাৎ দেখা গেল অজগর

ওয়ার্ড নং ২০, শহীদ ভগত সিং নগর, অনিরুদ্ধওয়ার বাসিন্দা দোকানদার বিপুল গুপ্তা জানিয়েছেন যে, তিনি যেইমাত্র তার দোকান খুলছিলেন, তার নজর পড়ে মেঝেতে হামাগুড়ি দেওয়া একটি বিশাল অজগরের উপর। সেই সময় দোকানে কোনো গ্রাহক ছিলেন না, কিন্তু অজগরের হঠাৎ উপস্থিতিতে দোকানদার চমকে যান। আশেপাশের লোকজনও দ্রুত ঘটনাটি জানতে পেরে দোকানদারের কাছে জড়ো হতে শুরু করেন।

স্থানীয়রা জানান যে, অজগরের আকার ও দৈর্ঘ্য দেখে সবাই ভয় পেয়ে গিয়েছিল। দোকানদার ও আশেপাশের লোকজন অবিলম্বে সুরক্ষার ব্যবস্থা নিতে শুরু করেন। বিপুল গুপ্তা জানান যে, তিনি নিজেও চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু অজগরের হঠাৎ আক্রমণাত্মক আচরণের কারণে এটিকে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়েছিল।

নর্দমা থেকে বেরিয়ে দোকানে ঢুকল

প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, অজগরটি সম্ভবত দোকানের সামনে তৈরি নর্দমা থেকে বেরিয়ে দোকানে প্রবেশ করেছিল। নর্দমা এবং আশেপাশের নোংরা এলাকা থেকে অজগরের বেরিয়ে আসার এই ঘটনা এলাকায় চাঞ্চল্যকর ছিল। ঘটনার খবর পেয়ে আশেপাশের লোকজন বিপুল সংখ্যায় জড়ো হন এবং কোনোভাবে অজগরটিকে একটি বস্তার মধ্যে আটকে ফেলতে সফল হন।

স্থানীয়রা জানান যে, অজগরটিকে বস্তার মধ্যে আটকানো সহজ ছিল না। এর জন্য অনেক মানুষ মিলে চেষ্টা করছিলেন। তবে, বস্তার মধ্যে বন্দি হওয়ার পরেও অজগরটি বেশ উত্তেজিত ছিল এবং সময়ে সময়ে এটিকে সামলানো কঠিন হয়ে পড়ছিল।

রাস্তায় বেরিয়ে আসার পর আতঙ্ক

কিছুক্ষণ পরেই অজগরটি বস্তা থেকে পিছলে বাইরে বেরিয়ে আসে এবং সরাসরি বুদ্ধা মার্গ-এর দিকে হামাগুড়ি দিতে শুরু করে। এটি দেখে মানুষের মধ্যে আবারও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। দোকানদার ও আশেপাশের লোকজন দৌড়ে অজগরটিকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করতে লাগলেন। রাস্তায় অজগরের উপস্থিতি কিছুক্ষণের জন্য এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে এবং যানবাহন চলাচল ব্যাহত হয়।

স্থানীয় লোকজন ও দোকানদারদের সম্মিলিত প্রচেষ্টার পর, অজগরটিকে আবারও ধরা হয় এবং একটি নিরাপদ স্থানে ছেড়ে দেওয়া হয়। সৌভাগ্যক্রমে, এই পুরো ঘটনায় কেউ আহত হননি।

নিরাপদ স্থানে ছাড়া হল অজগর

অজগরটিকে ধরার পর আশেপাশের লোকজন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে নিজেদের কাজে ফিরে যান। তবে, ঘটনাটি এলাকায় কিছু সময়ের জন্য ভয় ও চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছিল। স্থানীয়রা প্রশাসন ও বন বিভাগের কাছে আবেদন জানিয়েছেন যে, ভবিষ্যতে এমন কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এই ধরনের বিপজ্জনক বন্যপ্রাণীদের জন্য নিয়মিত নজরদারি নিশ্চিত করা হোক।

এই ঘটনাটি আরও একবার প্রমাণ করে দিল যে, শহুরে এবং অর্ধ-শহুরে অঞ্চলে বন্যপ্রাণীদের হঠাৎ উপস্থিতিতে কতটা ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এমন অজগর প্রায়শই শিকারের সন্ধানে বা বাসস্থান এলাকা থেকে বেরিয়ে আসার কারণে শহুরে এলাকায় দেখা যায়। কুশীনগরের এই ঘটনা স্থানীয় জনগণ এবং প্রশাসন উভয়ের জন্যই একটি সতর্কবার্তা হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে।

Leave a comment