২০২৫ সালের বিহার বিধানসভা নির্বাচনে তারাপুর আসনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক সমীকরণগুলি নজরে রয়েছে। দীর্ঘকাল ধরে এই অঞ্চলে জেডিইউ (JD(U))-এর আধিপত্য ছিল। এই আসনটি জামুই লোকসভা কেন্দ্রের অংশ এবং এর মধ্যে আটটি ব্লক ও একাধিক গ্রাম পঞ্চায়েত অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
তারাপুর: ২০২৫ সালের বিহার বিধানসভা নির্বাচনে তারাপুর আসনটি এনডিএ (NDA)-এর ঘরে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশ প্রবল। এই অঞ্চলে সম্রাট চৌধুরীর পিতা, শকুনি চৌধুরীর দীর্ঘদিনের আধিপত্য ছিল। যদিও তিনি রাজনীতি থেকে অবসর নিয়েছেন, তবুও তাঁর প্রভাব আজও বর্তমান। এই কারণেই এখানে এনডিএ প্রার্থীর জয় প্রায় নিশ্চিত বলে মনে করা হচ্ছে।
তারাপুর, জামুই লোকসভা কেন্দ্রের অংশ, যেখানে আটটি ব্লক ও একাধিক গ্রাম পঞ্চায়েত অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এই বিধানসভা আসনটি ১৯৫১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এরপর থেকে এখানে মোট ১৯টি বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে, যার মধ্যে দুটি উপনির্বাচনও অন্তর্ভুক্ত।
তারাপুরের রাজনৈতিক ইতিহাস
তারাপুরে প্রাথমিকভাবে কংগ্রেসের প্রভাব ছিল, কিন্তু ১৯৯০-এর দশকে রাজনীতির সমীকরণ পরিবর্তিত হয়। ১৯৯৫ সালের বিধানসভা নির্বাচনের সময় কংগ্রেস প্রার্থী সচ্চিদানন্দ সিংয়ের উপর গ্রেনেড হামলা হয়। গুরুতরভাবে আহত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং পরে তাঁর মৃত্যু হয়। এই হামলার পিছনে শকুনি চৌধুরীর নাম উঠে আসে, কিন্তু তিনিই এই আসন থেকে জয়ী হতে সক্ষম হন।
তারাপুর আসনে মোট ১৯টি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। কংগ্রেস পাঁচবার, জেডিইউ ছয়বার এবং আরজেডি (RJD) তিনবার জয়লাভ করেছে। জেডিইউ-এর ছয়টি জয় সামতা পার্টির (Samata Party) নামেও নথিভুক্ত রয়েছে। এছাড়াও, সংযুক্ত সমাজতান্ত্রিক পার্টি, শোষিত দল, জনতা পার্টি, সিপিআই (CPI) এবং নির্দলীয় প্রার্থীরা একবার করে জয়লাভ করেছেন।
বিশেষভাবে শকুনি চৌধুরী একাই ছয়টি নির্বাচন জিতে এখানে তাঁর প্রভাব বিস্তার করেছিলেন, যেখানে তাঁর স্ত্রী একবার জয়ী হয়েছিলেন। শকুনি চৌধুরী তাঁর রাজনৈতিক জীবনে কংগ্রেস, সামতা পার্টি, আরজেডি এবং নির্দলীয় হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়লাভ করেছেন।
বর্তমান রাজনৈতিক সমীকরণ
২০১৫ সাল থেকে এই আসনটি ধারাবাহিকভাবে জেডিইউ-এর দখলে রয়েছে। ২০২০ সালের বিধানসভা নির্বাচনে জেডিইউ-এর জয়ের ব্যবধান কম হলেও, এনডিএ-এর প্রভাব এখনও শক্তিশালী। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনেও এখান থেকে আরএলওডি (RLOD) প্রার্থী এগিয়ে ছিলেন, যা প্রমাণ করে যে তারাপুরে জোটেরholds শক্তিশালী। তবে, আরজেডি (RJD) পাল্টা আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছে। যাদব ভোটব্যাঙ্ক এবং স্থানীয় সমীকরণগুলিকে কাজে লাগিয়ে আরজেডি এখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা তৈরি করতে চাইছে।
তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, জেডিইউ প্রার্থীর সবচেয়ে বড় সুবিধা হবে সম্রাট চৌধুরীর সমর্থন। শকুনি চৌধুরীর পুত্র সম্রাট, গত কয়েক বছরে তাঁর রাজনৈতিক উচ্চতা বাড়িয়েছেন এবং স্থানীয় নেতা ও জনগণের মধ্যে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। তারাপুর আসনটি কেবল জামুই লোকসভা কেন্দ্রের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং বিহারের ওবিসি (OBC) এবং যাদব-প্রধান রাজনীতিতেও এটি গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়।