রাজদ নেতা তেজস্বী যাদব বলেছেন যে যদি তাঁদের সরকার গঠিত হয়, তবে ১০২টি অ্যাম্বুলেন্স কর্মী, ডাক্তার এবং প্রযুক্তিবিদদের বেতন বৃদ্ধি করা হবে। তিনি শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এবং শিক্ষকদের পরিবর্তনের অংশীদার হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
বিহার নির্বাচন ২০২৫: রবিবার পাটনার বাপু সভাগারে রাজদের মেডিকেল সেল কর্তৃক আয়োজিত “ডাক্তার সংলাপ” অনুষ্ঠানে বিরোধী দলনেতা তেজস্বী যাদব বিহারের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এবং কর্মীদের পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। তিনি বলেন যে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে যদি রাজদের সরকার ক্ষমতায় আসে, তবে প্রথমেই ১০২টি অ্যাম্বুলেন্স কর্মী, ডাক্তার, ল্যাব টেকনিশিয়ান এবং ফিজিওথেরাপিস্টদের বেতন (honorarium) বৃদ্ধি করা হবে।
তেজস্বী প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে ১০২টি অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবার জন্য বর্তমান প্রদত্ত ৩২০ টাকা, তাঁদের সরকার আসার পর প্রতি কলে ৫৪০ টাকায় উন্নীত করা হবে। এছাড়াও, মুদ্রাস্ফীতির (inflation rate) হারের সাথে সামঞ্জস্য রেখে প্রতি বছর বেতন বৃদ্ধি করা হবে।
পূর্ববর্তী সরকারে পাবলিক হেলথ ক্যাডারের সূচনা
তাঁর ভাষণে তেজস্বী যাদব বলেন যে তাঁদের সরকার ১৭ মাসের জন্য ক্ষমতায় থাকার সময় তাঁরা পাবলিক হেলথ ক্যাডারের ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন। এই প্রকল্পের লক্ষ্য ছিল দেড় লক্ষেরও বেশি যুবক-যুবতীদের সরকারি চাকরি প্রদান করা।
এই ক্যাডারের অধীনে ল্যাব টেকনিশিয়ান, এএনএম, জিএনএম, এক্স-রে টেকনিশিয়ান এবং অন্যান্য মেডিকেল পদে নিয়োগের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু বর্তমান সরকার এই দিকে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।
মিশন ৬০ এবং মিশন बुनियाদ দ্বারা উন্নতির প্রচেষ্টা
তেজস্বী বলেন যে তাঁদের সরকার স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতির জন্য মিশন ৬০ এবং মিশন बुनियाদ চালু করেছিল। এর উদ্দেশ্য ছিল রাজ্যের প্রতিটি নাগরিক উন্নত চিকিৎসার সুবিধা পান। যদি জনগণ তাঁদের পুনরায় সুযোগ দেয়, তবে এই মিশনগুলি বৃহত্তর পরিসরে বাস্তবায়িত করা হবে যাতে স্বাস্থ্যক্ষেত্রে একটি বিপ্লব আনা যায়।
পূর্ণিয়া মেডিকেল কলেজে অভিযান প্রসঙ্গে
তেজস্বী যাদব পূর্ণিয়া মেডিকেল কলেজে রাতের বেলায় অভিযানের উদাহরণ দিয়ে বলেন যে সেখানকার ব্যবস্থা অত্যন্ত খারাপ। তিনি অভিযোগ করেন যে এই অবস্থা শুধু পূর্ণিয়ারই নয়, বরং পাটনা এবং রাজ্যের সমস্ত মেডিকেল কলেজ একইভাবে দুরবস্থায় রয়েছে।
শিক্ষা ব্যবস্থার উপরও আক্রমণ
শুধুমাত্র স্বাস্থ্য নয়, তেজস্বী যাদব শিক্ষা ব্যবস্থার উপরও সরকারকে আক্রমণ করেছেন। রবিবার তিনি রাজদ অফিসে “বৈচারিকী স্মারিকা ২০২৫” উন্মোচন করেন এবং শিক্ষকদের সাথে সরাসরি আলোচনা করেন।
তেজস্বী বলেন যে বিহারের শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পড়েছে। সরকার শিক্ষক এবং ছাত্র উভয়কেই হয়রানি করছে। এই পরিস্থিতি আগামী প্রজন্মের ভবিষ্যৎ নষ্ট করছে।
শিক্ষক এবং ছাত্রদের পরিবর্তনের আবেদন
এই অনুষ্ঠানে তেজস্বী যাদব শিক্ষকদের আহ্বান জানান যে তাঁরা বিহারে পরিবর্তনের জন্য এগিয়ে আসুন। তিনি বলেন যে কেবল রাজদলই এমন একটি বিকল্প, যা শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনতে পারে। “বৈচারিকী” সম্পাদনা ও প্রকাশ করেছে রাজদের শিক্ষক সেল। অনুষ্ঠানে শিক্ষক সেলের রাজ্য সভাপতি কুমার রায় এবং অনেক সিনিয়র নেতা উপস্থিত ছিলেন।
বর্তমান সরকারের উপর সরাসরি অভিযোগ
তেজস্বী যাদব সরাসরি বলেছেন যে বর্তমান সরকার কেবল স্বাস্থ্য ও শিক্ষাকেই ক্ষতিগ্রস্থ করেনি, বরং যুবকদের চাকরির পথও বন্ধ করে দিয়েছে। তিনি বলেন যে রাজদল সরকারের লক্ষ্য হলো প্রত্যেক যুবককে চাকরি দেওয়া এবং প্রত্যেক পরিবারকে উন্নত স্বাস্থ্য ও শিক্ষা সুবিধা প্রদান করা।