নতুন দিল্লিতে জমিয়ত উলামা-এ-হিন্দের বৈঠকে মাওলানা মাহমুদ মাদানীকে আরও একবার কেন্দ্রীয় সভাপতি নির্বাচিত করা হয়েছে। বৈঠকে ওয়াকফ আইন ২০২৫, মুসলিম সংখ্যালঘুদের সমস্যা এবং ফিলিস্তিন শান্তি চুক্তি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
নতুন দিল্লি: জমিয়ত উলামা-এ-হিন্দের কার্যনির্বাহী কমিটির বুধবারের বৈঠকে মাওলানা মাহমুদ আসাদ মাদানীকে আরও একবার সংগঠনের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়েছে। সমস্ত রাজ্যের কার্যনির্বাহী কমিটিগুলি তাঁর নামের সুপারিশ করেছিল এবং সর্বসম্মতিক্রমে তাঁকে নতুন মেয়াদের জন্য কেন্দ্রীয় সভাপতি ঘোষণা করা হয়েছে। বৈঠকে তাঁর নেতৃত্বে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে, যার মধ্যে ওয়াকফ সংশোধনী আইন ২০২৫, মুসলমানদের উপর চাপানো অনুপ্রবেশের অভিযোগ, ফিলিস্তিন শান্তি চুক্তি এবং মুসলিম সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান চ্যালেঞ্জগুলি অন্তর্ভুক্ত ছিল।
মুসলমানদের উপর চাপানো অনুপ্রবেশের অভিযোগ ভিত্তিহীন
মাওলানা মাদানী বৈঠকে দেশে সংখ্যালঘুদের উপর ক্রমবর্ধমান চাপ, তাদের ধর্মীয় প্রতীক ও পরিভাষার অপমান, বুলডোজার অভিযান, ধর্মীয় স্বাধীনতার উপর নিষেধাজ্ঞা এবং হালালের বিরুদ্ধে অভিযান-এর মতো বিষয়গুলি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন যে, মুসলমানদের উপর জনসংখ্যা পরিবর্তন এবং অনুপ্রবেশের অভিযোগ আরোপকারী বক্তব্য জাতীয় ঐক্য, সামাজিক সম্প্রীতি এবং সাংবিধানিক সমতার জন্য ক্ষতিকারক। জমিয়তের কার্যনির্বাহী কমিটি স্পষ্ট করেছে যে, কেন্দ্র সরকার সুপ্রিম কোর্ট এবং সংসদে বেশ কয়েকবার লিখেছে যে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের কোনো নির্ভরযোগ্য সংখ্যা উপলব্ধ নেই। তাই এমন অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।

ওয়াকফ আইন ২০২৫-এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ অব্যাহত
বৈঠকে ওয়াকফ আইন ২০২৫ এবং উম্মিদ পোর্টালের প্রস্তাব নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। জমিয়ত উলামা-এ-হিন্দ মনে করে যে, এই আইনটি ওয়াকফের ধর্মীয় পরিচয় এবং ব্যবস্থাপনার জন্য গুরুতর হুমকি। কমিটি বলেছে যে, তারা সাংবিধানিক, আইনি এবং গণতান্ত্রিক স্তরে এর তীব্র বিরোধিতা অব্যাহত রাখবে। একই সঙ্গে সরকারের কাছে দাবি জানানো হয়েছে যে, নিবন্ধনের শেষ তারিখটি কমপক্ষে দুই বছরের জন্য বাড়ানো হোক যাতে সম্প্রদায় পর্যাপ্ত সময় পায়। জমিয়ত এও স্পষ্ট করেছে যে, অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়িত্ব শুধুমাত্র সরকার এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এবং এটিকে মুসলিম সম্প্রদায়ের উপর চাপানো সম্পূর্ণ ভুল।
ফিলিস্তিনে স্বাধীন রাষ্ট্রের দাবি
কার্যনির্বাহী কমিটি ফিলিস্তিন শান্তি চুক্তি সংক্রান্ত প্রস্তাবে বলেছে যে, মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তি ততক্ষণ পর্যন্ত সম্ভব নয় যতক্ষণ না ১৯৬৭ সালের সীমানা অনুযায়ী একটি সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়। এর অধীনে জেরুজালেমকে রাজধানী করা উচিত এবং আল-আকসা মসজিদ সহ সমস্ত পবিত্র স্থানের ধর্মীয় অবস্থা এবং নিরাপত্তার গ্যারান্টি দেওয়া উচিত।
জমিয়ত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে, বিশেষ করে জাতিসংঘ, ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থা এবং বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলির কাছে আবেদন জানিয়েছে যে, তারা ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা এবং পবিত্র স্থানগুলির নিরাপত্তা নিশ্চিত করুক। একই সঙ্গে অবৈধ ইহুদি বসতি স্থাপন, দখল এবং জোরপূর্বক উচ্ছেদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিও জানানো হয়েছে।












