টাকা আয়ের টিপস: মালদহ জেলার কৃষকরা পেয়ারা চাষ করে সারা বছর লাভবান হচ্ছেন। সাধারণ মৌসুমী ফল যেমন আম ও লিচুর সীমিত চাহিদার বদলে, পেয়ারার চাহিদা সারা বছর বজায় থাকে। নিয়মিত পরিচর্যা এবং বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চাষ করলে ছোট ও বড় কৃষক উভয়ের জন্যই এটি লাভজনক ফসল।
সারা বছর লাভদায়ক পেয়ারা চাষ
মালদহে প্রচলিত মৌসুমী ফলের মধ্যে আম এবং লিচু রয়েছে। তবে এফসলের মৌসুম সীমিত হওয়ায় কৃষকরা দীর্ঘমেয়াদি আয় পেতেন না। পেয়ারা চাষ এই ফাঁক পূরণ করছে। কৃষকরা নিয়মিত পরিচর্যা, সার এবং জল সেচের মাধ্যমে বছরে অন্তত দুইবার ফলন পাচ্ছেন। পেয়ারা চাষ ছোট জমির ক্ষেতেও কার্যকর, যা নতুন কৃষকদের জন্য উৎসাহ যোগাচ্ছে।
বাজারে চাহিদা ও মূল্য
পেয়ারার বাজার চাহিদা খুবই স্থিতিশীল। ভালো মানের পেয়ারা বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৮০ টাকা প্রতি কেজি দরে। বিশেষত ললিত ও শ্বেতা প্রজাতির পেয়ারা বেশি জনপ্রিয়। ক্রেতারা শহর এবং বাজার উভয় জায়গায় সারা বছর পেয়ারা কিনতে চান, যা কৃষকদের জন্য নিয়মিত আয়ের নিশ্চয়তা দেয়।
কৃষকের সাফল্যের গল্প
কালিয়াচক ব্লকের কৃষক ইয়াসিন শেখ জানান, “আম এবং লিচুর মৌসুম শেষে আমরা পেয়ারা চাষ করি। বড় ফল বাজারে নিয়ে বিক্রি করি। বছরে দুইবার ফলন হওয়ায় আমাদের আয় ভালো হয়। পেয়ারা চাষ শুরু করার আগে আমাদের অনেক সতর্কতা নেওয়া লাগে, কিন্তু নিয়মিত পরিচর্যা করলে ফলন নিশ্চিত।” অনেকে এই চাষকে ছোট ও মাঝারি আয়ের জন্য নিরাপদ ও লাভজনক উদ্যোগ হিসেবে বিবেচনা করছেন।
বিশেষজ্ঞের মতামত
জেলা কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের প্রধান দুশয়ান্ত কুমার রাঘবের মতে, মালদহের মাটি তিন থেকে চার প্রজাতির পেয়ারা চাষের জন্য বিশেষভাবে উপযুক্ত। তিনি বলেন, “কালিয়াচক, বামনগোলা, গাজোল ও হবিবপুর ব্লকের মাটি ললিত, শ্বেতা প্রজাতির পেয়ারা চাষে খুব ফলপ্রসূ। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসরণ করলে বছরে দু’বারও ফলন সম্ভব।” তিনি কৃষকদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ দেওয়ার প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
চাষের টিপস ও কৌশল
মাটি ও পরিচর্যা: পেয়ারা চাষের জন্য হালকা, উর্বর মাটি সবচেয়ে উপযুক্ত।
সেচ ও সার: নিয়মিত জল সেচ এবং জৈব সার ব্যবহার ফলন বাড়ায়।
ফসলের যত্ন: পোকামাকড় ও রোগ প্রতিরোধে সতর্কতা নেওয়া জরুরি।
বাজারজাতকরণ: ফল বড় হলে সরাসরি বাজারে বিক্রি করলে ভালো মুনাফা হয়।
এই কৌশলগুলো অনুসরণ করলে কৃষকরা শুধু লাভবান হবেন না, বরং স্থায়ী আয় নিশ্চিত করতে পারবেন।
মালদহে পেয়ারা চাষ কৃষকদের জন্য একটি স্থায়ী আয়ের উৎস তৈরি করেছে। সঠিক বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি, নিয়মিত পরিচর্যা এবং বাজারের চাহিদা অনুযায়ী ফসল পরিচালনা করলে সারা বছর লাভ নিশ্চিত করা সম্ভব। কৃষকরা এই সুযোগ গ্রহণ করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হতে পারেন। আরও কৃষি টিপস এবং চাষ সংক্রান্ত আপডেট পেতে আমাদের সঙ্গে থাকুন এবং পূর্ণ প্রতিবেদনটি পড়ুন।