ন্যাশনাল ওয়াটার বেলুন ডে: জলের খেলায় গ্রীষ্মের আনন্দ উদযাপন!

ন্যাশনাল ওয়াটার বেলুন ডে: জলের খেলায় গ্রীষ্মের আনন্দ উদযাপন!

গরমের ছুটির কথা শুনলেই প্রথম যে ছবিটা মাথায় আসে, তা হল – জলের মজা! আর যখন জলের কথা আসে, তখন ওয়াটার বেলুন (জলের বেলুন)-এর নাম সবার আগে আসে। এই ঝর্ণা এবং হাসি-ঠাট্টাকে উৎসর্গ করে প্রতি বছর ১ আগস্ট পালিত হয় ‘ন্যাশনাল ওয়াটার বেলুন ডে’। এই দিনের সবচেয়ে বিশেষত্ব হল এতে না আছে বয়সের বাধা, না কোনো বিশেষ জায়গার প্রয়োজন – শুধু চাই প্রচুর জলের বেলুন আর মজা করার মন!

ন্যাশনাল ওয়াটার বেলুন ডে কি?

ন্যাশনাল ওয়াটার বেলুন ডে হল গ্রীষ্মকালে পালিত হওয়া এক অনন্য উৎসব, যেখানে লোকেরা জলের বেলুন দিয়ে খেলে, লড়াই করে এবং ভিজে গিয়ে খুব মজা করে। এই দিনের উদ্দেশ্য হল – গরম থেকে মুক্তি পাওয়া এবং হাসি-খুশির সঙ্গে পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানো। এটি কোনো ধর্মীয় বা জাতীয় উৎসব নয়, বরং একটি সামার ফান অ্যাক্টিভিটিকে উদযাপন করার একটি উপায়, যা এখন আমেরিকা থেকে বেরিয়ে ধীরে ধীরে সারা বিশ্বে জনপ্রিয় হচ্ছে।

এই দিনের শুরু কিভাবে হয়েছিল?

এই দিনের শুরুটা ২০১৯ সালে নিউ হ্যাম্পশায়ারের নিউহেভেনে একটি সামার ক্যাম্প প্রোগ্রামের মাধ্যমে হয়েছিল। এই ক্যাম্পের আয়োজকরা ভেবেছিলেন যে কেন না জলের বেলুন দিয়ে খেলার মধ্যে দিয়ে একটি বিশেষ দিন তৈরি করা যাক, যাতে বাচ্চারা শুধু মজাই না করে, গরমকেও হারাতে পারে। কিন্তু জলের বেলুনের ইতিহাস এর থেকেও অনেক পুরনো!

ওয়াটার বেলুনের ইতিহাস: একটি ভুল থেকে জন্ম নেওয়া মজা

আপনারা কি জানেন যে জলের বেলুন একটি ভুলের ফল? আসলে, ১৯৫০-এর দশকে একজন ব্রিটিশ আবিষ্কারক এডগার এলিংটন একটি এমন মোজা (সক্স) বানাতে চেয়েছিলেন যা ওয়াটারপ্রুফ হবে। তিনি তাতে ল্যাটেক্স এবং কটন ব্যবহার করেছিলেন। যখন তিনি তাতে জল ঢাললেন তখন তাতে ছিদ্র হয়ে গেল এবং রেগে গিয়ে তিনি সেটাকে মাটিতে ছুঁড়ে মারলেন – আর সেটা ফেটে গেল! সেই মুহূর্তেই তার মাথায় "ওয়াটার গ্রেনেডস" অর্থাৎ জলের বোমা বানানোর চিন্তা আসে। ব্যাস, এখান থেকেই ওয়াটার বেলুনের আবিষ্কার হয়, যা আজ বাচ্চা থেকে বড়ো সকলের প্রিয় সামার টয় হয়ে উঠেছে।

কিভাবে পালন করবেন ন্যাশনাল ওয়াটার বেলুন ডে?

১. ওয়াটার বেলুন ফাইট করুন

সবচেয়ে প্রথম এবং মজার উপায় হল – জলের লড়াই! বাড়ির বাচ্চা, প্রতিবেশী বা বন্ধুদের সঙ্গে মিলে একটি ছোটো মাঠ ঠিক করুন এবং দুটি দল তৈরি করুন। তারপর কি, একে অপরের ওপর জলের বেলুন ছুঁড়তে থাকুন আর হো হো করে হাসতে থাকুন। বাচ্চা থেকে ঠাকুরদাদা-ঠাকুমা পর্যন্ত সকলকে যোগ দিন। এতে শুধু মজাই নয়, সম্পর্কের মধ্যেও ঘনিষ্ঠতা আসে।

২. ওয়াটার বেলুন গেমস খেলুন

যদি আপনি কিছু নতুন চেষ্টা করতে চান তাহলে নিচে দেওয়া কিছু খেলা খেলতে পারেন: 

  • ওয়াটার বেলুন টস: দুজন মিলে একটি জুটি তৈরি করুন এবং বেলুনটিকে একে অপরের দিকে ছুঁড়ুন। প্রতিবার দূরত্ব বাড়তে থাকুক – জুটি না ভেঙে যে সবচেয়ে বেশিবার ক্যাচ করতে পারবে সে জিতবে!
  • হট পটেটো গেম: একটি বেলুনকে সকলে মিলে মিউজিকের সাথে পাস করুন, মিউজিক বন্ধ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই যার হাতে বেলুন থাকবে সে আউট!
  • ওয়াটার বেলুন রিলে রেস: জল ভর্তি বেলুনকে চামচে রেখে দৌড় লাগান – পড়ে গেলে বাইরে!

৩. পরিচ্ছন্নতাকেও বানিয়ে ফেলুন খেলা

বেলুন ফাটার পর প্লাস্টিকের ছোট ছোট টুকরো মাটিতে পড়ে যায়, যা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। তাই বাচ্চাদের জন্য একটি খেলা তৈরি করুন – 'ক্লিনআপ চ্যালেঞ্জ'! যে সবচেয়ে বেশি টুকরো জোগাড় করবে, তাকে পুরষ্কার দিন। এতে বাচ্চাদের মধ্যে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকার অভ্যাসও তৈরি হবে এবং প্রকৃতিও সুরক্ষিত থাকবে।

ওয়াটার বেলুন থেকে জড়িত মজার তথ্য

  • জাপানে 'Yo-Yo Tsuri' নামের একটি খেলা হয়, যাতে জল ভর্তি বেলুনকে সুতো দিয়ে বেঁধে ইয়ো-ইয়োর মতো ছোঁড়া হয়।
  • ওয়াটার বেলুনকে সাধারণ বেলুনের থেকে ছোটো বানানো হয় যাতে সেটা সহজে ফেটে যায় এবং খেলায় মজা বজায় থাকে।
  • অনেক লোক ওয়াটার বেলুনকে স্লিংশট বা লঞ্চার দিয়েও ছোঁড়ে, কিন্তু এগুলোকে সাবধানে ব্যবহার করা উচিত কারণ এতে আঘাত লাগতে পারে।

বাচ্চাদের এবং পরিবারের জন্য একসঙ্গে কাটানো একটি স্মরণীয় সময়

আজকের দিনে যখন বাচ্চারা মোবাইল এবং টিভিতে ডুবে থাকে, এমন দিনগুলো পরিবারকে একসঙ্গে আনার উপায় হতে পারে। ওয়াটার বেলুন গেমস শুধু ফিজিক্যাল অ্যাক্টিভিটিকে বাড়ায় না, বরং হাসি, মজা এবং আপনত্বও ফিরিয়ে আনে।

ন্যাশনাল ওয়াটার বেলুন ডে আমাদের এটা শেখায় যে কখনো কখনো বড়ো আনন্দ খুব ছোটো মুহূর্তের মধ্যে লুকিয়ে থাকে। একটি ছোট জলের বেলুন – যা কাউকে ভিজিয়ে হাসায়, কাউকে পালাতে বাধ্য করে, এবং কাউকে জড়িয়ে ধরে আবার শিশু বানিয়ে দেয়।

Leave a comment