নেপালে Gen-Z বিক্ষোভের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ, চীনের শান্তি কামনা

নেপালে Gen-Z বিক্ষোভের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ, চীনের শান্তি কামনা

নেপালে হিংসাত্মক Gen-Z বিক্ষোভের পর অলি প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়লেন। চীন প্রথম বিবৃতি দিল এবং সকল পক্ষকে শান্তিপূর্ণ সমাধান ও সামাজিক স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধারের আহ্বান জানাল।

Nepal Protests: নেপালে সম্প্রতি শুরু হওয়া Gen-Z বিক্ষোভ রাজনৈতিক সংকটকে গুরুতর রূপ দিয়েছে। দুর্নীতি, সামাজিক মাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা এবং তরুণ প্রজন্মের অসন্তোষের কারণে সোমবার থেকে আন্দোলন তীব্র হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা সরকারি বিরোধী হিংসায় সংসদ, রাষ্ট্রপতি ভবন, প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন এবং সরকারি ভবনগুলিতে আগুন লাগিয়ে দেয়। এর ফলে কমপক্ষে ১৯ জনের মৃত্যু হয় এবং অনেকে আহত হন।

প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলি, যিনি চীন-পন্থী নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন, মঙ্গলবার তার পদ থেকে ইস্তফা দিতে বাধ্য হন। অলি সরকারের পতন নেপালে রাজনৈতিক অস্থিরতা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। এই সময়ে সেনাবাহিনীকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য রাস্তায় নামতে হয়েছিল।

চীনের প্রথম বিবৃতি

নেপালে উদ্ভূত হিংসাত্মক পরিস্থিতির মধ্যে চীন তার প্রথম আনুষ্ঠানিক বিবৃতি জারি করেছে। সিনহুয়া নিউজ এজেন্সি অনুসারে, চীন নেপালের সকল পক্ষের কাছে আবেদন করেছে যে তারা অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলি যথাযথ এবং শান্তিপূর্ণ উপায়ে সমাধান করুক। চীন সামাজিক শৃঙ্খলা এবং স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধারের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছে।

চীনা বিদেশ মন্ত্রকের প্রতিক্রিয়া

চীনা বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র লিন জিয়ান এক মিডিয়া ব্রিফিংয়ের সময় বলেছেন, "চীন ও নেপালের মধ্যে ঐতিহ্যগতভাবে বন্ধুত্বপূর্ণ ও সহযোগিতামূলক সম্পর্ক রয়েছে। আমরা আশা করি নেপালের সকল অংশ তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলি যথাযথভাবে পরিচালনা করবে। আমাদের বিশ্বাস যে নেপালে সামাজিক শৃঙ্খলা এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা শীঘ্রই পুনরুদ্ধার হবে।"

এই বিবৃতিতে অলি বা তার পদত্যাগের বিষয়ে কোনো উল্লেখ করা হয়নি। এটি চীনের সতর্ক কূটনীতিকে প্রতিফলিত করে, যার মাধ্যমে তারা তাদের প্রভাব এবং কৌশলগত স্বার্থকে ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে পারে।

নেপালে Gen-Z আন্দোলনের প্রেক্ষাপট

নেপালের Gen-Z আন্দোলনের শুরু হয়েছিল সামাজিক মাধ্যমে নিষেধাজ্ঞার এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে। তরুণ প্রজন্ম দুর্নীতি, সরকারি নীতি এবং সামাজিক মাধ্যমে নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে রাস্তায় প্রতিবাদ শুরু করেছিল।

পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়েছিল যে বিক্ষোভকারীরা সংসদ, রাষ্ট্রপতি ভবন, প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন এবং সরকারি ভবনগুলিতে আগুন লাগিয়ে দেয়। স্থানীয় প্রশাসন এবং পুলিশ বিক্ষোভকারীদের নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হয়েছিল। হিংসার ক্রমবর্ধমান রূপ সেনাবাহিনীকে হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য করেছিল।

অলির সঙ্গে চীনের ঘনিষ্ঠতা

কে পি শর্মা অলিকে চীন-পন্থী নেতা হিসেবে বিবেচনা করা হত। তিনি বিশ্বাস করতেন যে নেপালকে চীনের কাছাকাছি এনে অর্থনৈতিক এবং কৌশলগতভাবে শক্তিশালী করা সম্ভব। অলি চীনের Belt and Road Initiative (BRI) প্রকল্পে নেপালের অংশগ্রহণ বাড়িয়েছিলেন এবং দুই দেশের মধ্যে শক্তিশালী সম্পর্ক বজায় রেখেছিলেন।

তবে, অলির পদত্যাগের পর এখন দেখার বিষয় যে চীন তাদের নেপাল নীতিতে কোনও পরিবর্তনের প্রয়োজন অনুভব করে কিনা। চীন সরাসরি অলির নাম উল্লেখ করেনি, কিন্তু এটি ইঙ্গিত দেয় যে তারা বর্তমান পরিস্থিতির মূল্যায়ন করছে এবং নেপালে তাদের স্বার্থ রক্ষা করতে চায়।

নেপালে অস্থিরতার আঞ্চলিক প্রভাব

নেপালে রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রভাব ভারত ও অন্যান্য প্রতিবেশী দেশগুলিতেও দেখা যাচ্ছে। নেপালের সেনাবাহিনী কমান্ড গ্রহণ করেছে, কিন্তু হিংসা ও প্রতিবাদের খবর অব্যাহত রয়েছে। ভারত সীমান্ত সুরক্ষা বাড়িয়েছে এবং নেপালী নাগরিকদের সাথে যোগাযোগে সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসন নেপালের নাগরিক এবং প্রতিবেশী দেশগুলির লোকেদের আবেদন করেছে যেন তারা অপ্রয়োজনীয়ভাবে বাইরে না বের হয় এবং সুরক্ষার নির্দেশাবলী মেনে চলে।

Leave a comment