বুসানে ট্রাম্প ও শি জিনপিংয়ের সাক্ষাতের পর চীন আমেরিকার দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে। শি বলেছেন যে চীন থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া বিরোধে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে এবং আমেরিকার দাবিগুলি ভুল।
World News: দক্ষিণ কোরিয়ার বুসানে সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই সাক্ষাৎটিকে দুই দেশের সম্পর্কের এক নতুন সূচনা হিসেবে দেখা হচ্ছিল। ট্রাম্প বৈঠকটিকে অত্যন্ত সফল আখ্যায়িত করে বলেছিলেন যে, যদি এটিকে শূন্য থেকে দশের মাপকাঠিতে বিচার করা হয়, তবে তিনি এটিকে ১২ নম্বর দেবেন। তবে, এরপর শি জিনপিংয়ের পক্ষ থেকে যে বিবৃতি এসেছে, তা এই সাক্ষাতের অর্থ বদলে দিয়েছে।
শি জিনপিং ট্রাম্পের দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ট্রাম্পের সেই বিবৃতি পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান করেছেন যেখানে তিনি বলেছিলেন যে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় চীনের কোনো অবদান নেই। জিনপিং বলেছেন যে বেইজিং সব সময়ই তার দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে ভারসাম্য ও সহযোগিতার নীতিতে কাজ করে আসছে।
তিনি স্পষ্ট করেছেন যে, চীন কেবল এই অঞ্চলের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতেই সক্রিয় নয়, বরং থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে চলমান সীমান্ত বিরোধ সমাধানেও সহযোগিতা করছে। জিনপিংয়ের এই বিবৃতিতে পরিষ্কার হয়ে গেছে যে ট্রাম্পের দাবি বাস্তবতার সাথে মেলে না।
গাজা যুদ্ধবিরতিতে ট্রাম্পের ভূমিকার প্রশংসা

তবে, শি জিনপিং ট্রাম্পের কিছু উদ্যোগের প্রশংসাও করেছেন। তিনি বলেছেন যে, চীন সাম্প্রতিক গাজা যুদ্ধবিরতি (Ceasefire) চুক্তিতে ট্রাম্পের প্রচেষ্টার প্রশংসা করে। কিন্তু তিনি একই সাথে এও যোগ করেছেন যে, কম্বোডিয়া-থাইল্যান্ড বিরোধে চীনের ভূমিকা অস্বীকার করা যায় না।
‘সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, শি জিনপিং ট্রাম্পকে এও বলেছেন যে চীন আঞ্চলিক বিরোধ নিষ্পত্তিতে “শান্তিপূর্ণ মধ্যস্থতা”-র ভূমিকা পালন করছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, সম্প্রতি যখন থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছিল, তখন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই দুই দেশের নেতাদের সাথে বন্ধ ঘরে বৈঠক করেছিলেন।
ডোনাল্ড ট্রাম্প তার এশিয়া সফরের সময় মালয়েশিয়ায় একটি ‘শান্তি চুক্তি’-র ঘোষণা করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন যে, এই চুক্তি থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ। ট্রাম্প এই চুক্তির পুরো কৃতিত্ব আমেরিকাকে দিয়েছেন এবং চীনের কোনো ভূমিকাকে অস্বীকার করেছেন।
তবে, থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিহাসক ফুয়াংকেটকাও ট্রাম্পের এই বিবৃতিকে “অতিশয়োক্তি” আখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন যে, এটি কোনো আনুষ্ঠানিক শান্তি চুক্তির পরিবর্তে শুধুমাত্র সংলাপের দিকে নেওয়া একটি পদক্ষেপ। কম্বোডিয়ার পক্ষ থেকেও একই প্রতিক্রিয়া এসেছে যে, এই প্রক্রিয়াটি দীর্ঘ এবং কোনো একটি দেশকে এর কৃতিত্ব দেওয়া যায় না।
থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে সীমান্ত বিরোধ কয়েক দশক পুরনো। এই বিরোধ প্রাচীন প্রিহ বিহার মন্দির (Preah Vihear Temple) কে নিয়ে ১৯৫০-এর দশকে শুরু হয়েছিল। ১৯৫৪ সালে যখন ফ্রান্স কম্বোডিয়াকে স্বাধীনতা দিয়েছিল, তখন থাই সেনাবাহিনী এই মন্দির এলাকা দখল করে নিয়েছিল।
 
                                                                        
                                                                             
                                                












