সরকার কর্তৃক আগামী প্রজন্মের জিএসটি-র রূপরেখা ঘোষিত। স্ল্যাবের সংখ্যা ৪ থেকে কমিয়ে ২ করা হবে। ২০৪৭ সালের মধ্যে অভিন্ন কর হার লাগু করার লক্ষ্য, ভারতকে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করার দিকে পদক্ষেপ।
নেক্সট জেনারেশন জিএসটি: কেন্দ্রীয় সরকার দেশের কর ব্যবস্থাকে সরল ও সুবিন্যস্ত করার জন্য 'নেক্সট জেনারেশন জিএসটি'-র রূপরেখা দিয়েছে। এই প্রকল্পের অধীনে, বর্তমানের চারটি কর স্ল্যাব (৫%, ১২%, ১৮% এবং ২৮%) কমিয়ে শুধুমাত্র দুটি—৫% এবং ১৮% করার প্রস্তাব রয়েছে। তবে, অ্যালকোহল এবং সিগারেটের মতো মাদক দ্রব্যের উপর ৪০% কর হার অপরিবর্তিত থাকবে। সরকারের বিশ্বাস, এই সংস্কারের ফলে ২০৪৭ সালের মধ্যে অভিন্ন কর হার অর্থাৎ "এক দেশ, এক কর" -এর স্বপ্ন বাস্তবায়িত করা সম্ভব হবে।
বিভিন্ন পণ্যের উপর করের হার
নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী, প্রায় ৯৯% পণ্য যা বর্তমানে ১২% কর স্ল্যাবের অধীনে রয়েছে, সেগুলিকে ৫% স্ল্যাবে স্থানান্তরিত করা হবে। এর মধ্যে মাখন, জুস, শুকনো ফল এবং অন্যান্য অনেক দৈনন্দিন ব্যবহারের জিনিস অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। একইভাবে, এয়ার কন্ডিশনার, টিভি, রেফ্রিজারেটর, ওয়াশিং মেশিন এবং সিমেন্টের মতো ২৮% কর স্ল্যাবের প্রায় ৯০% পণ্য কমিয়ে ১৮% স্ল্যাবে আনা হবে।
ভোক্তা এবং বাজারের জন্য সুবিধা
কর স্ল্যাব কমানোর সবচেয়ে বড় সুবিধা হবে সাধারণ মানুষের। দৈনন্দিন ব্যবহারের জিনিসের উপর কম কর লাগায় তাদের দাম কমবে। যখন দাম কমবে, তখন ভোগ বাড়বে, যার ফলে বাজারে চাহিদা বৃদ্ধি পাবে।
সরকারের অনুমান, মানুষের হাতে বেশি খরচ করার মতো অর্থ থাকবে, যা তারা বাজারে খরচ করবে। এর ফলে শুধুমাত্র ভোগই বাড়বে না, অর্থনীতিও শক্তিশালী হবে।
সরকারের রণনীতি এবং উদ্দেশ্য
আধিকারিকদের মতে, এই পরিবর্তন কর কাঠামোকে আরও স্থিতিশীল এবং সহজ করার দিকে একটি পদক্ষেপ। বর্তমানে, ইনপুট ট্যাক্স ক্রেডিট (ITC) সম্পর্কিত অনেক সমস্যার কারণে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। নতুন কাঠামো আটকে থাকা ITC-র সমস্যা দূর করবে এবং কর অনুপালন সহজ করবে।
সরকারের লক্ষ্য আগামী ২৫ বছরে ভারতকে একটি উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করা। সেই লক্ষ্যে, এই কর সংস্কার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে। প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারত থেকে হওয়া রপ্তানির উপর ২৫% শুল্ক চাপিয়েছেন এবং ২৭শে অগাস্ট থেকে তা বাড়িয়ে ৫০% করার ঘোষণা করেছেন। এর ফলে ভারতের আনুমানিক ৪০ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি প্রভাবিত হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে, সরকারের বিশ্বাস, অভ্যন্তরীণ ব্যবহার বৃদ্ধি করতে এবং শিল্পগুলিকে স্বস্তি দিতে কর সংস্কার জরুরি।