ডিজিটাল লেনদেন সুরক্ষিত করতে আরবিআই-এর কড়া পদক্ষেপ: ২০২৬ থেকে 2FA বাধ্যতামূলক

ডিজিটাল লেনদেন সুরক্ষিত করতে আরবিআই-এর কড়া পদক্ষেপ: ২০২৬ থেকে 2FA বাধ্যতামূলক

আরবিআই (RBI) ১ এপ্রিল ২০২৬ থেকে সমস্ত ডিজিটাল লেনদেনে টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন (2FA) বাধ্যতামূলক করছে। নতুন নিয়মগুলি সাইবার অপরাধ, অনলাইন জালিয়াতি এবং প্রতারণা কমাতে কার্যকর হবে। ব্যাংক এবং পেমেন্ট সংস্থাগুলি ঝুঁকি-ভিত্তিক যাচাইকরণ এবং প্রসঙ্গ-ভিত্তিক যাচাইকরণও করবে, যা ডিজিটাল পেমেন্টকে আরও নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য করে তুলবে। 

আরবিআই-এর নতুন নিয়ম: ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক (RBI) ডিজিটাল পেমেন্টকে সুরক্ষিত করার জন্য একটি নতুন নিয়ম জারি করেছে, যা ১ এপ্রিল ২০২৬ থেকে কার্যকর হবে। এর অধীনে, সমস্ত ডিজিটাল লেনদেনে টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন (2FA) বাধ্যতামূলক হবে, যার মধ্যে এসএমএস ওটিপি (SMS OTP) ছাড়াও পাসওয়ার্ড, পিন, বায়োমেট্রিক বা সফটওয়্যার টোকেন অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এই নিয়ম অনলাইন জালিয়াতি এবং সাইবার অপরাধ কমানোর জন্য। ব্যাংক এবং পেমেন্ট প্রদানকারীরা ঝুঁকি-ভিত্তিক যাচাইকরণ করবে এবং সন্দেহজনক লেনদেনে অতিরিক্ত যাচাইকরণের সুবিধা দেবে। এই পদক্ষেপের ফলে ভারতীয় ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেম নিরাপদ, নির্ভরযোগ্য এবং বৈশ্বিক নিরাপত্তা মানদণ্ডের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হবে।

টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশনের নতুন ব্যবস্থা

আরবিআই-এর নির্দেশিকা অনুসারে, ডিজিটাল লেনদেনে কমপক্ষে দুটি ভিন্ন নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রয়োগ করা হবে। এর মধ্যে এসএমএস ওটিপি (SMS OTP) ছাড়াও পাসওয়ার্ড, পিন, সফটওয়্যার টোকেন, ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা অন্যান্য বায়োমেট্রিক বিকল্প অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এর উদ্দেশ্য হল প্রতিটি লেনদেন নিরাপদ এবং ট্র্যাকযোগ্য করা।

আরবিআই আরও জানিয়েছে যে, এতে এমন একটি পদ্ধতি অন্তর্ভুক্ত করা উচিত যা লেনদেনের জন্য নির্দিষ্ট এবং প্রতিবার আলাদা হয়। এই পদক্ষেপের ফলে প্রতারণার সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যাবে। যদি কোনো লেনদেন সন্দেহজনক বলে মনে হয়, তাহলে ব্যাংক বা পেমেন্ট প্রদানকারী ব্যবহারকারীর কাছ থেকে অতিরিক্ত তথ্য চাইতে পারে, যেমন বায়োমেট্রিক স্ক্যান বা টোকেন।

ঝুঁকি-ভিত্তিক যাচাইকরণ এবং নিরাপত্তা বৃদ্ধি

নতুন নিয়মের অধীনে, ব্যাংক এবং পেমেন্ট সংস্থাগুলি ঝুঁকি-ভিত্তিক যাচাইকরণ করবে। এই নিয়ম বিশেষ করে কার্ড-নট-প্রেজেন্ট (CNP) লেনদেন এবং আন্তঃসীমান্ত লেনদেনে নিরাপত্তা বাড়াতে সাহায্য করবে। এর অর্থ হল, সন্দেহজনক লেনদেনগুলি রোধ করা সম্ভব হবে এবং গ্রাহকের অর্থ সুরক্ষিত থাকবে।

আরবিআই-এর এই পদক্ষেপ ভারতীয় ডিজিটাল পেমেন্ট শিল্পকে বৈশ্বিক নিরাপত্তা মানদণ্ডের কাছাকাছি নিয়ে আসবে। এর ফলে গ্রাহকরা নির্ভরযোগ্য এবং সুরক্ষিত ডিজিটাল লেনদেনের অভিজ্ঞতা লাভ করবেন।

ডিজিটাল জালিয়াতির উদ্বেগ এবং নতুন উদ্যোগ

গত কয়েক বছরে ভারতে ডিজিটাল জালিয়াতির ঘটনা দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতারণা, ভুয়া লেনদেন এবং সাইবার অপরাধের কারণে গ্রাহকদের আস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আরবিআই-এর এই নতুন নিয়ম গ্রাহকদের জন্য নিরাপত্তার একটি শক্তিশালী স্তর যোগ করবে।

এই নতুন কাঠামোর ফলে পেমেন্ট পরিষেবা প্রদানকারীদের তাদের সিস্টেমকে প্রযুক্তিগত এবং নিরাপত্তা মানদণ্ডের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণভাবে আপডেট করতে হবে। এর উদ্দেশ্য হল, গ্রাহকরা কোনো ভয় ছাড়াই ডিজিটাল মাধ্যমে অর্থ প্রদান করতে পারেন।

ডিজিটাল লেনদেনে সুবিধা এবং বিশ্বাস

আরবিআই-এর এই নতুন নিয়মের ফলে ডিজিটাল লেনদেন আরও নিরাপদ, দ্রুত এবং সুবিধাজনক হবে। গ্রাহকরা প্রতিবার একটি অতিরিক্ত নিরাপত্তা স্তরের সুবিধা পাবেন। এর ফলে ক্যাশলেস এবং ডিজিটাল ভারতের দিকেও অগ্রগতি আসবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, এই পদক্ষেপ ভারতীয় ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেমকে আরও নির্ভরযোগ্য করে তুলবে এবং সাইবার অপরাধের ঘটনা কমাবে। এর ফলে কেবল গ্রাহকদের কষ্টার্জিত অর্থই সুরক্ষিত থাকবে না, বরং ডিজিটাল পেমেন্টের প্রতি তাদের বিশ্বাসও বৃদ্ধি পাবে।

নতুন প্রযুক্তি এবং ব্যবহারিক যাচাইকরণ

আরবিআই আরও স্পষ্ট করেছে যে ডিজিটাল পেমেন্টে ব্যবহারিক এবং প্রসঙ্গ-ভিত্তিক যাচাইকরণের সুবিধা থাকবে। এর অর্থ হল, লেনদেনের প্রকৃতি এবং প্রসঙ্গ অনুসারে অতিরিক্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা প্রয়োগ করা হবে। এর ফলে প্রতারণার সম্ভাবনা আরও কমে যাবে।

ব্যাংক এবং পেমেন্ট সংস্থাগুলিকে এটিও নিশ্চিত করতে হবে যে তাদের সিস্টেম প্রযুক্তিগতভাবে সক্ষম এবং নতুন সুরক্ষা মানদণ্ডগুলি অনুসরণ করে।

Leave a comment