গ্রেটার নয়ডাতে পণ্যের জন্য নিক্কি হত্যা মামলায় পুলিশ চার অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে। অভিযুক্তদের মধ্যে স্বামী বিপিন, জ্যাঠতুতো শ্বশুর রোহিত, শাশুড়ি দয়া এবং শ্বশুরমশাই রয়েছেন। ২১শে আগস্ট সিরসা গ্রামের বাড়িতে এই ঘটনাটি ঘটেছিল, যেখানে নিক্কিকে নির্মমভাবে মারধর করে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয়েছিল। মহিলা কমিশনও এই ঘটনায় কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে।
Greater Noida: উত্তর প্রদেশের গ্রেটার নয়ডায় নিক্কি হত্যা মামলা পুরো উত্তর প্রদেশে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। পুলিশ সোমবার জ্যাঠতুতো শ্বশুর রোহিত ভাটি এবং শ্বশুরমশাইকে গ্রেপ্তার করেছে, যেখানে রবিবার আগেই স্বামী বিপিন এবং শাশুড়ি দয়াকে ১৪ দিনের বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। এইভাবে, এখন পর্যন্ত সমস্ত চার অভিযুক্ত আটক রয়েছে।
পুলিশ নিশ্চিত করেছে যে ২১শে আগস্ট সিরসা গ্রামের বাড়িতে নিক্কিকে তার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকেরা নির্মমভাবে মারধর করে জীবন্ত পুড়িয়ে দিয়েছে। এই ঘটনার পর পুরো এলাকায় শোক ও ক্ষোভের পরিবেশ তৈরি হয়েছে।
পণ্যের জন্য মারধর এবং আগুনে পুড়িয়ে মারার ভিডিও ভাইরাল
সোশ্যাল মিডিয়ায় দুটি ভিডিও ক্লিপ দ্রুত ভাইরাল হচ্ছে। প্রথম ভিডিওতে দেখা যায় যে নিক্কিকে চুল ধরে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, যেখানে দ্বিতীয় ভিডিও ক্লিপে তাকে আগুনের শিখায় পড়তে এবং সিঁড়ি দিয়ে নামতে দেখা যায়।
পরিবারের মতে, নিক্কির বড় বোন কাঞ্চনের বিয়েও একই পরিবারে হয়েছিল। বিয়ের পর থেকেই নিক্কিকে ক্রমাগত পণ এবং মানসিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। অভিযোগ, শ্বশুরবাড়ির লোকেরা প্রথমে স্করপিও এসইউভি, মোটরসাইকেল এবং সোনার গহনা চেয়েছিল এবং পরে ৩৬ লক্ষ টাকা নগদ এবং একটি বিলাসবহুল গাড়ির অতিরিক্ত দাবি করে।
পুলিশ চার অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে
পুলিশ প্রথমে স্বামী বিপিন ভাটিকে গ্রেপ্তার করে। हिरासत থেকে পালানোর চেষ্টা করার সময় তার পায়ে গুলিও লাগে। এরপর শাশুড়ি দয়াকেও (৫৫) গ্রেপ্তার করা হয়। সোমবার পুলিশ জ্যাঠতুতো শ্বশুর রোহিত ভাটি এবং শ্বশুরমশাইকে সিরসা টোল থেকে গ্রেপ্তার করেছে।
পুলিশ এই ঘটনায় ভারতীয় দণ্ডবিধির ধারা 103(1), 115(2) এবং 61(2) এর অধীনে মামলা দায়ের করেছে। চার অভিযুক্ত এখন বিচার বিভাগীয় প্রক্রিয়ার অধীনে রয়েছে এবং পরবর্তী শুনানি আদালতে অনুষ্ঠিত হবে।
মহিলা কমিশনের কঠোর পদক্ষেপের দাবি
এই ঘটনায় জাতীয় মহিলা কমিশনও দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে। কমিশনের চেয়ারপারসন বিজয়া রাহাটকর উত্তর প্রদেশের ডিজিপিকে চিঠি লিখে অবিলম্বে সমস্ত অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার, কঠোর আইনি পদক্ষেপ এবং মৃতের পরিবার ও সাক্ষীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন।
প্রতিবেশীরা দাবি করেছেন যে হত্যার সময় বিপিন বাড়িতে উপস্থিত ছিলেন না এবং সিসিটিভি ফুটেজে এটি দেখা গেছে। কিছু প্রতিবেশী এও বলেছেন যে নিক্কি নিজেই আগুন লাগিয়েছিল, যদিও পুলিশ এই দাবির তদন্ত করছে।
আইনি পদক্ষেপ এবং মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন
নিক্কি হত্যাকাণ্ড পণপ্রথা, গার্হস্থ্য হিংসা এবং মহিলাদের নিরাপত্তা সম্পর্কিত গুরুতর বিষয়গুলির উপর প্রশ্ন তুলেছে। এই মামলাটি স্পষ্ট করে দিয়েছে যে সমাজে এখনও এই ধরনের ঘটনাগুলির উপর কড়া নজর রাখা প্রয়োজন। পুলিশ চার অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ দ্রুত চলছে।
মামলার তদন্তে আগামী দিনে অভিযুক্তদের উপর কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া এবং আদালতে শুনানি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই মামলাটি সারা দেশে মহিলাদের নিরাপত্তা এবং পণপ্রথার বিরুদ্ধে একটি কঠোর বার্তা দেয়।