সাবেক ভারতীয় অফ-স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন ৩৯ বছর বয়সে বিবিএল-এ সিডনি থান্ডারের হয়ে খেলবেন। ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে প্রথম ভারতীয় খেলোয়াড় হিসেবে অশ্বিন টি২০ লিগে ইতিহাস গড়বেন।
রবিচন্দ্রন অশ্বিন: সাবেক ভারতীয় দলের অফ-স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন আসন্ন বিগ ব্যাশ লিগ (BBL)-এ খেলে ইতিহাস গড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ৩৯ বছর বয়সী অশ্বিন এই মর্যাদাপূর্ণ টি২০ লিগে খেলা প্রথম ভারতীয় খেলোয়াড় হবেন। তার এই পদক্ষেপ ভারতীয় ক্রিকেট অনুরাগীদের মধ্যে উদ্দীপনার ঢেউ তুলেছে।
অশ্বিন এবার সিডনি থান্ডার দলের হয়ে মাঠে নামতে পারেন। ফ্র্যাঞ্চাইজি খুব শীঘ্রই এর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করতে পারে। এর পাশাপাশি, অশ্বিন আইএলটি২০ নিলামেও অংশ নেবেন, যা তার ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট যাত্রাকে আরও বিস্তৃত করবে।
বিবিএল-এ প্রথম ভারতীয় খেলোয়াড় হওয়ার প্রস্তুতি
অশ্বিন সম্প্রতি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট এবং আইপিএল থেকে অবসরের ঘোষণা করেছেন। এর পর তিনি ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে সম্পূর্ণ ফ্রি এজেন্ট হয়ে গেছেন। এর ফলে তার জন্য বিদেশি টি২০ লিগের দরজা খুলে গেছে। বিবিএল-এ অশ্বিনের খেলা ভারতীয় খেলোয়াড়দের জন্য নতুন সুযোগ এবং উদাহরণ তৈরি করবে।
ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার সিইও টড গ্রিনবার্গ এই মাসের শুরুতে অশ্বিনের সাথে যোগাযোগ করে বিবিএল-এ তার যোগদানের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছিলেন। ১৪ই ডিসেম্বর থেকে ১৮ই জানুয়ারি পর্যন্ত বিবিএল অনুষ্ঠিত হবে। অশ্বিন সিজনের দ্বিতীয়ার্ধে সিডনি থান্ডারের সাথে যোগ দিতে পারেন।
আইএলটি২০ নিলাম এবং বিদেশি লীগ
অশ্বিন ৪ঠা জানুয়ারি আইএলটি২০ নিলামে অংশ নেবেন। এর মাধ্যমে তিনি বিদেশি টি২০ লিগে খেলে নতুন পরিচিতি গড়ার সুযোগ পাবেন। আইপিএল এবং জাতীয় দলে সক্রিয় খেলোয়াড়দের জন্য বিদেশি লিগে খেলার উপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, কিন্তু অশ্বিন এখন এই নিয়ম থেকে মুক্ত। তিনি এই বছরের বিবিএল বিদেশি ড্রাফটে নিবন্ধন করেননি, তাই ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়াকে তাকে বিশেষ ছাড় দিতে হবে, যেমনটা ২০২২ সালে মার্টিন গাপটিলকে দেওয়া হয়েছিল।
অশ্বিন গত বছর ডিসেম্বরে অস্ট্রেলিয়া সফরের সময় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছিলেন। এরপর তিনি সম্পূর্ণরূপে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে সক্রিয় থাকবেন।
অশ্বিনের ক্যারিয়ার এবং অর্জনসমূহ
রবিচন্দ্রন অশ্বিন ভারতীয় ক্রিকেটের অন্যতম সফল অফ-স্পিনার। তিনি টেস্ট ক্রিকেটে অনিল কুম্বলের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী। অশ্বিনের নামে ৫৩৭টি টেস্ট উইকেট নথিভুক্ত রয়েছে, যেখানে কুম্বলে ৬১৯টি উইকেট নিয়েছিলেন।
আইপিএল-এ অশ্বিন ২২১টি ম্যাচে ১৮৭টি উইকেট পেয়েছেন। এছাড়াও তিনি ব্যাট হাতে ৮৩৩ রান দিয়েছেন। তার বোলিং এবং ব্যাটিং উভয় ক্ষেত্রেই সুষম অবদান দলগুলোর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
অশ্বিনের অভিজ্ঞতা এবং খেলার জ্ঞান তাকে বিবিএল-এ একজন কঠিন প্রতিযোগী খেলোয়াড় করে তুলবে। সিডনি থান্ডারের মতো দল তার আগমনে আরও শক্তিশালী হবে এবং তরুণ খেলোয়াড়রা দিকনির্দেশনা পাবে।
টি২০ ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে অশ্বিনের গুরুত্ব
বিবিএল-এ অশ্বিনের খেলা ভারতীয় খেলোয়াড়দের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হবে। এটি দেখাবে যে অভিজ্ঞ খেলোয়াড়রাও ৩৯ বছর বয়সে বিদেশি লিগে সাফল্য অর্জন করতে পারেন। এর মাধ্যমে ভারতীয় ক্রিকেটের বৈশ্বিক পরিচিতি আরও শক্তিশালী হবে।
অশ্বিনের অংশগ্রহণে বিবিএল-এর প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাড়বে এবং লিগে তার স্পিন বোলিংয়ের জাদু দেখা যাবে। এর পাশাপাশি তরুণ ভারতীয় স্পিনারদের জন্য শেখার সুযোগও মিলবে।