ছট মহাপর্বের পর দিল্লি সরকার রাজধানীতে পরিচ্ছন্নতা অভিযান শুরু করেছে। মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তা নিজে ঝাড়ু দিয়ে এই অভিযানের সূচনা করেন এবং বলেন যে, পরিবেশ রক্ষা ও পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা সরকার ও জনগণ উভয়েরই দায়িত্ব।
নয়াদিল্লি: ছট মহাপর্বের জাঁকজমকের পর এবার দিল্লি সরকার রাজধানীকে আবারও পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর করে তোলার অভিযান শুরু করেছে। মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তা মঙ্গলবার কাশ্মীরি গেটের যমুনা নদীর তীরে অবস্থিত বাসুদেব ঘাট থেকে “পরিচ্ছন্ন দিল্লি, সুন্দর দিল্লি” মিশনের নতুন সূচনা করেন। মুখ্যমন্ত্রী নিজে ঝাড়ু দিয়ে পরিচ্ছন্নতা অভিযানের সূচনা করেন এবং নাগরিকদেরও এতে সক্রিয় অংশগ্রহণের আহ্বান জানান।
ঘাটগুলিতে ছটের পর পরিচ্ছন্নতা অভিযান
মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তা বলেন যে, দিল্লি সরকার প্রতিটি বড় উৎসবের পর পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালায় যাতে উৎসবের পর শহরের সৌন্দর্য ও পরিচ্ছন্নতা বজায় থাকে। তিনি বলেন, “প্রতিটি উৎসব তখনই সম্পূর্ণ হয় যখন তার পর আমাদের চারপাশের পরিবেশও পরিচ্ছন্ন ও মনোরম দেখায়। পরিচ্ছন্নতা কেবল প্রশাসনের কাজ নয়, বরং প্রতিটি নাগরিকের নৈতিক দায়িত্ব।”
সরকার দিল্লির সমস্ত প্রধান যমুনা ঘাট ও খালগুলিতে বিশেষ পরিচ্ছন্নতা দল মোতায়েন করেছে। এগুলিতে নগর নিগম, পরিবেশ বিভাগ এবং লোক নির্মাণ বিভাগের যৌথ দলগুলিকে নিয়োগ করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছেন যে বর্জ্য অপসারণ এবং ঘাটগুলির পরিচ্ছন্নতার কাজ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সম্পন্ন করা হোক যাতে দূষণও নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
পরিবেশের সুরক্ষা আমাদের সকলের দায়িত্ব
পরিচ্ছন্নতা অভিযানের সূচনার সময় বিকাশ মন্ত্রী কপিল মিশ্র এবং নগর নিগম आयुक्तও উপস্থিত ছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন যে, ছট পূজা-এর মতো মহাপর্বের পর ঘাটগুলিকে আবার পরিচ্ছন্ন এবং পরিবেশ-বান্ধব করে তোলা আমাদের সকলের যৌথ দায়িত্ব। তিনি জানান যে সরকার দীপাবলি, বাল্মীকি জয়ন্তী এবং এখন ছটের পর বিশেষ পরিচ্ছন্নতা মিশন চালিয়েছে যাতে দিল্লির প্রতিটি কোণে পরিচ্ছন্নতা বজায় থাকে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন যে, পরিচ্ছন্ন পরিবেশই সুস্থ সমাজের পরিচয়। তিনি জানান যে এই অভিযানের উদ্দেশ্য কেবল পরিচ্ছন্নতা করা নয়, বরং মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা যাতে আগামী প্রজন্ম পরিচ্ছন্নতাকে তাদের জীবনের অংশ করে তুলতে পারে।
আধিকারিক ও নাগরিকদের যোগদানের আবেদন

মুখ্যমন্ত্রী গুপ্তা বলেন যে, দিল্লিতে ছট পূজা শত শত কলোনি এবং ঘাটগুলিতে উদযাপিত হয়েছিল। এখন প্রয়োজন যে সকল আঞ্চলিক আধিকারিক, জনপ্রতিনিধি এবং স্বেচ্ছাসেবক একসাথে পরিচ্ছন্নতার দিকে মনোযোগ দিক। তিনি বলেন, “পরিচ্ছন্নতা একদিনের কর্মসূচি নয়, বরং এটি একটি নিরন্তর চলমান অভ্যাস। যখন সরকার এবং জনগণ একসাথে কাজ করে, তখনই শহরে প্রকৃত পরিবর্তন আসে।”
তিনি দিল্লিবাসীর কাছে আবেদন করেন যে তারা তাদের বাড়ি, রাস্তা এবং জনসমাগমপূর্ণ স্থানগুলির পরিচ্ছন্নতার দিকে মনোযোগ দিক এবং আবর্জনা ফেলা থেকে বিরত থাকুক। মুখ্যমন্ত্রী আরও ঘোষণা করেন যে, সরকার আগামী মাসগুলিতে “স্বচ্ছতা সাথী” নামক একটি নতুন প্রকল্প আনবে, যার অধীনে স্থানীয় যুবকদের পরিচ্ছন্নতা অভিযানের সাথে যুক্ত করা হবে।
মুখ্যমন্ত্রীর পরিচ্ছন্ন দিল্লির বার্তা
মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তার এই পদক্ষেপ কেবল পরিচ্ছন্নতার দিকেই নয়, বরং দূষণমুক্ত দিল্লির লক্ষ্যের দিকেও একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে। সরকার জানিয়েছে যে আগামী দিনে রাজধানীর সমস্ত ওয়ার্ডে একই ধরনের পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালানো হবে।
মুখ্যমন্ত্রী তাঁর ভাষণে বলেন, “যখন প্রতিটি নাগরিক পরিচ্ছন্নতাকে তাদের ধর্ম হিসাবে মেনে নেবে, তখনই দিল্লি প্রকৃতপক্ষে সুন্দর ও সুস্থ হয়ে উঠবে। এটি কেবল একটি সরকারি কর্মসূচি নয়, বরং একটি গণ-আন্দোলন।”
 
                                                                        
                                                                             
                                                











