ইসিও সম্মেলনে ভারতের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন পাক প্রধানমন্ত্রী, সন্ত্রাস ইস্যুতে পাকিস্তানের দ্বিচারিতা

ইসিও সম্মেলনে ভারতের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন পাক প্রধানমন্ত্রী, সন্ত্রাস ইস্যুতে পাকিস্তানের দ্বিচারিতা

ইসিও (ECO) সম্মেলনে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ভারতের বিরুদ্ধে বিনা কারণে শত্রুতা ছড়ানোর অভিযোগ আনলেন। পহেলগাম হামলার দায় টিআরএফ (TRF) স্বীকার করার পরেও, পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদের বিষয়ে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার চেষ্টা করে চলেছে।

পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রী (PAK PM): আজারবাইজানে অনুষ্ঠিত ইকোনমিক কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন (ECO) শীর্ষ সম্মেলনের মঞ্চ থেকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ আবারও ভারতের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন। পহেলগাম সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে ভারতের প্রতিক্রিয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে শরিফ এটিকে 'কারণ ছাড়াই শত্রুতা' হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি কাশ্মীর ও গাজার প্রসঙ্গ তুলে ধরে ভারতকে আঞ্চলিক শান্তি বিঘ্নিত করার জন্য দায়ী করেন। যদিও সত্য হলো, এই হামলার দায় পাকিস্তানের সন্ত্রাসী সংগঠন নিজেরাই স্বীকার করেছিল।

ইসিও সম্মেলনে পাকিস্তানের ক্ষোভ

আজারবাইজানে আয়োজিত ইসিও (Economic Cooperation Organization) শীর্ষ সম্মেলনে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ভারতের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ করেন। তিনি অভিযোগ করেন যে, ভারত পহেলগামে হওয়া সন্ত্রাসী হামলার অজুহাত দেখিয়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে "অকারণে" শত্রুতা দেখাচ্ছে এবং এটি আঞ্চলিক শান্তির জন্য বিপজ্জনক।

শাহবাজ শরিফ বলেন, “জম্মু-কাশ্মীরে একটি দুর্ভাগ্যজনক ঘটনার পর ভারতের পক্ষ থেকে পাকিস্তানের প্রতি যে মনোভাব নেওয়া হয়েছে, তা সম্পূর্ণ উস্কানিমূলক এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন। এর ফলে পুরো অঞ্চলে অশান্তি সৃষ্টি হতে পারে।”

পহেলগাম হামলা এবং টিআরএফ-এর দায়

২২শে এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগামের বৈসরান উপত্যকায় একটি বড় সন্ত্রাসী হামলা হয়, যেখানে ২৫ জন পর্যটক এবং একজন স্থানীয় নাগরিক নিহত হন। হামলার কয়েক ঘণ্টা পরেই এর দায় পাকিস্তানের সক্রিয় সন্ত্রাসী সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার সঙ্গে যুক্ত সংগঠন দ্য রেসিস্টেন্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) স্বীকার করে।

এই হামলাটি সেই সময়ে হয় যখন বিপুল সংখ্যক পর্যটক উপত্যকায় উপস্থিত ছিলেন। এই হামলার পেছনে ষড়যন্ত্র স্পষ্টভাবে সীমান্ত পেরিয়ে করা হয়েছিল। তা সত্ত্বেও, পাকিস্তান এই হামলা থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে চলেছে।

ভারতের জবাব: অপারেশন সিঁদুর

হামলার পরপরই ভারত পাকিস্তানকে কড়া জবাব দিয়ে অপারেশন সিঁদুর শুরু করে। এই অভিযানের অধীনে ভারতীয় সেনাবাহিনী পাকিস্তানের অভ্যন্তরে থাকা ৯টি সন্ত্রাসী ঘাঁটি ধ্বংস করে দেয়।

পাকিস্তান পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে সীমান্ত এলাকায় ড্রোন হামলা শুরু করে, তবে ভারতীয় সেনাবাহিনী অত্যন্ত কঠোরভাবে তার মোকাবেলা করে। ব্যাপক ক্ষতির শিকার হওয়ার পর ১০ই মে পাকিস্তানকে যুদ্ধবিরতির আবেদন করতে হয়।

সিন্ধু জল চুক্তি নিয়ে ভারতের বড় সিদ্ধান্ত

হামলার পর ভারত আরেকটি বড় পদক্ষেপ নিয়ে সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত করে। এই চুক্তিটি ১৯৬০ সাল থেকে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে জল বিতরণ নিয়ে কার্যকর ছিল। ভারতের এই পদক্ষেপে পাকিস্তানের উদ্বেগ আরও বেড়ে যায়। আন্তর্জাতিক মঞ্চে তারা বারবার এই ইস্যুটি উত্থাপন করে তাদের অবস্থানকে শক্তিশালী করার চেষ্টা করছে, তবে তেমন সমর্থন পাচ্ছে না।

Leave a comment