রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অফ সায়েন্সেস এই বছরের চিকিৎসাবিদ্যা বা ফিজিওলজিতে নোবেল পুরস্কার ঘোষণা করেছে। এই মর্যাদাপূর্ণ সম্মান আমেরিকার মেরি ই. ব্রুনকো এবং ফ্রেড রামসডেল এবং জাপানের শিমোন সাকাগুচিকে প্রদান করা হয়েছে।
নয়া দিল্লি: চিকিৎসাবিদ্যায় নোবেল পুরস্কার ২০২৫ সোমবার, ৬ অক্টোবর রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অফ সায়েন্সেস দ্বারা ঘোষিত হয়েছে। এই বছরের পুরস্কার পেয়েছেন আমেরিকার মেরি ই. ব্রুনকো, ফ্রেড রামসডেল এবং জাপানের শিমোন সাকাগুচি। নোবেল জুরি জানিয়েছে যে তাঁদের এই সম্মান রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে জড়িত গবেষণার জন্য দেওয়া হয়েছে।
তাঁদের গবেষণা পেরিফেরাল ইমিউন টলারেন্স (Peripheral Immune Tolerance) বোঝার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। এই আবিষ্কার চিকিৎসা ও ইমিউনোলজির ক্ষেত্রে যুগান্তকারী প্রমাণিত হয়েছে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও অটোইমিউন রোগের চিকিৎসায় নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে।
পেরিফেরাল ইমিউন টলারেন্স নিয়ে গবেষণা
নোবেল জুরি জানিয়েছে যে মেরি ই. ব্রুনকো, ফ্রেড রামসডেল এবং শিমোন সাকাগুচির আবিষ্কারগুলি পেরিফেরাল ইমিউন টলারেন্স (Peripheral Immune Tolerance) এর সাথে সম্পর্কিত। পেরিফেরাল ইমিউন টলারেন্সের অর্থ হল শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে ভারসাম্যপূর্ণ ও নিয়ন্ত্রিত রাখা যাতে এটি কেবল ক্ষতিকারক উপাদানগুলির উপর আক্রমণ করে এবং শরীরের নিজস্ব সুস্থ কোষগুলির ক্ষতি না করে।
এই ক্ষেত্রে গবেষণা করা বিজ্ঞানীরা বুঝতে সাহায্য করেছেন যে কীভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং অস্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া এড়িয়ে চলে। এই আবিষ্কারের গুরুত্ব কেবল ইমিউনোলজি পর্যন্ত সীমাবদ্ধ নয় বরং ক্যান্সার, অটোইমিউন এবং অ্যান্টি-ইমিউন রোগের চিকিৎসার উপর এর সরাসরি প্রভাব পড়ে।
চিকিৎসাবিদ্যায় অবদান
নোবেল পুরস্কার কমিটি জানিয়েছে যে এই বিজ্ঞানীদের আবিষ্কারগুলি চিকিৎসা গবেষণার নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে। তাঁদের গবেষণার ভিত্তিতে নতুন ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতি এবং ওষুধ তৈরি করা হচ্ছে, যা ক্যান্সার-এর মতো মারাত্মক রোগ এবং অটোইমিউন রোগে উন্নত ফলাফল পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি করেছে। এই আবিষ্কার চিকিৎসা বিজ্ঞানকে কেবল গভীরভাবে বোঝার সুযোগ দেয় না, বরং রোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রে একটি নতুন পথও উন্মোচন করে।
চিকিৎসাবিদ্যায় নোবেল পুরস্কার, যা সাধারণত ফিজিওলজি বা মেডিসিনে নোবেল পুরস্কার নামে পরিচিত, ১৯০১ সাল থেকে প্রতি বছর দেওয়া হচ্ছে। আজ পর্যন্ত এই সম্মান ২২২৯ জন বিজ্ঞানীকে তাঁদের অসামান্য গবেষণা ও অবদানের জন্য প্রদান করা হয়েছে। গত বছর, অর্থাৎ ২০২৪ সালে, এই পুরস্কার আমেরিকান নাগরিক ভিক্টর অ্যাম্ব্রোস এবং গ্যারি রুভকুনকে দেওয়া হয়েছিল। তাঁরা মাইক্রোরাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড (microRNA) নিয়ে করা তাঁদের আবিষ্কারের জন্য এই সম্মান পেয়েছিলেন, যা জিন এক্সপ্রেশন এবং রোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনা তৈরি করেছে।