পঞ্চায়েত ৪: রিঙ্কির 'বিশ্বাসঘাতকতা' নিয়ে ফ্যানেদের মধ্যে হট্টগোল

পঞ্চায়েত ৪: রিঙ্কির 'বিশ্বাসঘাতকতা' নিয়ে ফ্যানেদের মধ্যে হট্টগোল

‘পঞ্চায়েত ৪’-এ রিঙ্কি এবং সচিবজির জুটিকে যারা পছন্দ করতেন, সেই ফ্যানেরা হতবাক হয়ে যান যখন রিঙ্কির বনরাকাসের সঙ্গে ছবি ভাইরাল হয়। লোকেরা সোশ্যাল মিডিয়ায় তাকে বিশ্বাসঘাতক বলতে শুরু করে এবং সচিবজিকে ধোঁকা দেওয়ার অভিযোগে মজাদার মন্তব্য করতে থাকে।

সানভিকা: অ্যামাজন প্রাইমের বহুল আলোচিত ওয়েব সিরিজ ‘পঞ্চায়েত সিজন ৪’ দর্শকদের আবেগ, ব্যঙ্গ এবং গ্রামের রাজনীতির এক অনন্য জগতে আবারও ফিরিয়ে এনেছে। এবার গল্পের মোড় এবং চরিত্রগুলির জটিলতা দর্শকদের গভীরভাবে নাড়া দিয়েছে। তবে সিজনের সাফল্যের মাঝে, সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ছবি বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছে — রিঙ্কি অর্থাৎ সানভিকা এবং বনরাকাস ওরফে ভূষণের সঙ্গে একটি বন্ধুত্বপূর্ণ ছবি।

এই ছবি দেখার পর ‘সচিবজি’র’ ফ্যানেরা যেন ক্ষেপে গিয়েছেন। Twitter, Instagram, Facebook-এর মতো প্ল্যাটফর্মে লোকেরা রিঙ্কিকে নিয়ে মজাদার কিন্তু তীক্ষ্ণ মন্তব্য করতে শুরু করেছে। কেউ এটিকে 'রাজনৈতিক বিদ্রোহ' বলছে, আবার কেউ বলছে 'প্রেমে ধোঁকা'।

কীভাবে শুরু হল এই হট্টগোল?

আসলে, সিরিজে রিঙ্কি এবং সচিবজির (অভিষেক ত্রিপাঠী) রসায়ন দর্শকদের মন জয় করেছে। আগের তিনটি সিজনে তাদের প্রেমকাহিনী ধীরে ধীরে দর্শকদের মনে গেঁথে গেছে। কিন্তু সানভিকা যখন বাস্তবে তার সহ-অভিনেতা আশিষ শুক্লা অর্থাৎ ভূষণ ওরফে বনরাকাসের সঙ্গে একটি বন্ধুত্বপূর্ণ ছবি শেয়ার করেন — তখন ফ্যানদের কাছে এটা যেন সিনেমার মতোই একটা ধোঁকা মনে হয়েছে।

কিছু ফ্যান তো মজা করে হলেও, বেশ তীক্ষ্ণ মন্তব্য করেছেন:

এক ইউজার লিখেছেন – 'রিঙ্কি দল বদলেছে। এবার সচিবজির কী হবে?'

অন্য একজন মন্তব্য করেছেন – 'এ রিঙ্কি, তুমিও কি বনরাকাস গ্যাং-এ চলে গেলে? সচিবজির মন ভেঙে দিলে।'

আরেকজন ইউজার তো এমনকী লিখেছেন – 'তোমার থেকে বিনোদ ভালো... গরিব, কিন্তু বিশ্বাসঘাতক নয়।'

ফ্যানদের দুটি দল: সচিবজি বনাম বনরাকাস

‘পঞ্চায়েত’-এর সবচেয়ে বড় সাফল্য হল, এর চরিত্রগুলি আজ 'আসল মানুষ'-এ পরিণত হয়েছে। এখন রিঙ্কি কেবল একটি চরিত্র নয়, বরং প্রতিটি তরুণ দর্শকের হৃদয়ের গল্প। সচিবজি অর্থাৎ জিতেন্দ্র কুমারের চরিত্র গভীর, সৎ এবং রোমান্টিক, যেখানে ভূষণের (বনরাকাস) চরিত্র মজাদার, চালাক এবং রাজনৈতিক।

যখন বাস্তবে রিঙ্কি এবং বনরাকাস একসঙ্গে দেখা দিলেন, তখন দর্শকদের মনে হল যেন ভোট দেওয়ার পর দল পরিবর্তন হয়েছে।

সিজন ৪-এ রাজনৈতিক নাটক বেড়েছে

‘পঞ্চায়েত ৪’ এবার গল্পটিকে আগের চেয়ে অনেক বেশি রাজনৈতিক করে তুলেছে। ভূষণ এবং প্রধানজির মধ্যেকার টানাপোড়েন, উন্নয়ন প্রকল্পের দুর্বলতা, সচিবজির চাকরির সংকট – সব মিলিয়ে দর্শকদের নতুন করে ভাবতে বাধ্য করেছে।

রিঙ্কি এবং সচিবজির মধ্যে ঘনিষ্ঠতা দেখে দর্শকরা আশা করেছিলেন, হয়তো এই সিজনে কোনো প্রস্তাব বা নিশ্চিত রোমান্স দেখতে পাওয়া যাবে। কিন্তু নির্মাতারা টুইস্ট এনে সবার মনে আঘাত করেছেন।

এই কারণেই সানভিকা (রিঙ্কি) যখন বনরাকাসের (ভূষণ) সঙ্গে বাস্তবে ছবি পোস্ট করেন, তখন দর্শকদের ভেতরের আশাগুলো ভেঙে যেতে দেখা যায়।

সোশ্যাল মিডিয়া পঞ্চায়েতের নতুন পঞ্চায়েত ঘর

ফ্যানেরা মন্তব্যে রিঙ্কিকে 'বিশ্বাসঘাতক', 'দলবদলকারী', 'আবেগের খেলনা' ইত্যাদি বলেছেন। যদিও এই সমস্ত কথা মজাদার ছিল, তবে এটি প্রমাণ করে যে 'পঞ্চায়েত'-এর দর্শকদের উপর কতটা গভীর প্রভাব রয়েছে।

একজন ইউজার মজা করে লিখেছেন – 'প্রধানজি হওয়ার পরেই প্রথম কাজ হল সচিবজির গার্লফ্রেন্ডকে ছিনিয়ে নেওয়া। এ তো ক্ষমতার অপব্যবহার!'

অভিনেতাদের বন্ধুত্ব আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে

বাস্তবতা হল, সকল অভিনেতা-অভিনেত্রী একে অপরের ভালো বন্ধু এবং শুটিংয়ের সময় কাটানো মজাদার মুহূর্তগুলি প্রায়শই সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেন। তবে দর্শক যখন কোনও চরিত্রের সঙ্গে আবেগগতভাবে জড়িয়ে পড়েন, তখন রিল এবং বাস্তবের মধ্যেকার পার্থক্যটা মুছে যায়।

সানভিকা এবং আশিষের ছবিও সম্ভবত সেই বন্ধুত্বের অংশ ছিল, তবে ইন্টারনেটে এটি যেন বিরোধী দলের গোপন মিটিং-এ পরিণত হয়েছিল।

Leave a comment