চীনের ফার্স্ট লেডি পেং লুইয়ান ছিলেন একসময়কার তারকা গায়িকা। বিয়ের পর তিনি গান ছেড়ে সমাজসেবায় মনোনিবেশ করেন। এসসিও সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী মোদীর অভ্যর্থনা জানিয়ে তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নজরে আসেন।
বেইজিং। এসসিও সম্মেলন শেষ হলেও এর আলোচনা এখনো জারি রয়েছে। এবার আলোচনায় শুধু ভারত, চীন ও রাশিয়ার নেতারাই নন, চীনের ফার্স্ট লেডি পেং লুইয়ানও ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী মোদীর অভ্যর্থনা জানানোর সময় পেং লুইয়ানের দিকে অনেকেই আকৃষ্ট হন। কিন্তু আপনি কি জানেন যে চীনের ফার্স্ট লেডি একসময় বিখ্যাত গায়িকা ছিলেন এবং এখন সমাজসেবায় এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন? আসুন জেনে নেওয়া যাক তাঁর পুরো যাত্রা।
গানের ক্যারিয়ারেই তাঁর পরিচিতি
পেং লুইয়ান ১৯৪২ সালে চীনের শানডং প্রদেশে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর মা ছিলেন একজন অপেরা গায়িকা এবং বাবা ছিলেন স্কুলের শিক্ষক। পরিবারে শিল্পের পরিবেশ ছিল, তাই পেং অল্প বয়স থেকেই গানের প্রতি ঝোঁক দেখিয়েছিলেন।
১৯৮০-এর দশকে তিনি চীনের অন্যতম তারকা গায়িকা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। সরকারি টেলিভিশনের বড় বড় অনুষ্ঠানে তাঁর পরিবেশনা হতো। পেং এতটাই জনপ্রিয় ছিলেন যে লোকেরা তাঁকে "ন্যাশনাল ডিভা" বলে ডাকত।
শি জিনপিংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও বিবাহ
১৯৮৬ সালে পেং লুইয়ানের সঙ্গে শি জিনপিংয়ের সাক্ষাৎ হয়। সে সময় শি ছিলেন কমিউনিস্ট পার্টির একজন মধ্যম সারির কর্মকর্তা। দুজনের মধ্যে সাক্ষাৎ বাড়তে থাকে এবং ১৯৮৭ সালে তাঁরা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। পেং তখন জানতেন না যে তাঁর জীবন এতটা বদলে যাবে। শি জিনপিং ধীরে ধীরে চীনের রাজনীতিতে উচ্চতায় পৌঁছান এবং অবশেষে দেশের রাষ্ট্রপতি হন।
সমাজসেবার দিকে পদক্ষেপ
বিয়ের পরেও পেং আরও কয়েক বছর গান গেয়েছেন, কিন্তু ২০০০-এর দশকে তিনি এই ক্যারিয়ার ছেড়ে সমাজসেবায় তাঁর অবদান রাখতে শুরু করেন। পেং লুইয়ান এখন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) গুডউইল অ্যাম্বাসেডর। তিনি এইচআইভি/এইডস এবং যক্ষ্মার মতো রোগের বিরুদ্ধে সচেতনতামূলক প্রচারাভিযানে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন।
এসসিও সম্মেলনে গ্ল্যামার ও গ्रेसের প্রকাশ
এসসিও সম্মেলনে পেং লুইয়ান তাঁর স্বামী শি জিনপিংয়ের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোদীর অভ্যর্থনা জানাতে দেখা যান। তাঁর মার্জিত ভঙ্গি এবং ব্যক্তিত্ব মানুষকে মুগ্ধ করেছিল। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর ছবি দ্রুত ভাইরাল হয় এবং লোকেরা তাঁর সৌন্দর্য ও সরলতার প্রশংসা করতে শুরু করে।
ব্যক্তিগত জীবনেও তিনি ভারসাম্যের দৃষ্টান্ত
পেং এবং শি জিনপিং হয়তো জনসমক্ষে তাঁদের সম্পর্কের কথা কম বলেন, কিন্তু তাঁরা তাঁদের ব্যক্তিগত জীবনে ভারসাম্য বজায় রাখেন। পেশা ভিন্ন হওয়া সত্ত্বেও, তাঁরা পরিবারকে সময় দিতে ভোলেন না।