পিতৃপক্ষ ২০২৫ সালে ৭ সেপ্টেম্বর থেকে ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মহালয়া পালিত হবে, যেখানে শ্রাদ্ধ ও তর্পণ-এর বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। এই সময়ে পিতৃপুরুষদের তর্পণ করলে তাঁদের আত্মার শান্তি লাভ হয় এবং পরিবারে সুখ-সমৃদ্ধি, ধন-বৈভব ও বিদ্যার বৃদ্ধি ঘটে। সঠিক পদ্ধতি ও ভক্তি সহকারে তর্পণ করলে জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তনও আসে।
Pitru Paksha 2025: ৭ সেপ্টেম্বর থেকে ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পালিত মহালয়ার সময়ে পিতৃপুরুষদের আত্মার শান্তির জন্য শ্রাদ্ধ ও তর্পণ-এর গুরুত্ব বেড়ে যায়। ভারতে এই উৎসব ঐতিহ্যবাহী রীতিনীতি ও ধর্মশাস্ত্র অনুসারে পালিত হয়। এই সময়ে পিতৃপুরুষদের তর্পণ করলে তাঁদের আশীর্বাদে জীবনে সুখ-সমৃদ্ধি, ধন, বৈভব ও বিদ্যায় বৃদ্ধি ঘটে। সঠিক সময়, পদ্ধতি ও পূর্ণ ভক্তি সহকারে করা তর্পণ পরিবারে ইতিবাচক পরিবর্তন ও ভারসাম্যও নিয়ে আসে।
ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণে তর্পণ-এর গুরুত্ব
শ্রাদ্ধে তর্পণ-এর বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে, কারণ এর ফলে পিতৃপুরুষরা সন্তুষ্ট ও তৃপ্ত হন। ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ অনুসারে, যেভাবে বর্ষার জল বিভিন্ন স্থানে ভিন্ন রূপ ধারণ করে—ঝিনুকে মুক্তা, কদলীতে কর্পূর, মাঠে শস্য এবং ধুলোতে কাদা—ঠিক তেমনই তর্পণ-এর জল বিভিন্ন যোনিস্থ পিতৃপুরুষদের তাঁদের যোগ্য খাদ্য ও সন্তুষ্টি প্রদান করে। এই প্রক্রিয়ার ফলে পিতৃপুরুষদের আত্মা শান্তি লাভ করে এবং তর্পণকারী জাতকেরও চাকরি, ব্যবসা ও জীবনের অন্যান্য ক্ষেত্রে লাভ, উন্নতি ও সমৃদ্ধি লাভ হয়।
তর্পণ-এর ছয় প্রকার
জ্যোতিষ ও শাস্ত্র অনুসারে তর্পণ প্রধানত ছয় প্রকার ভাবে করা হয়: দেব তর্পণ, ঋষি তর্পণ, দিব্য মানব তর্পণ, দিব্য পিতৃ তর্পণ, যম তর্পণ এবং মনুষ্য-পিতৃ তর্পণ। সকল প্রকারের বিধিপূর্বক পালন করলে অধিক ফলপ্রসূ হয়।
তর্পণ করার পদ্ধতি
শ্রাদ্ধে তর্পণ করার সময় পরিষ্কার জলে দুধ, যব, চাল এবং গঙ্গাজল মিশিয়ে পিতৃপুরুষদের উদ্দেশ্যে অর্পণ করা উচিত। দক্ষিণ দিকে মুখ করে বাম হাঁটু মুড়ে বসুন এবং যজ্ঞোপবীতধারী ব্যক্তি যজ্ঞোপবীত বাম কাঁধ থেকে ডান কাঁধে তুলে বৃদ্ধাঙ্গুলির সাহায্যে ধীরে ধীরে জল অর্পণ করুন। এই অবস্থানকে পিতৃ তীর্থ মুদ্রা বলা হয়। প্রত্যেক পিতৃপুরুষকে তিন-তিন অঞ্জলি জল দেওয়া আবশ্যক। তর্পণ কার্য সর্বদা পরিষ্কার বস্ত্র পরে এবং পূর্ণ ভক্তি সহকারে করুন, কারণ ভক্তি ছাড়া এই ধর্মকর্ম তামসিক ও খণ্ডিত বলে বিবেচিত হয়।
এইভাবে পিতৃপক্ষ-এ সঠিক পদ্ধতি ও ভক্তি সহকারে করা তর্পণ কেবল পিতৃপুরুষদের আত্মাকে শান্তি দেয় না, বরং পরিবারে সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধির সঞ্চার করে।