পঞ্জাব ক্যাবিনেট বেয়াদবি বিল অনুমোদন করেছে। এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের পরে, সম্ভবত আজই এই বিলটি পঞ্জাব বিধানসভায় পেশ করা হবে। পঞ্জাব সরকারের উদ্দেশ্য হল এই বিলের মাধ্যমে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার ঘটনার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
চণ্ডীগড়: পঞ্জাবে ধর্মীয় গ্রন্থ এবং স্থানগুলির বেয়াদবি (Beadbi) রোধ করার জন্য একটি কঠোর আইন আনার দিকে বড় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। পঞ্জাব ক্যাবিনেট বেয়াদবি বিল ২০২৫ (Punjab Sacrilege Bill 2025) অনুমোদন করেছে। এই বিলটি এখন আজ পঞ্জাব বিধানসভার বিশেষ অধিবেশনে পেশ করা হবে। এই আইনের অধীনে ধর্মীয় গ্রন্থ, ধর্মীয় স্থান বা চিহ্নের অবমাননা কারীদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান করা হয়েছে।
পঞ্জাবে এই বিষয়টা দীর্ঘদিন ধরে অত্যন্ত সংবেদনশীল ছিল এবং সমাজের প্রতিটি শ্রেণী, বিশেষ করে শিখ সংগঠনগুলির পক্ষ থেকে এর কঠোর শাস্তির জন্য ক্রমাগত দাবি জানানো হচ্ছিল। এখন সরকার এই আইনের মাধ্যমে এই বার্তা দিতে চাইছে যে রাজ্যে কোনো ধরনের ধর্মীয় অনুভূতি নিয়ে খেলা বরদাস্ত করা হবে না।
বেয়াদবি আইন সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি
- ধর্মীয় গ্রন্থ, ধর্মীয় স্থান বা কোনো পবিত্র বস্তুর অবমাননা কারীদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হবে।
- দোষীদের প্যারোলের সুবিধা দেওয়া হবে না।
- এইসব মামলার শুনানির জন্য বিশেষ আদালত গঠন করা হবে।
- পুলিশ এবং প্রশাসনের এই মামলাগুলিতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার অধিকার থাকবে।
বিশেষ অধিবেশনে পেশ হবে বিল | Punjab Assembly Special Session 2025
পঞ্জাব বিধানসভার বিশেষ অধিবেশন তৃতীয় দিনে প্রবেশ করেছে। সরকার বেয়াদবির বিরুদ্ধে আইন আনার জন্য এই বিশেষ অধিবেশন ডেকেছিল, যা আরও দু'দিন বাড়ানো হয়েছে। সোমবার দুপুর ২টায় বিধানসভার কার্যক্রম শুরু হবে, যেখানে এই বিলটি পেশ করার পাশাপাশি অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিল নিয়েও আলোচনা করা হবে। এই বিলগুলির ওপরেও অনুমোদন আসতে পারে:
- পঞ্জাব রাজ্য উন্নয়ন কর সংশোধন বিল ২০২৫ (Punjab State Development Tax Amendment Bill 2025)
- পঞ্জাব বিনিয়োগ আইন (বাতিল) বিল ২০২৫ (Punjab Appropriation Act Repeal Bill 2025)
এছাড়াও বিধায়ক রানা ইন্দ্র প্রতাপ সিং নিচু এলাকার বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ প্রস্তাব আনতে পারেন। সেই সঙ্গে পঞ্জাব সরকার বীজ নিগম লিমিটেডের ২০১৭-২০২২ পর্যন্ত বার্ষিক রিপোর্ট এবং পঞ্জাব পাবলিক ক্রয় স্বচ্ছতা আইন, ২০১৯-এর ধারা ৬৩-এর অধীনে প্রয়োজনীয় অর্থ বিভাগের নির্দেশও সভায় পেশ করতে পারে।
সরকার সব ধর্মের মতামত নেবে
পঞ্জাব সরকার এই আইন তৈরির আগে সমস্ত ধর্মীয় সংগঠন এবং সমাজের দায়িত্বশীল শ্রেণীগুলির মতামত নিতে চাইছে। এর জন্য একটি কমিটি গঠনের বিষয়ে বিবেচনা করা হচ্ছে, যাতে কোনো সম্প্রদায়ের মনে না হয় এই আইন পক্ষপাতদুষ্ট এবং সমস্ত ধর্মের ধর্মীয় অনুভূতির সুরক্ষা নিশ্চিত করা যায়। এই কমিটিতে শিখ, হিন্দু, মুসলিম, খ্রিস্টান সহ অন্যান্য ধর্মের প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।
পঞ্জাবে গত বছরগুলিতে ধর্মীয় গ্রন্থগুলির অবমাননা সম্পর্কিত বেশ কয়েকটি বড় বিতর্ক সামনে এসেছে, যা রাজ্যে সামাজিক সম্প্রীতি এবং আইনশৃঙ্খলাকে গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। এই কারণে ধর্মীয় সংগঠন এবং সাধারণ মানুষের তরফে বারবার কঠোর আইন তৈরির দাবি উঠেছে।