পাঞ্জাব-হরিয়ানা হাইকোর্ট থেকে স্বঘোষিত ধর্মগুরু রামপালকে স্বস্তি। ২০১৪ সালের বারওয়ালা কাণ্ডে তাঁর অনুগামীদের মৃত্যুর ঘটনায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের (life imprisonment) সাজা স্থগিত (suspended) করা হয়েছে। পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়া চলতে থাকবে।
সন্ত রামপাল: শতলোক আশ্রমের প্রধান এবং স্বঘোষিত ধর্মগুরু রামপাল পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্ট থেকে বড় স্বস্তি পেয়েছেন। আদালত সাত বছর আগে তাঁর অনুগামীদের মৃত্যুর সঙ্গে যুক্ত মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের (life imprisonment) সাজা স্থগিত (suspended) করেছে। হাইকোর্টের এই নির্দেশের পর রামপাল এবং তাঁর অনুগামীরা এটিকে ন্যায়বিচারের দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে অভিহিত করেছেন।
ঘটনাটি কী?
২০১৮ সালে হিসার (Hisar) জেলার একটি নিম্ন আদালত শতলোক আশ্রমের প্রধান রামপাল এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের হত্যা (murder), জিম্মি করা (hostage) এবং অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের (criminal conspiracy) মতো গুরুতর অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করেছিল। এই মামলাটি ২০১৪ সালের ১৯শে নভেম্বরের সেই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত, যখন হিসার জেলার বারওয়ালা স্থিত আশ্রমে পুলিশ ও অনুগামীদের মধ্যে হিংসাত্মক সংঘর্ষ (clash) হয়েছিল। এই সংঘর্ষে চারজন মহিলা এবং একজন শিশুর মৃত্যু হয়েছিল।
বারওয়ালা সংঘর্ষের ঘটনাপ্রবাহ
হিসার জেলার বারওয়ালা শহরে অবস্থিত শতলোক আশ্রমকে নিয়ে দীর্ঘকাল ধরে বিতর্ক চলছিল। ২০১৪ সালে পুলিশ যখন আশ্রম খালি করার চেষ্টা করে, তখন হাজার হাজার অনুগামী প্রতিরোধ জানায়। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং অল্প সময়ের মধ্যেই পুলিশ ও সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ (clash) বেধে যায়। এই সংঘর্ষে পাঁচজনের মৃত্যু হয় এবং অনেকে আহত হন। ঘটনাটি জাতীয় স্তরে আলোচনার বিষয় হয়ে ওঠে এবং রামপালকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আদালতের রায় ও সাজা
ঘটনার তদন্তের পর, ২০১৮ সালের অক্টোবরে হিসার আদালত রামপাল এবং তাঁর কিছু অনুগামীদের দোষী সাব্যস্ত করে এবং তাঁদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের (life imprisonment) সাজা শোনায়। আদালত মনে করেছিল যে অনুগামীদের মৃত্যু এবং জিম্মি করার জন্য রামপাল এবং তাঁর সহযোগীরা দায়ী ছিলেন। সেই সময় এটিকে আইন ও শৃঙ্খলা (law and order) সংক্রান্ত একটি বড় রায় হিসেবে গণ্য করা হয়েছিল।
হাইকোর্টে দায়ের করা আবেদন
রামপালের পক্ষ থেকে পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টে একটি আবেদন (petition) দায়ের করা হয়েছিল, যেখানে হিসার আদালতের দেওয়া সাজাকে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়। আবেদনে বলা হয়েছিল যে নিম্ন আদালত সমস্ত তথ্য ও পরিস্থিতি বিবেচনা করেনি এবং বিচারিক ত্রুটি (judicial error) হয়েছে।
হাইকোর্টের নির্দেশ
বিচারপতি গুরভিন্দের সিং গিল এবং বিচারপতি দীপিंदर সিং নালওয়ার ডিভিশন বেঞ্চ (bench) এই আবেদনের শুনানি করে। দীর্ঘ শুনানির পর আদালত ২০১৮ সালে ঘোষিত যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের (life imprisonment) সাজা স্থগিত করার নির্দেশ দেয়। তবে, এর মানে এই নয় যে রামপাল সম্পূর্ণভাবে খালাস (acquitted) পেয়েছেন। এটি কেবল তাঁর সাজার উপর স্থগিতাদেশ, অথচ মামলার শুনানি (hearing) এখনও চলবে।
রামপালের সমর্থকদের প্রতিক্রিয়া
হাইকোর্টের এই রায়ের পর রামপালের সমর্থকদের মধ্যে আনন্দের আমেজ বিরাজ করছে। তারা বলছেন যে রামপাল নির্দোষ (innocent) এবং তাঁকে ফাঁসানো হয়েছিল। অনুগামীরা বলেন যে এই রায় ন্যায়বিচারের জয় এবং আদালতেও সত্য সামনে আসবে।