গুরুগ্রামে টেনিস খেলোয়াড় রাধিকা যাদবের হত্যার পর এই মামলাটি ক্রমাগত শিরোনামে রয়েছে। হত্যার অভিযোগ রাধিকার বাবা দীপক যাদবের বিরুদ্ধে, যাকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। এই চাঞ্চল্যকর ঘটনার তদন্তে, পুলিশের অগ্রগতির সাথে সাথে নতুন নাম এবং দিক উঠে আসছে। এরই মধ্যে, অভিনেতা ইনামুল হকের নামও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতে শুরু করেছে, যা নিয়ে বিভিন্ন ধরনের গুজব ছড়ানো হচ্ছে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু ব্যবহারকারী এই মামলাটিকে 'লাভ জিহাদ'-এর সাথে যুক্ত করে ইনামুলের ওপর নিশানা করেছে। এবার ইনামুল হক এই বিষয়ে মুখ খুলেছেন এবং একটি সাফাই দিয়েছেন। একটি ভিডিও প্রকাশ করে তিনি স্পষ্ট করেছেন যে রাধিকা যাদবের সাথে তাঁর কোনো ব্যক্তিগত সম্পর্ক ছিল না। ইনামুলের মতে, রাধিকার সাথে তাঁর কেবল একবার—প্রায় এক বছর আগে নয়ডায় একটি মিউজিক ভিডিওর শুটিংয়ের সময়—দেখা হয়েছিল। এছাড়া তাদের মধ্যে আর কোনো যোগাযোগ ছিল না।
ইনামুল বলেছেন যে রাধিকা তাঁর জন্য কেবল একজন সহ-অভিনেত্রী ছিলেন এবং তাঁদের মধ্যে কথাবার্তা সম্পূর্ণ পেশাদার ছিল। তিনি স্বীকার করেছেন যে দু'জনেই সোশ্যাল মিডিয়ায় একে অপরের সাথে যুক্ত ছিলেন, তবে ব্যক্তিগতভাবে কোনো ঘনিষ্ঠতা ছিল না। অভিনেতা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া সমস্ত গুজবকে ভিত্তিহীন এবং বিভ্রান্তিকর বলে অভিহিত করেছেন।
হত্যার পিছনে ‘বদনামি’-র আশঙ্কা
রাধিকা যাদবের হত্যার পর তদন্তে জানা গেছে যে তাঁর বাবা দীপক যাদব সমাজের কটূক্তি এবং কথিত বদনামিতে আহত হয়েছিলেন। পুলিশের মতে, মানসিক চাপে এসে তিনি রাধিকাকে গুলি করে হত্যা করেন। বর্তমানে দীপক যাদবকে গুরুগ্রামের জেলা কারাগারে কয়েদি নম্বর ৪১৪২-এর অধীনে রাখা হয়েছে। জেল প্রশাসনের মতে, তাঁর স্বাস্থ্য স্বাভাবিক এবং তিনি নিয়মিত খাবার খাচ্ছেন।
এই সময়ে, একজন প্রতিবেশী মহিলা দাবি করেছেন যে ঘটনার এক দিন আগে দীপক একটি গ্রামের মানুষের কাছ থেকে একটি বার্তা পেয়েছিলেন, যা দেখে তিনি বেশ বিচলিত হয়েছিলেন। যদিও, এই দাবির সত্যতা পুলিশ নিশ্চিত করেনি এবং পরিবার থেকেও কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া আসেনি।
মোবাইল ডেটা থেকে গুরুত্বপূর্ণ সূত্র পাওয়ার সম্ভাবনা
হত্যার তদন্তে পুলিশের এখন রাধিকা এবং তাঁর বাবার মোবাইল ডেটা থেকে বড় ধরনের সূত্র পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দুজনের ফোন ফরেনসিক ল্যাবে পাঠানো হয়েছে, যেখানে মুছে ফেলা বার্তা, কল রেকর্ড এবং অন্যান্য ডিজিটাল কার্যকলাপ পুনরুদ্ধার করা হচ্ছে। কর্মকর্তারা জানার চেষ্টা করছেন যে রাধিকা মৃত্যুর আগে কারও সাথে কথা বলেছিলেন কিনা বা কোনো চাপে ছিলেন কিনা।
এ পর্যন্ত, এই মামলায় গ্রাম ও পরিবারের সাথে জড়িত প্রায় ৩৫ জনের সাথে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তদন্ত দল মনে করে যে মোবাইল ডেটার মাধ্যমে হত্যার পটভূমি এবং কারণ সম্পর্কিত অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যেতে পারে। পুলিশ বর্তমানে প্রতিটি দিক খুব কাছ থেকে খতিয়ে দেখছে।