রাজস্থান বিধানসভা কোচিং রেগুলেশন বিল ২৫ पारित করেছে, যার অধীনে এখন থেকে সমস্ত কোচিং প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন বাধ্যতামূলক হবে। এই বিধেয়র উদ্দেশ্য হলো শিক্ষার্থীদের জন্য চাপমুক্ত শিক্ষা, নিরাপত্তা ও স্বচ্ছতার সাথে উন্নত পরিবেশ প্রদান করা।
জয়পুর: রাজস্থান সরকার রাজ্য ও দেশ থেকে কোচিং নিতে আসা লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের জন্য একটি বড় স্বস্তি এনে দিয়েছে। জয়পুর, কোটা ও সিকারের মতো শহর যেখানে প্রতি বছর হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রী প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিতে আসে, সেখানে এখন কোচিং শিল্প নিয়ে একটি নতুন নিয়মকানুন চালু হতে চলেছে। ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ তারিখে রাজস্থান বিধানসভায় রাজস্থান কোচিং সেন্টার (নিয়ন্ত্রণ ও বিধি) বিল ২০২৫ বিপুল ভোটে পাস হয়েছে।
উপ-মুখ্যমন্ত্রী ডঃ প্রেমচাঁদ বাইরওয়া सदनে এই বিলটি পেশ করতে গিয়ে বলেন, এটি কেবল একটি আইন নয়, বরং আগামী প্রজন্মের জন্য শিক্ষার দিক ও दशा নির্ধারণকারী একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ।
নিবন্ধন ছাড়া কোচিং সেন্টার চলবে না
নতুন বিধেয়র অনুযায়ী, এখন থেকে কোনো কোচিং সেন্টার নিবন্ধন ছাড়া পরিচালিত হতে পারবে না। নিবন্ধনের জন্য রাজ্য সরকার ন্যূনতম ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ১০০ নির্ধারণ করেছে, যার ফলে শুধুমাত্র সংগঠিত ও সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন প্রতিষ্ঠানই স্বীকৃতি পাবে।
যদি কোনো প্রতিষ্ঠান নিয়ম লঙ্ঘন করে, তবে প্রথমবার ৫০ হাজার টাকা এবং দ্বিতীয়বার ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা আরোপ করা হবে। লাগাতার ত্রুটি পাওয়া গেলে তাদের নিবন্ধনও বাতিল করা যেতে পারে। এতে ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকদের বিশ্বাস দৃঢ় হবে এবং প্রতিষ্ঠানগুলির জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে।
শিক্ষার্থীদের মনোবল ও স্বাস্থ্যের প্রতি মনোযোগ
এই বিধেয়র সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য। কোটার মতো কোচিং হাবগুলিতে আত্মহত্যার ক্রমবর্ধমান ঘটনাগুলির কথা মাথায় রেখে সরকার প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক পরামর্শদাতা নিয়োগকে বাধ্যতামূলক করেছে। নিয়মিত স্ট্রেস-ম্যানেজমেন্ট সেশন, কাউন্সেলিং এবং অভিভাবকদের সাথে যোগাযোগের ব্যবস্থাও করতে হবে।
এছাড়াও, প্রতিটি জেলায় হেল্পলাইন নম্বর জারি করা হবে এবং একটি কেন্দ্রীভূত ওয়েব পোর্টাল তৈরি করা হবে। এই পোর্টালে সমস্ত কোচিং প্রতিষ্ঠানের তথ্য জনসমক্ষে প্রকাশিত হবে, যা স্বচ্ছতা বজায় রাখবে এবং অভিভাবকরা সরাসরি পরিস্থিতি বুঝতে পারবেন।
জরিমানা এবং নিয়মে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন
বিধানসভায় আলোচনার সময় বিলটিতে কিছু সংশোধনীও আনা হয়েছে। পূর্বে, কোচিং প্রতিষ্ঠানগুলিতে প্রথমবার অনিয়ম ধরা পড়লে ২ লক্ষ টাকা এবং দ্বিতীয়বার ৫ লক্ষ টাকা জরিমানা ধার্য্য করা হয়েছিল। কিন্তু নতুন সংশোধনীর পরে প্রথমবার ৫০ হাজার টাকা এবং দ্বিতীয়বার ২ লক্ষ টাকার জরিমানা আরোপ করা হবে।
এছাড়াও, নিবন্ধনের জন্য শিক্ষার্থীদের ন্যূনতম সংখ্যা ৫০ থেকে বাড়িয়ে ১০০ করা হয়েছে। এর ফলে ছোট এবং অসংগঠিত প্রতিষ্ঠানগুলিও ধীরে ধীরে নিয়মের অধীনে এসে শিক্ষার্থীদের উন্নত সুযোগ-সুবিধা প্রদান করতে পারবে।
কোচিং সেন্টারগুলি শিক্ষা ও সংস্কৃতির কেন্দ্র হবে
উপ-মুখ্যমন্ত্রী ডঃ প্রেমচাঁদ বাইরওয়া বিধানসভায় বলেছেন যে এই বিল কেবল একটি আইন নয়, বরং শিক্ষার্থীদের নিরাপদ ও ইতিবাচক পরিবেশ প্রদানের একটি পদক্ষেপ।
তিনি বলেন যে সরকার চায় কোচিং প্রতিষ্ঠানগুলি কেবল র্যাঙ্ক ও প্রতিযোগিতার দৌড়ে সীমাবদ্ধ না থাকুক, বরং সেগুলি সংস্কৃতি ও সামাজিক মূল্যবোধের কেন্দ্রও হোক। বাইরওয়া আরও বলেন যে এই বিল জাতীয় শিক্ষা নীতি ২০২০-এর সাথে সঙ্গতিপূর্ণ এবং এটি দক্ষতা উন্নয়ন, উদ্ভাবন ও শিক্ষার্থীদের সার্বিক বিকাশের উপর জোর দেবে।
রেগুলেশন বিলের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা উন্নত সুযোগ-সুবিধা পাবে
রাজস্থানের অর্থনীতিতে কোচিং শিল্পের একটি বড় অবদান রয়েছে। কোটা ও সিকারের মতো শহরগুলি সারা দেশের লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থীর জন্য শিক্ষার কেন্দ্র এবং এই ক্ষেত্র থেকে হাজার হাজার মানুষ কর্মসংস্থান পেয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে কোচিং রেগুলেশন বিল কার্যকর হলে কেবল শিক্ষার্থীরাই উন্নত সুযোগ-সুবিধা পাবে না, বরং প্রতিষ্ঠানগুলিও আরও স্বচ্ছ এবং সংবেদনশীল হবে।
রাজ্য সরকার দাবি করেছে যে নিয়ম মেনে চলা কোচিং প্রতিষ্ঠানগুলিকে উৎসাহিত করা হবে। এর ফলে শিক্ষার গুণমান এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ—উভয়ের উপরই ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।