জামিনযোগ্য ধারায় দুই মহিলাকে ৪৫ দিন জেল: রাজস্থান হাইকোর্টের তীব্র ভর্ৎসনা

জামিনযোগ্য ধারায় দুই মহিলাকে ৪৫ দিন জেল: রাজস্থান হাইকোর্টের তীব্র ভর্ৎসনা

রাজস্থান হাইকোর্ট জয়পুরে জামিনযোগ্য ধারায় গ্রেফতার দুই মহিলাকে ৪৫ দিন জেল পাঠানোর ঘটনায় তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। আদালত এটিকে মৌলিক অধিকারের লঙ্ঘন বলে অভিহিত করে নিম্ন আদালত ও পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে।

Rajasthan High Court: রাজস্থান হাইকোর্ট শুক্রবার জয়পুরের একটি গুরুতর অবহেলার উপর কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে। জামিনযোগ্য ধারায় গ্রেফতার দুই মহিলাকে প্রায় দেড় মাস জেল পাঠানোর ঘটনায় আদালত অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। হাইকোর্ট এটিকে মহিলাদের মৌলিক অধিকারের লঙ্ঘন বলে অভিহিত করে বিচার প্রক্রিয়ায় ত্রুটি বলে চিহ্নিত করেছে। আদালত জেলা বিচারককে নির্দেশ দিয়েছে যে সংশ্লিষ্ট জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এবং অতিরিক্ত জেলা বিচারক (ADJ)-এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক, এবং রাজ্যের পুলিশ মহাপরিচালক (DGP)-কে দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের কাছে জবাব তলব করার আদেশও দিয়েছে।

জামিনযোগ্য ধারায় জেল পাঠানোর ঘটনায় হাইকোর্ট কঠোর

রাজস্থান হাইকোর্ট জয়পুরে জামিনযোগ্য ধারা থাকা সত্ত্বেও দুই মহিলাকে ৪৫ দিন জেলবন্দী রাখার ঘটনায় তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। আদালত বলেছে যে এটি মহিলাদের মৌলিক অধিকারের লঙ্ঘন এবং বিচার প্রক্রিয়ায় গুরুতর ত্রুটির উদাহরণ। হাইকোর্ট নিম্ন আদালত এবং পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে।

জয়পুরের चित्रकूट থানার সঙ্গে যুক্ত এই মামলা

এই মামলাটি জয়পুরের चित्रकूट থানার। ১৬ জুন পুলিশ এক ব্যবসায়ীর অভিযোগের ভিত্তিতে দুই মহিলাকে সেক্সটর্শন (যৌন শোষণ) এর অভিযোগে গ্রেফতার করে। যে ধারাগুলি দায়ের করা হয়েছিল সেগুলি সম্পূর্ণ জামিনযোগ্য ছিল, অর্থাৎ অভিযুক্তদের থানা থেকেই জামিন পাওয়ার কথা ছিল। তা সত্ত্বেও পুলিশ তাদের আদালতে হাজির করে এবং জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পর্যাপ্ত তথ্যের পর্যালোচনা না করেই তাদের জেল পাঠিয়ে দেয়।

শুধু তাই নয়, ম্যাজিস্ট্রেট মহিলাদের জামিনের আবেদনও বারবার খারিজ করে দেন। যখন মামলাটি জয়পুরের ADJ-6 আদালতে পৌঁছায়, সেখানেও জামিন মেলেনি। অবশেষে ২৮ জুলাই রাজস্থান হাইকোর্ট দুই মহিলাকে স্বস্তি দিয়ে জামিন মঞ্জুর করে।

জামিন পাওয়া অভিযুক্তের অধিকার: হাইকোর্ট

হাইকোর্ট তার আদেশে বলেছে যে জামিনযোগ্য মামলায় জামিন পাওয়া অভিযুক্তের সাংবিধানিক অধিকার। আদালত মন্তব্য করেছে যে ব্যক্তিগত স্বাধীনতা যে কোনও ব্যক্তির সবচেয়ে বড় সম্পদ, যা ইচ্ছামত কেড়ে নেওয়া যায় না।

আদালত আরও স্পষ্ট করেছে যে যদি অভিযুক্ত জামিন বন্ড এবং জামানত দিতে রাজি থাকে, তবে পুলিশ বা আদালতের জামিন অস্বীকার করার অধিকার নেই। এই মামলায় পুলিশ, বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা এবং এমনকি সরকারি আইনজীবীরাও তাদের দায়িত্ব পালন করেননি।

বিচার প্রক্রিয়ার গুরুতর ত্রুটি হিসেবে আদালত দুঃখ প্রকাশ করেছে

বিচারপতি অনিল উপমনের বেঞ্চ তার আদেশে বলেছে যে এই মহিলা দুজনকে অহেতুক জেল পাঠানো বিচার প্রক্রিয়ার গুরুতর ত্রুটি। আদালত এই ঘটনায় গভীর অসন্তোষ প্রকাশ করেছে এবং স্পষ্ট করেছে যে এই ধরনের মামলায় বিচার বিভাগের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা অপরিহার্য।

হাইকোর্ট সতর্ক করেছে যে ভবিষ্যতে যদি এই ধরনের অবহেলা পুনরাবৃত্তি হয়, তবে এটি ব্যক্তিগত স্বাধীনতার লঙ্ঘনের ঘটনা আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে। আদালত আরও বলেছে যে বিচার ব্যবস্থাকে সংবেদনশীল এবং দায়িত্বশীল করে তোলা সময়ের দাবি।

 

Leave a comment