টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত রাজস্থান আট জেলায় প্লাবন মৃত ২ ঘরছাড়া বহু

টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত রাজস্থান আট জেলায় প্লাবন মৃত ২ ঘরছাড়া বহু

রাজস্থানের আটটি জেলা টানা বৃষ্টিপাতের কারণে কার্যত জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। অবিরাম বর্ষণে রাস্তাঘাট ডুবে গিয়েছে, ঘরবাড়ি পানির তলায়, জনজীবন পুরোপুরি বিপর্যস্ত। স্থানীয় প্রশাসন এবং উদ্ধারকারী সংস্থাগুলো কঠোর পরিশ্রমে পরিস্থিতি সামলাতে চেষ্টা করছে। রাজ্যের নিম্নাঞ্চলগুলোতে বিশেষত প্রলয়ংকরী বৃষ্টি আরও ক্ষতি বৃদ্ধি করছে।

মৃতের সংখ্যা বাড়ছে, আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে

বৃষ্টিজনিত দুর্ঘটনায় ইতিমধ্যেই দুটি প্রাণহানি ঘটেছে। প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, আরও হতাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। দুর্গত পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়াতে শুরু করেছে এনডিআরএফ, পুলিশ ও স্থানীয় ত্রাণকর্মীরা। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, জলবন্দি এলাকার মানুষের জন্য অবিলম্বে খাদ্য, ওষুধ ও নিরাপদ আশ্রয় প্রয়োজন।

ঘরছাড়া মানুষদের সমস্যার সমাধান

নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় হাজার হাজার মানুষ ঘরছাড়া হয়ে পড়েছেন। তাঁরা বাধ্য হয়ে স্কুল, পঞ্চায়েত ভবন এবং সরকারি ক্যাম্পে আশ্রয় নিচ্ছেন। ঘরছাড়া মানুষদের জন্য ত্রাণ শিবির দ্রুত সম্প্রসারণের চেষ্টা চলছে। স্থানীয় প্রশাসনের তৎপরতায় আশ্রয়কেন্দ্রে খাবার, জল ও প্রাথমিক চিকিৎসা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ: ছাত্রছাত্রীদের জন্য ঝুঁকি

প্রবল জলবদ্ধতার কারণে রাজ্যের একাধিক জেলার স্কুল ও কলেজ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। প্রশাসন জানিয়েছে, ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তা তাদের অগ্রাধিকার। স্কুল ও কলেজ বন্ধ থাকায় শিশুদের স্বাভাবিক শিক্ষা ব্যাহত হলেও সবার জীবন রক্ষার জন্য এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

প্রশাসনের তৎপরতা ও উদ্ধারকাজ

এনডিআরএফ, সিভিল ডিফেন্স ও স্থানীয় প্রশাসন মিলে গ্রামাঞ্চলে নৌকা ও রিস্ক ফ্রি যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে। প্লাবিত এলাকায় শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানীয় জল ও জরুরি ঔষধ পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। ত্রাণ কার্যক্রমে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলোরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।

অবকাঠামোগত ক্ষতি ও বিপর্যয় মোকাবিলা

রাজস্থানের বন্যাকবলিত এলাকায় সড়ক, বাঁধ ও অন্যান্য অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিছু অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহও বন্ধ রয়েছে। প্রশাসন দ্রুত অবকাঠামো পুনরুদ্ধার ও পুনঃস্থাপনের চেষ্টা করছে। বিপর্যয় মোকাবিলা পরিকল্পনা অনুযায়ী, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে অস্থায়ী আশ্রয় দেওয়া হচ্ছে।

স্বাস্থ্যঝুঁকি ও সতর্কতা

বন্যার পানিতে জলজ রোগের আশঙ্কা রয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর সতর্ক করেছে, প্লাবিত এলাকায় বিশুদ্ধ জল ব্যবহার এবং স্যানিটেশন বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি। মশা ও অন্যান্য রোগের নিয়ন্ত্রণে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে।

ভবিষ্যতের প্রস্তুতি

প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য রাজ্য সরকার আরও ত্রাণশিবির স্থাপন, খাদ্য ও ওষুধের সরবরাহ বৃদ্ধি এবং উদ্ধারকাজ ত্বরান্বিত করছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে যাতে কোনোভাবেই প্লাবিত এলাকায় অযথা যাত্রা না করেন।

সমন্বিত প্রচেষ্টা ও স্থানীয় জনগণ

স্থানীয় প্রশাসন, এনডিআরএফ, পুলিশ, সিভিল ডিফেন্স এবং স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলো মিলিতভাবে বন্যার্তদের সাহায্য করছে। খাবার, ওষুধ, নিরাপদ আশ্রয় এবং পানি সরবরাহে সহায়তা নিশ্চিত করা হচ্ছে। স্থানীয় জনগণও নিজেদের মধ্যে সহায়তা ও সংহতি দেখাচ্ছে।এইভাবে রাজস্থানের আটটি জেলা টানা বৃষ্টির কারণে বিপর্যস্ত হলেও প্রশাসন, উদ্ধারকারী সংস্থা ও স্থানীয় জনগণের সমন্বিত প্রচেষ্টায় মানুষদের সুরক্ষা, খাদ্য ও আশ্রয় নিশ্চিত করার জন্য কাজ চলছে। পরিস্থিতি এখনও নিয়ন্ত্রণে, তবে সতর্কতা অব্যাহত রাখা হচ্ছে।

Leave a comment