रक्षाबंधन প্রতি বছর শ্রাবণ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে পালিত হয়। এই উৎসব ভাই-বোনের সম্পর্কের বন্ধনকে আরও দৃঢ় করে তোলে। বোনেরা তাদের ভাইদের হাতে রাখি বেঁধে তাদের দীর্ঘ জীবন এবং সুখ-সমৃদ্ধি কামনা করে। ভাইয়েরাও এই দিনে বোনকে সারা জীবন রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি দেয়। এই বছর, ২০২৫ সালের ৯ই আগস্ট, শনিবার रक्षाबंधन পালিত হবে।
পঞ্জিকা অনুসারে ভদ্রার ছায়া
रक्षाबंधन উৎসব শুধুমাত্র আবেগ-অনুভূতির সঙ্গেই জড়িত নয়, এটি পঞ্জিকা এবং শুভ মুহূর্তের সঙ্গেও সম্পর্কিত। এইবার ২০২৫ সালে रक्षाবন্ধনে ভদ্রা কালের ছায়া রয়েছে। হিন্দু ধর্মে বিশ্বাস করা হয় যে ভদ্রা কালে কোনও শুভ কাজ করা উচিত নয়। বিশেষ করে এই সময় रक्षाসূত্র বাঁধাও নিষিদ্ধ বলে মনে করা হয়।
ভদ্রা কালের সময় কখন থাকবে
পঞ্জিকা অনুযায়ী, ২০২৫ সালের ৮ই আগস্ট ভদ্রা কাল দুপুর ২টা বেজে ১২ মিনিটে শুরু হয়ে ৯ই আগস্ট রাত ১টা বেজে ৫২ মিনিট পর্যন্ত থাকবে। এর মানে হল, रक्षाবন্ধনের দিন অর্থাৎ ৯ই আগস্ট সকাল থেকে প্রায় দুপুর পর্যন্ত ভদ্রার প্রভাব থাকবে, কিন্তু তারপর সারাদিন শুভ থাকবে।
রাখি বাঁধার সঠিক মুহূর্ত কখন থেকে শুরু হবে
ভদ্রা কাল ৯ই আগস্ট রাত ১টা বেজে ৫২ মিনিটে শেষ হয়ে যাবে। তারপর ৯ই আগস্ট সকাল থেকে রাত পর্যন্ত রাখি বাঁধার জন্য সম্পূর্ণ শুভ সময় থাকবে। এই দিন বোনেরা সকাল থেকে শুরু করে রাত ৮টা পর্যন্ত তাদের ভাইদের রাখি বাঁধতে পারবে। এই সময়ে কোনও বাধা থাকবে না।
সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রাখি বাঁধার ছাড়
ভদ্রা কাল শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শুভ সময়ের শুরু হয়ে যাবে। বোনেরা সকাল থেকে সারাদিনের মধ্যে যেকোনো সময় রাখি বাঁধতে পারবে। এইবার रक्षाবন্ধনে চন্দ্র কুম্ভ রাশিতে এবং পূর্ণিমা তিথি বিদ্যমান থাকবে। সেইজন্য এই সময়টি ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকেও উত্তম থাকবে।
রাখি বাঁধার সময় বোনেরা তাদের ভাইদের মিষ্টি খাওয়ান।
রাখি বাঁধার সময় 'ওঁ যেন বদ্ধো বলি রাজা দানবেন্দ্রো মহাবলঃ' মন্ত্র জপ করার পরম্পরা রয়েছে।
ভাইদের রাখি বাঁধার সময় মাথায় রুমাল বা কোনও সুতির কাপড় রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়।
পূজার থালায় রাখির সঙ্গে রোली, চাল, প্রদীপ এবং মিষ্টি অবশ্যই রাখতে হয়।
रक्षाবন্ধনে বাজারেও থাকে বেশ ভিড়
रक्षाবন্ধন উপলক্ষে বাজারের আশেপাশে বেশ ভিড় দেখা যায়। রাখির দোকান থেকে শুরু করে মিষ্টির দোকান পর্যন্ত, সর্বত্রই ভিড় থাকে। এইবারও रक्षाबंधনের কয়েক দিন আগে থেকেই বাজারে ভিড় শুরু হয়ে যাবে। নানান রঙের রাখিতে বাজার সেজে উঠবে। বিভিন্ন ধরনের ডিজাইনার রাখির চাহিদাও আগের থেকে বেশি দেখা যেতে পারে।
উৎসবের দিনের ধর্মীয় তাৎপর্য
रक्षाबंधन শুধুমাত্র একটি পারিবারিক উৎসব নয়, এর একটি ধর্মীয় তাৎপর্যও রয়েছে। পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে, দেবী লক্ষ্মী রাজা বলিকে রাখি বেঁধে তাকে ভাই বানিয়েছিলেন এবং তার স্বামী ভগবান বিষ্ণুকে ফিরে পাওয়ার প্রতিশ্রুতি আদায় করেছিলেন। অন্য একটি কাহিনী অনুসারে, দ্রৌপদী শ্রীকৃষ্ণকে রাখি বেঁধেছিলেন, যার পরে কৃষ্ণ তাকে বস্ত্রহরণ থেকে রক্ষা করেছিলেন। এই গল্পগুলির কারণে এই উৎসব আরও বেশি আবেগপূর্ণ হয়ে ওঠে।
এইবার কেমন থাকবে रक्षाবন্ধনের পরিবেশ
যেহেতু এইবার रक्षाবন্ধনে ভদ্রা কালের প্রভাব উৎসবের দিন সকালের আগে শেষ হয়ে যাবে, তাই লোকেরা সময় অনুযায়ী রাখি বাঁধার সম্পূর্ণ সুযোগ পাবে। উৎসবটি শনিবার, যা সপ্তাহের ছুটির দিন, এই কারণে কর্মরত মানুষদেরও তাদের বোনেদের সঙ্গে দেখা করার এবং উৎসব উদযাপনের ভালো সুযোগ মিলবে।
রাখির সঙ্গে চলতে থাকে উপহারের পরম্পরা
रक्षाবন্ধনে রাখি বাঁধার পাশাপাশি উপহারের আদান-প্রদানও হয়। ভাইয়েরা তাদের বোনেদের উপহার দিয়ে তাদের খুশি দ্বিগুণ করে তোলে। এইবারও অনেক ব্র্যান্ড এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্ম রাখি গিফটের উপর অফার দেওয়ার প্রস্তুতি নিতে পারে।
এই বছর रक्षाবন্ধনে পাওয়া যাবে পুরো দিন
এইবার रक्षाबंधन শনিবারে এবং শুভ সময় সারাদিন থাকবে, যার ফলে সবাই কোনো রকম তাড়াহুড়ো ছাড়াই এই উৎসব পালন করতে পারবে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সময় বোনেদের জন্য রাখি বাঁধার উপযুক্ত থাকবে। ভদ্রা কাল শেষ হওয়ার পর কোনো রকম বিধি-নিষেধ থাকবে না।