আগ্রায় লস্কর-ই-তৈয়বার ধর্মান্তরকরণ চক্রের পর্দাফাঁস, গোয়ায় মূল চক্রী আয়েশা

আগ্রায় লস্কর-ই-তৈয়বার ধর্মান্তরকরণ চক্রের পর্দাফাঁস, গোয়ায় মূল চক্রী আয়েশা

আগ্রায় লস্কর-ই-তৈয়বার সঙ্গে জড়িত ধর্মান্তরকরণ চক্র ধরা পড়েছে। গোয়ার আয়েশা বিদেশি তহবিল থেকে সারা দেশে ধর্মান্তরকরণের নেটওয়ার্ক চালাচ্ছিল। পুলিশি তদন্তে বড় পর্দাফাঁস।

UP: উত্তর প্রদেশে অবৈধ ধর্মান্তরকরণের মামলার তদন্তের সময় আগ্রা থেকে এমন একটি চক্রের পর্দাফাঁস হয়েছে, যাদের যোগসাজশ লস্কর-ই-তৈয়বার মতো জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে রয়েছে। এই চক্রটি বিদেশি তহবিল পাওয়ার মাধ্যমে সারা দেশে ধর্মান্তরকরণ এবং মেয়েদের মগজধোলাইয়ের কাজ করত।

তহবিল ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব আয়েশার হাতে

এই নেটওয়ার্কের তহবিল ব্যবস্থাপক গোয়ার বাসিন্দা আয়েশা ওরফে এসবি কৃষ্ণা। মূলত ওড়িশার বাসিন্দা আয়েশা অনর্গল ইংরেজি বলতে পারে এবং বর্তমানে গোয়াতে থাকত। তদন্তকারী সংস্থাগুলির মতে, আয়েশার মাধ্যমেই লস্কর-এর সঙ্গে যুক্ত তহবিল সংযুক্ত আরব আমিরাত, কানাডা, লন্ডন এবং আমেরিকা থেকে ভারতে পাঠানো হত। এই টাকা সারা দেশে ছড়িয়ে থাকা নেটওয়ার্কে পাঠানো হত, যারা মেয়েদের মগজধোলাই করে তাদের ধর্মান্তরিত করত।

চক্রের কাছে আইনি পরামর্শদাতাও রয়েছে

আয়েশার কথিত স্বামী আলি হাসান ওরফে শেখর রায় কলকাতার বাসিন্দা এবং আদালতে কর্মচারী। তার কাজ ছিল চক্রের সদস্যদের আইনি তথ্য দেওয়া যাতে তারা ধরা না পড়ে। সে তহবিলের টাকা নেটওয়ার্কের বিভিন্ন সদস্যদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্বও সামলাত।

কানাডা থেকে তহবিল আসত, হাওলার মাধ্যমে টাকা ভারতে পাঠানো হত

তহবিলের প্রধান উৎস ছিল কানাডায় থাকা সৈয়দ দাউদ আহমেদ। সে কট্টরপন্থী ভিডিও বানিয়ে ছড়িয়ে দিত এবং হাওলার মাধ্যমে আয়েশার কাছে তহবিল পাঠাত। এই টাকা ধর্মান্তরকরণ এবং মগজধোলাই অভিযানে ব্যবহার করা হত।

সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে মেয়েদের নিশানা করা হত

এই নেটওয়ার্কের সবচেয়ে বিপজ্জনক মুখ হল আগ্রার আল রহমান কুরেশি। কুরেশি YouTube চ্যানেল এবং অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে নাবালিকা মেয়েদের মগজধোলাই করত। সে ইসলামিক শিক্ষার নামে মেয়েদের কট্টরপন্থার দিকে নিয়ে গিয়ে জিহাদি ভাবাদর্শের সঙ্গে যুক্ত করত।

কলকাতা থেকে ধরা পড়া ওসামাও সক্রিয় সদস্য ছিল

চক্রের আরও এক সক্রিয় সদস্য ছিল কলকাতার ওসামা। সে কুরেশির সঙ্গে মিলে মেয়েদের মানসিকভাবে দুর্বল করে তাদের পরিবার থেকে আলাদা করার কাজ করত। এই দু'জন মিলে ক্ষতিগ্রস্ত মেয়েদের নেটওয়ার্কের অংশ করতে প্রধান ভূমিকা নিত।

মহিলা দারোগার সাহায্যে পুলিশ চক্রের কাছে পৌঁছয়

গ্রেপ্তারিতে পুলিশের একটি কৌশল কাজে লেগেছিল। আগ্রা পুলিশ এক মহিলা দারোগাকে চক্রের সঙ্গে যুক্ত করে এবং ইনস্টাগ্রামে তৈরি করা ভুয়ো আইডির মাধ্যমে নেটওয়ার্কে ঢোকে। এই সময় পুলিশ অনেক মোবাইল নম্বরের লোকেশন এবং কল ডিটেইল খতিয়ে দেখে। একটি ইন্টারনেট মিডিয়া আইডির মাধ্যমে এই পুরো ঘটনার গভীরে পৌঁছতে সক্ষম হয়।

আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্কের অংশ এই চক্র

তদন্তকারী সংস্থাগুলির মতে এই চক্র শুধু ভারতের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এটি আন্তর্জাতিক স্তরে আর্থিক সাহায্য পায়। বিদেশ থেকে তহবিল পেয়ে তা বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করা হয়। আয়েশার ভূমিকা এতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণ সে-ই নেটওয়ার্কের আর্থিক ব্যবস্থাপক।

সুরক্ষা এজেন্সিগুলি সতর্ক

এই পর্দাফাঁসের পর কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সুরক্ষা এজেন্সিগুলি সতর্ক হয়ে গিয়েছে। লস্কর-এর সঙ্গে জড়িত এই নেটওয়ার্কের সমস্ত সম্ভাব্য যোগাযোগের তদন্ত শুরু হয়ে গিয়েছে। পুলিশ এবং এটিএস এই বিষয়টিও খতিয়ে দেখছে যে এই নেটওয়ার্কের আর কত সদস্য সারা দেশে সক্রিয় রয়েছে।

Leave a comment