বারাণসীর চৌবেপুরে গঙ্গা নদীর তীরে নবম-দশম শতাব্দীর একটি একমুখী শিবলিঙ্গ পাওয়া গেছে। বিএইচইউ-এর অধ্যাপকরা এটিকে দুর্লভ আখ্যা দিয়েছেন এবং সরকারের কাছে সমগ্র অঞ্চলে প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপের দাবি জানিয়েছেন।
বারাণসী: চৌবেপুর অঞ্চলে স্থানীয় মানুষরা দাহ সংস্কারের সময় একটি দুর্লভ ও অতি প্রাচীন একমুখী শিবলিঙ্গ পেয়েছেন। এই শিবলিঙ্গটি বেলেপাথর দিয়ে তৈরি এবং বিশেষজ্ঞদের মতে এর উৎপত্তি নবম থেকে দশম শতাব্দীতে।
বিএইচইউ-এর অধ্যাপক ও স্থানীয় সাংবাদিকদের একটি দল এটির পরীক্ষা করেছেন। প্রাথমিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এই মূর্তিটি শান্ত মুদ্রা, জটামুকুট এবং গোলাকার কুণ্ডল সহ শিবের ঐতিহ্যবাহী লক্ষণগুলি নিয়ে গঠিত, এবং এই অঞ্চলটি একসময় শৈব মঠ বা শিব মন্দিরের কেন্দ্রস্থল ছিল।
অনুসন্ধানের সময় প্রাচীন অবশেষ ও শিবলিঙ্গ পাওয়া গেছে
স্থানীয় বাসিন্দা এবং বিএইচইউ-এর অধ্যাপক জ্ঞানেশ্বর চৌবে জানিয়েছেন যে, এই অঞ্চলে ঔরঙ্গজেবের শাসনকালে অত্যাচারের অবশেষও পাওয়া যায়। চৌবেপুর এবং আকথা ও বাভনিয়াও-এর মতো আশেপাশের অঞ্চলে সময়ে সময়ে প্রাচীন অবশেষ পাওয়া গেছে।
বিএইচইউ-এর প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক শচীন তিওয়ারি জানিয়েছেন যে, সাধারণত চার বা পাঁচমুখী শিবলিঙ্গ পাওয়া যায়, কিন্তু একমুখী শিবলিঙ্গ অত্যন্ত দুর্লভ বলে মনে করা হয়। এছাড়া, শিবলিঙ্গের নিচের আর্ঘাও অক্ষত অবস্থায় পাওয়া গেছে।
আকথা অঞ্চলে প্রাচীন সভ্যতার প্রমাণ মিলেছে
স্থানীয় এবং প্রত্নতাত্ত্বিক সিদ্ধান্তগুলি ইঙ্গিত দেয় যে, কাশী এবং তার আশেপাশের অঞ্চল প্রায় 4000 বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রাচীন সভ্যতার কেন্দ্রস্থল ছিল। আকথা এবং বাভনিয়াও-এ প্রাপ্ত অবশেষ, শিবলিঙ্গ এবং অন্যান্য মূর্তি এই বিষয়টি নিশ্চিত করে।
বিদুষী অধ্যাপক বিদূলা জয়সওয়াল-এর মতে, আকথা অঞ্চলে খননকার্যের সময় ভবন, বাসনপত্র এবং মূর্তির অবশেষ পাওয়া গেছে, যা প্রমাণ করে যে এই অঞ্চলে প্রাচীন নগর এবং সমৃদ্ধ সংস্কৃতি বিদ্যমান ছিল।
বিএইচইউ-এর অধ্যাপকরা সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন
অধ্যাপক জ্ঞানেশ্বর চৌবে এবং অধ্যাপক শচীন তিওয়ারি সরকারের কাছে রাজঘাট থেকে শুরু করে আকথা এবং বাভনিয়াও পর্যন্ত সমগ্র অঞ্চলে জরিপ করানোর দাবি জানিয়েছেন। তাঁরা মনে করেন যে, বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে এই অঞ্চলের প্রাচীন ইতিহাস ও সভ্যতার অধ্যয়ন দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
এই আবিষ্কার শুধুমাত্র বারাণসী অঞ্চলের প্রাচীন সভ্যতার দাবিকেই শক্তিশালী করেনি, বরং সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় ঐতিহ্যের সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তাকেও তুলে ধরেছে।