জেহানাবাদে আরজেডি বিধায়ক সুদয় যাদবের বিরুদ্ধে কর্মীদের বিদ্রোহ, টিকিট বাতিলের দাবি

জেহানাবাদে আরজেডি বিধায়ক সুদয় যাদবের বিরুদ্ধে কর্মীদের বিদ্রোহ, টিকিট বাতিলের দাবি

জেহানাবাদে আরজেডি বিধায়ক সুদয় যাদবের বিরুদ্ধে দলীয় কর্মী ও মহাজোট সমর্থকেরা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। কর্মীরা লালু-তেজস্বীর কাছে আসন্ন নির্বাচনে তাঁর টিকিট বাতিলের দাবি জানিয়েছেন। অভিযোগ, বিধায়ক উন্নয়নমূলক কাজে গাফিলতি করেছেন এবং উন্নয়ন তহবিলের অপব্যবহার করেছেন।

Jehanabad: বিহার বিধানসভা নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে, রাজনৈতিক তৎপরতা ততই বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে আরজেডি তার শক্ত ঘাঁটি জেহানাবাদে বড় ধাক্কা খেতে পারে। স্থানীয় বিধায়ক সুদয় যাদবের বিরুদ্ধে দলের কর্মী ও মহাজোট সমর্থকেরা সরব হয়েছেন। কর্মীরা লালু প্রসাদ যাদব ও বিরোধী দলনেতা তেজস্বী যাদবের কাছে দাবি জানিয়েছেন, আসন্ন নির্বাচনে সুদয় যাদবের টিকিট বাতিল করে যোগ্য ও শক্তিশালী প্রার্থীকে যেন ময়দানে নামানো হয়।

রবিবার রতনি ফরিদপুর ব্লকের শকুরাবাদে একটি বেসরকারি হলে মহাজোট সমর্থকদের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হয়। এতে বহু সংখ্যক আরজেডি কর্মী, পঞ্চায়েত প্রতিনিধি, স্থানীয় নেতা ও সাধারণ মানুষ যোগ দেন। বৈঠকে বিধায়ক সুদয় যাদবের বিরুদ্ধে "সদয় হাটাও, জেহানাবাদ বাঁচাও" ইত্যাদি স্লোগান দেওয়া হয়।

বিধায়কের বিরুদ্ধে উন্নয়ন না করা ও তহবিল অপব্যবহারের অভিযোগ

স্থানীয় নেতা ও কর্মীদের অভিযোগ, সুদয় যাদব দু'বার বিধায়ক হওয়া সত্ত্বেও এলাকায় কোনও উল্লেখযোগ্য উন্নয়নমূলক কাজ করতে পারেননি। মুরহারা পথ, যা গয়া, জেহানাবাদ ও আরওয়াল জেলাকে সংযোগকারী প্রায় ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ প্রধান সড়ক, তা বেহাল অবস্থায় রয়েছে এবং এখনও পর্যন্ত তার কোনও উন্নতি হয়নি।

সাধু যাদব, মীরা যাদব ও সঞ্জয় রায় সহ অন্যান্য কর্মীদের আরও দাবি, বিধায়ককে দেওয়া প্রায় ৩২ কোটি টাকার উন্নয়ন তহবিল অপব্যবহার করা হয়েছে। প্রতিটি পঞ্চায়েত গড়ে ৭০-৭৫ লক্ষ টাকা পাওয়ার কথা ছিল, কিন্তু অভিযোগ সেই পুরো তহবিল নাকি নিজের পছন্দের লোকেদের মধ্যে বিলিয়ে দেওয়া হয়েছে। কর্মীদের বক্তব্য, এই বিরোধিতা শুধু দল বা নেতাদের বিরুদ্ধে নয়, বরং জনগণের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ।

কর্মীদের দাবি ও টিকিট পরিবর্তনের আবেদন

বৈঠকে উপস্থিত কর্মীরা স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, এই বিরোধিতা জনগণের অনুভূতির কারণে। তাঁরা আরজেডি সুপ্রিমো লালু প্রসাদ যাদব ও বিরোধী দলনেতা তেজস্বী যাদবের কাছে দাবি জানিয়েছেন, আসন্ন নির্বাচনে সুদয় যাদবের পরিবর্তে কোনও যোগ্য ও শক্তিশালী প্রার্থীকে টিকিট দেওয়া হোক।

দলের সমর্থকদের বিশ্বাস, নেতৃত্ব যদি সময় থাকতে পরিস্থিতির সমাধান করেন এবং কোনও সৎ নেতাকে টিকিট দেন, তাহলে জেহানাবাদে আরজেডি-র বিপুল ভোটে জয় নিশ্চিত। অন্যদিকে, যদি অভ্যন্তরীণ বিদ্রোহকে উপেক্ষা করা হয়, তাহলে এর নেতিবাচক প্রভাব মহাজোটের নির্বাচনী সম্ভাবনার ওপর পড়তে পারে।

জেহানাবাদে বিদ্রোহ থেকে নির্বাচনে আরজেডি-র বিপদ

আরজেডি সমর্থকদের বক্তব্য, জেহানাবাদ দীর্ঘকাল ধরে আরজেডি-র ঐতিহ্যপূর্ণ ঘাঁটি। নির্বাচনের ঠিক আগে এমন অভ্যন্তরীণ বিদ্রোহ দলের জন্য ক্ষতিকর প্রমাণিত হতে পারে। কর্মীদের বিশ্বাস, সঠিক প্রার্থীকে ময়দানে নামিয়েই দল এখানে নিরাপদ জয় নিশ্চিত করতে পারে।

দলীয় নেতৃত্বের জন্য এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ সময়। যদি পরিস্থিতি সময় থাকতে সামাল দেওয়া না যায়, তাহলে অভ্যন্তরীণ মতভেদ ও জনগণের ক্ষোভ একসঙ্গে নির্বাচনী কৌশলের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।

Leave a comment