রাশিয়ার আমুর অঞ্চলে এএন-২৪ বিমান দুর্ঘটনায় পতিত। বিমানটিতে ৫০ জন যাত্রী ছিল। খারাপ আবহাওয়া এবং পাইলটের ভুলকে দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে মনে করা হচ্ছে। উদ্ধারকার্য চলছে।
Russia Plane Crash: রাশিয়ার সুদূর পূর্বের আমুর অঞ্চলে একটি বড় বিমান দুর্ঘটনা ঘটেছে। সাইবেরিয়ার অঙ্গারা এয়ারলাইন্সের একটি যাত্রীবাহী বিমান আন্তোনভ এএন-২৪ বিধ্বস্ত হয়েছে। বিমানটিতে প্রায় ৫০ জন যাত্রী ছিল এবং প্রাথমিক তথ্য অনুসারে, এই দুর্ঘটনায় কারও জীবিত থাকার সম্ভাবনা নেই।
জরুরি পরিষেবা জানিয়েছে যে বিমানটির ধ্বংসাবশেষ ঘন জঙ্গলে জ্বলন্ত অবস্থায় পাওয়া গেছে। ঘটনাস্থল থেকে আসা ছবিতে বিমানের সামনের অংশ আগুনের শিখায় ঘেরা দেখা গেছে। উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলের দিকে রওনা হয়েছে কিন্তু এলাকার ভৌগোলিক পরিস্থিতি এবং জঙ্গলে লাগা আগুন উদ্ধার অভিযানে বাধা দিচ্ছে।
ব্লাগোভেশচেনস্ক থেকে টায়ান্ডার উদ্দেশ্যে উড়ান ছিল বিমানটির
এই বিমানটি ব্লাগোভেশচেনস্ক থেকে টায়ান্ডা যাচ্ছিল। আমুর অঞ্চলে অবস্থিত টায়ান্ডা শহর চীনের সীমান্তের কাছে এবং এখানকার রাস্তা পার্বত্য এবং ঘন জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে গেছে। দুর্ঘটনাটি টায়ান্ডা থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে ঘটেছে। বলা হচ্ছে যে বিমানটি রাডার থেকে হঠাৎ गायब হয়ে যায় এবং কিছুক্ষণ পরেই পার্বত্য এলাকায় এর ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যায়।
কারিগরি পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন
দুর্ঘটনার শিকার হওয়া এএন-২৪ বিমানটি ১৯৭৬ সালে তৈরি করা হয়েছিল। এটি একটি সোভিয়েত আমলের বিমান, যা দীর্ঘদিন ধরে চলাচল করছে। এয়ারলাইন দ্বারা এই বিমানটির রক্ষণাবেক্ষণ নিয়মিতভাবে করা হত কিন্তু এত পুরনো বিমানের কারিগরি পরিস্থিতি নিয়ে এখন প্রশ্ন উঠছে।
খারাপ আবহাওয়া এবং পাইলটের ভুল দুর্ঘটনার কারণ?
রাশিয়ান সংবাদ সংস্থা TASS-এর মতে, এই দুর্ঘটনার পেছনে খারাপ আবহাওয়া এবং চালক দলের ভুলকে দায়ী করা হচ্ছে। রিপোর্ট অনুসারে, টায়ান্ডার কাছে অবতরণের সময় দৃশ্যমানতা বেশ কম ছিল এবং সেই সময় পাইলটের সিদ্ধান্ত নিতে ভুল হয়েছিল। যদিও এখনও তদন্ত চলছে এবং আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো একটি কারণের पुष्टि করা হয়নি। রাশিয়ার এভিয়েশন তদন্ত সংস্থা এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
উদ্ধার অভিযানে আসছে সমস্যা
বিমানটি যে এলাকায় বিধ্বস্ত হয়েছে, সেটি অত্যন্ত কঠিন এলাকা। সেখানে ঘন জঙ্গল এবং পাহাড় রয়েছে। এছাড়াও, বিমানের আগুন ত্রাণ ও উদ্ধারকাজে আরও বেশি সমস্যা তৈরি করেছে।
জরুরি পরিষেবার কর্মকর্তা ইউলিয়া পেটিনা জানিয়েছেন যে একটি এমআই-৮ হেলিকপ্টার জ্বলন্ত বিমানের সামনের অংশটি দেখেছে। এরপরেই দ্রুত উদ্ধারকারী দলকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। কিন্তু জঙ্গলে আগুন এবং কঠিন ভৌগোলিক পরিস্থিতির কারণে ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে দেরি হচ্ছে।
চীনের সীমান্তের কাছে ঘটনাস্থল
যেখানে এই বিমান দুর্ঘটনা ঘটেছে সেটি চীনের সীমান্তের কাছাকাছি একটি অঞ্চল। এই এলাকাটি অপেক্ষাকৃত কম জনবসতিপূর্ণ এবং সেখানে बुनियादी পরিকাঠামোর অভাব রয়েছে। তাই ত্রাণ সরবরাহের জন্য হেলিকপ্টার ও বিশেষ যানবাহন মোতায়েন করা হয়েছে।
এখনও পর্যন্ত কোনো জীবিত যাত্রী মেলেনি
এখন পর্যন্ত ঘটনাস্থল থেকে কোনো জীবিত যাত্রী পাওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে যে বিমানটিতে থাকা প্রায় ৫০ জন যাত্রীই এই দুর্ঘটনায় মারা যেতে পারেন। যদিও কর্মকর্তারা এখনও পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে মৃত্যুর সংখ্যা নিশ্চিত করেননি।
দুর্ঘটনার পর পাইলট এবং ক্রুদের যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তদন্ত সংস্থাগুলি খতিয়ে দেখছে যে অবতরণের সময় কোনও প্রযুক্তিগত ত্রুটিকে উপেক্ষা করা হয়েছিল কিনা বা আবহাওয়া নিয়ে কোনো পূর্ব সতর্কতা দেওয়া হয়নি কিনা।