বলিউডের ব্যাড বয় খ্যাত সঞ্জয় দত্তকে ঘিরে চর্চা বরাবরের। কখনও সিনেমার চরিত্রে, কখনও ব্যক্তিগত জীবন ঘিরে বিতর্কে—এই তারকা সব সময় খবরে থাকেন। তবে এবার আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এল এক অচেনা অনুরাগীর ভালবাসা, যার গভীরতা পরিমাপ করা সত্যিই কঠিন। জানা গেছে, ২০১৮ সালে নিশা পাটিল নামের এক মহিলা তাঁর মৃত্যুর আগে নিজের সমস্ত ৭২ কোটি টাকার সম্পত্তি লিখে দিয়ে যান সঞ্জয়ের নামে! কীভাবে সাড়া দিলেন সঞ্জয় দত্ত এই অদ্ভুত সিদ্ধান্তে?
মুম্বইয়ের অন্দরমহলের ঘটনা, স্তম্ভিত অভিনেতা
নিশা পাটিল—এক নাম, যার পরিচয় শুধু 'ভক্তি' |৬২ বছর বয়সি নিশা পাটিল, মুম্বইয়ের একজন সাধারণ বাসিন্দা। জটিল রোগে ভুগছিলেন দীর্ঘদিন। চিকিৎসা চলার মাঝেই জীবনের শেষ পর্বে এসে তিনি তাঁর সব কিছু লিখে দিয়ে যান সঞ্জয় দত্তের নামে। জানা যায়, একাধিকবার ব্যাঙ্কে চিঠি লিখে অভিনেতার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সম্পত্তি হস্তান্তরের আর্জি জানিয়েছিলেন নিশা। এই সংবাদে রীতিমতো হতবাক হয়ে যান সঞ্জয়।
সঞ্জয়ের স্পষ্ট বার্তা—“ওঁকে আমি চিনিই না”
স্রেফ অনুরাগেই এই সিদ্ধান্ত! কিন্তু সঞ্জয় ফিরিয়ে দিলেন সম্পত্তি |সঞ্জয়ের প্রতিক্রিয়া ছিল অবাক করা। তিনি সংবাদমাধ্যমকে জানান, “আমি ওঁকে ব্যক্তিগতভাবে চিনতাম না। তাই তাঁর দেওয়া এতবড় সম্পত্তি আমি নিতে পারি না।” এমনকি তাঁর আইনজীবীও স্পষ্টত জানিয়ে দেন, এই ৭২ কোটি টাকার ওপর অভিনেতার কোনও দাবি নেই। বলিউডে যেখানে সম্পত্তি নিয়ে ভাই-বোনের মামলার নজির ভুরি ভুরি, সেখানে সঞ্জয়ের এই নির্লোভ অবস্থান তাঁকে আরও বড় করে তোলে দর্শকদের চোখে।
আইনজীবীর মাধ্যমে পরিবারকে ফিরিয়ে দিলেন সব সম্পত্তি
‘যা আমার নয়, তা নেওয়ার কোনও অধিকার নেই’—সঞ্জয়ের মহৎ সিদ্ধান্ত |সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে সঞ্জয়কে ফের জিজ্ঞাসা করা হয় এই বিষয়ে। সেখানে সঞ্জয় জানান, “আমার আইনজীবীকে বলি যেন সম্পূর্ণ টাকাটা ওনার পরিবারকে ফিরিয়ে দেন। কারণ, যাঁর সঙ্গে কোনও যোগাযোগই ছিল না, তাঁর থেকে এতবড় উপহার নেওয়া নীতিগতভাবে ঠিক নয়।” এই মন্তব্যে সঞ্জয়ের আত্মসম্মান ও মানবিকতা স্পষ্ট।
ভক্তির জয়, তারকার ব্যতিক্রমী উদাহরণ
সঞ্জয়ের এই সিদ্ধান্ত অনেককেই অনুপ্রাণিত করবে চার দশকেরও বেশি সময় ধরে বলিউডে নিজের স্থান ধরে রাখা সঞ্জয় দত্ত এমন অনেক ঘটনাই দেখেছেন, শুনেছেন। তবে এই অভিজ্ঞতা যে তাঁর কাছে একেবারেই নতুন, সে কথা তিনি নিজেও স্বীকার করেন। বলিউডে যেখানে দান-উপহারের গল্প রোজ শোনা যায়, সেখানে এমন একটি মুহূর্ত যেন তুলে ধরে—তারকা আর মানুষের মধ্যে সম্পর্ক কেবল গ্ল্যামারের নয়, কখনও কখনও তা ছুঁয়ে যায় হৃদয়ের অন্তর্গত প্রদেশেও।