ইউনিভার্সিটি গ্রান্টস কমিশন (UGC) সম্প্রতি নয়টি বিষয়ে লার্নিং আউটকামস-ভিত্তিক (LOCF) কারিকুলাম খসড়া প্রকাশ করেছে। বামপন্থী ছাত্র সংগঠন স্টুডেন্টস’ ফেডারেশন অব ইন্ডিয়া (SFI) এই খসড়াকে ‘আদিম ও অবৈজ্ঞানিক’ আখ্যা দিয়ে তীব্র প্রতিবাদ করেছে। তারা আগামী ২৭ আগস্ট সারা দেশে UGC-র দফতর ও আঞ্চলিক কার্যালয়ের সামনে মিছিল করার ডাক দিয়েছে।
খসড়া দাহ ও বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রতিবাদ
২৫ ও ২৬ আগস্ট, দেশের বিভিন্ন কেন্দ্রীয় ও রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে SFI খসড়া কারিকুলামের কপি দাহ কর্মসূচি আয়োজন করবে। সৃজন ভট্টাচার্যসহ অন্যান্য SFI নেতারা জানিয়েছেন, এই খসড়ায় পাঠ্যক্রমে বিজ্ঞানবিরোধী এবং গেরুয়াকরণমূলক উপাদান অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। বিশেষ উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, রসায়নের শিক্ষায় সরস্বতী বন্দনার উল্লেখ এবং বাণিজ্যের পাঠে কৌটিল্যের ‘অর্থশাস্ত্র’ অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ।
স্বাধীনতা সংগ্রাম ও বিতর্কিত ইতিহাস
ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের পাঠ্যক্রমে ভি. ডি. সাভারকরের লেখা ‘দ্য ইন্ডিয়ান ওয়ার অব ইন্ডিপেনডেন্স’ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা SFI তীব্রভাবে নিন্দা করেছে। তাদের মতে, এমন উদ্যোগের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের কাছে বিকৃত ইতিহাস উপস্থাপন করা হচ্ছে। যারা স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন, তাদের লেখা শিক্ষার্থীদের জন্য গ্রহণযোগ্য নয়।
আরএসএস-র মতাদর্শ চাপানো হচ্ছে শিক্ষায়
বিবৃতিতে SFI উল্লেখ করেছে, এই খসড়ার মাধ্যমে শিক্ষাব্যবস্থায় আরএসএস-এর মতাদর্শ চাপানোর চেষ্টা হচ্ছে। তারা সংবিধানের উদ্ধৃতি দিয়ে জানায়, বৈজ্ঞানিক মনোভাব এবং মানবতাবাদ গড়ে তোলা নাগরিকদের মৌলিক কর্তব্য। কিন্তু এই খসড়া সেই আদর্শের পরিপন্থী।
উচ্চশিক্ষার গেরুয়াকরণ ও অবৈজ্ঞানিক চক্রান্ত
SFI একে উচ্চশিক্ষার গেরুয়াকরণ এবং অবৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিষ্ঠার চক্রান্ত হিসেবে দেখছে। তারা শিক্ষাব্যবস্থায় ঐতিহাসিক সত্য, বিজ্ঞানমনস্কতা ও প্রগতিশীলতার বজায় রাখার জন্য কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে।
শিক্ষার্থীদের সজাগ হওয়ার বার্তা
সংগঠন শিক্ষার্থীদের সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়েছে। তারা বলেছে, শিক্ষার্থীরা যেন বিকৃত ইতিহাস এবং বৈজ্ঞানিকভাবে অসঙ্গত পাঠ্যক্রম থেকে বিরত থাকে। একইসঙ্গে শিক্ষকদেরও দায়িত্ব নিতে হবে, যাতে শিক্ষার মান এবং প্রগতিশীল মূল্যবোধ বজায় থাকে।