পাকিস্তান আবারও ভারতের সাথে অর্থপূর্ণ আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছে। শাহবাজ শরিফ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সাথে সাক্ষাতে এই কথা বলেছেন, কিন্তু ভারতের অবস্থান কঠোর।
Pakistan Talks India: পাকিস্তান আবারও ভারতের সাথে শান্তি আলোচনার প্রস্তাব দিচ্ছে। এইবার প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ নিজেই এই ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন যে তার দেশ ভারতের সাথে গুরুতর এবং অর্থপূর্ণ আলোচনা করতে প্রস্তুত। তিনি ব্রিটিশ হাইকমিশনার জেন ম্যারিয়টের সাথে একটি আনুষ্ঠানিক বৈঠকের সময় এই বিবৃতি দিয়েছেন। এই বৈঠকে আঞ্চলিক পরিস্থিতি এবং ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
সরকারি বিবৃতি অনুযায়ী, শরিফ ভারত-পাক অচলাবস্থার মধ্যে উত্তেজনা কমাতে ব্রিটেনের ভূমিকার প্রশংসা করেছেন এবং পুনরায় বলেছেন যে পাকিস্তান আলোচনার মাধ্যমে সমস্ত অমীমাংসিত সমস্যার সমাধানে আগ্রহী।
‘অপারেশন সিন্দুর’-এর পরে প্রতিক্রিয়া
শরিফের এই মন্তব্যটি ভারত কর্তৃক ৭ মে শুরু হওয়া "অপারেশন সিন্দুর"-এর পরে এসেছে। এই সামরিক অভিযানের উদ্দেশ্য ছিল কাশ্মীর-এর পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান-অধিকৃত অঞ্চলে সন্ত্রাসী ঘাঁটি এবং সামরিক পরিকাঠামোকে লক্ষ্যবস্তু করা। এই অপারেশন ভারতের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছে যে তারা এখন সন্ত্রাসী হামলার জবাবে কঠোর অবস্থান নেবে।
পাকিস্তানের উদ্দেশ্য নিয়ে ভারত সন্দিহান
ভারত সরকার এই শান্তি প্রস্তাবের বিষয়ে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি। নয়াদিল্লি মনে করে যে পাকিস্তান কর্তৃক সময়ে সময়ে করা এই ধরনের ঘোষণা শুধুমাত্র লোক দেখানো, যার উদ্দেশ্য আন্তর্জাতিক চাপ কমানো। ভারত আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছে যে যতক্ষণ না পাকিস্তান তাদের মাটি থেকে সন্ত্রাসবাদ নির্মূল করে, ততক্ষণ কোনও আলোচনা সম্ভব নয়।
ইতিহাস সাক্ষী: আলোচনার প্রস্তাবের পরেই হামলা হয়
পাকিস্তানের আলোচনার প্রস্তাব নতুন কিছু নয়। এর আগেও বহুবার এই ধরনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে কিন্তু প্রতিবারই এর শেষ হয়েছে বিশ্বাসঘাতকতা ও সন্ত্রাসবাদের মাধ্যমে। কিছু প্রধান ঘটনা:
কার্গিল যুদ্ধ (১৯৯৯): ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী যখন লাহোর বাস যাত্রার মাধ্যমে শান্তির হাত বাড়িয়ে দিচ্ছিলেন, ঠিক তখনই পাকিস্তানি সেনারা কার্গিলে অনুপ্রবেশ করে। এটি ছিল একটি বড় বিশ্বাসঘাতকতা এবং এর ফলস্বরূপ একটি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ হয়েছিল।
আগ্রা শীর্ষ সম্মেলন (২০০১): কার্গিলের পরে ভারত আবারও আলোচনার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু সেই বছরই ডিসেম্বরে ভারতীয় সংসদে হামলা হয়, যা পাকিস্তান সমর্থিত সন্ত্রাসী সংগঠনগুলো দ্বারা করা হয়েছিল।
মুম্বাই হামলা (২০০৮): বহু বছরের কূটনীতি এবং বিশ্বাস পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টা সত্ত্বেও, পাকিস্তান ভিত্তিক লস্কর-এ-তৈয়বা ২৬/১১ হামলা চালায় যাতে ১৬৬ জন নিরীহ মানুষ প্রাণ হারান। এই ঘটনা ভারত ও পাকিস্তানের সম্পর্ককে কয়েক দশক পিছিয়ে দিয়েছে।