লর্ডস টেস্টের তৃতীয় দিনের অন্তিম লগ্নে যেন মাঠের বাইরেই শুরু হয়ে গেল এক নতুন যুদ্ধ। স্টাম্প ঘোষণার ঠিক আগে, ভারতের মাটিতে ‘অভ্যাগত’ ইংরেজদের আচরণে অগ্নিশর্মা হলেন টিম ইন্ডিয়ার অধিনায়ক শুভমান গিল। বেন ডাকেট ও জ্যাক ক্রলির এমন কৌশলী ‘স্লো প্লে’ দেখে রাগ সামলাতে পারলেন না তিনি। ক্রিকেট মাঠে আচরণবিধি ভাঙার একঘেয়ে চালবাজিতে এবার চোখে চোখ রেখে জবাব দিল ভারত।
রানআপে ব্যাঘাত, বুমরাহর ওভারে সময় নষ্টের চেষ্টা ইংল্যান্ডের
ভারতের পেসার জসপ্রীত বুমরাহ যখন রানআপ শুরু করেছেন, তখন আচমকাই স্ট্রাইকিং এ থাকা জ্যাক ক্রলি স্টাম্প ছেড়ে বেরিয়ে আসেন। একবার নয়, চার-চারবার এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন তিনি। যার জেরে ওভার সম্পূর্ণ করতেই বিলম্ব হয়। ম্যাচ রেফারি না থাকলেও, ভারতীয় দল বিষয়টি ভালভাবে নেয়নি। শুভমান প্রথমে ধৈর্য ধরে কথা বলেন, কিন্তু পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছায় যেখানে মাথা ঠান্ডা রাখা কঠিন।
‘অওকাত’ দেখিয়ে দিলেন শুভমান! কটাক্ষে জর্জরিত ক্রলি
চতুর্থবার ইচ্ছাকৃতভাবে বুমরাহর ওভার নষ্ট করার চেষ্টা করতেই আর নিজেকে সংযত রাখতে পারেননি গিল। ক্রলির দিকে রীতিমতো এগিয়ে গিয়ে কটাক্ষে হাততালি দেন। সেই দৃশ্যেই স্পষ্ট, ভারতীয় দল এবার মুখ বুজে সহ্য করবে না। মহম্মদ সিরাজ, করুণ নায়ারদের হাবভাবেও বিরক্তির ছাপ স্পষ্ট। এ যেন নীরব লড়াই নয়, চোখে চোখ রেখে প্রতিশোধের বার্তা।
চোটে থেমে গেল নাটক! ফের মাঠে ফিজিও, ভারতীয়দের চরম বিরক্তি
ওভারের পঞ্চম বলটা লাগে ক্রলির হাতে। সঙ্গে সঙ্গে থেমে যায় খেলা। ডাক পড়ে ফিজিওর। টানা সময় নষ্টে চূড়ান্ত বিরক্ত ভারতীয় শিবির। গিল তো রীতিমতো উত্তেজিত! যদিও ক্রলি যেন নিঃসন্তাপ শিশুর মতো পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু গিলের প্রতিক্রিয়া বুঝিয়ে দেয়, এমন ‘নাটক’ এবার চলবে না।
ডাকেটের ঢাল হয়ে আসা, বাকযুদ্ধে গর্জে উঠল লর্ডস
সঙ্গে সঙ্গেই ক্রলির রক্ষায় এগিয়ে আসেন বেন ডাকেট। শুরু হয় কথার লড়াই। তবে ভারতীয় ফিল্ডাররা এত সহজে পিছু হঠার পাত্র নন। এরপর বুমরাহ শেষ বলটি করতেই ক্রলি সোজা হাঁটা দেন প্যাভিলিয়নের দিকে। কিন্তু ভারতের খেলোয়াড়রা তখনও মাঠেই ক্ষোভে ফুঁসছেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল ভিডিও, গর্জে উঠেছে ‘নিউ ইন্ডিয়া’!
স্টার স্পোর্টসের শেয়ার করা সেই ভিডিও এখন ভাইরাল। ‘খেলতে নয়, শেখাতে এসেছি’— এই বাক্যবাণে চিহ্নিত হয়ে উঠছে গিলের দল। ভারতীয় ক্রিকেট আজ কেবল কৌশলের নয়, আত্মমর্যাদারও নাম। ইংরেজদের মাঠে দাঁড়িয়ে, চোখে চোখ রেখে যে ভাবে পালটা দিয়েছে ভারতীয় দল, তাতে বোঝা যায়— এবার আর কেউ চুপ করে সহ্য করবে না।