রাষ্ট্রপতি মুর্মু রাজ্যসভায় উজ্জ্বল নিকম, হর্ষবর্ধন শ্রিংলা সহ ৪ জনকে মনোনীত করলেন

রাষ্ট্রপতি মুর্মু রাজ্যসভায় উজ্জ্বল নিকম, হর্ষবর্ধন শ্রিংলা সহ ৪ জনকে মনোনীত করলেন

রাষ্ট্রপতি মুর্মু রাজ্যসভার জন্য উজ্জ্বল নিকম, হর্ষবর্ধন শ্রিংলা, মীনাক্ষী জৈন এবং সি. সদানন্দন মাস্টারকে মনোনীত করেছেন। তাঁদের প্রত্যেককে নিজ নিজ ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য এই সম্মাননা দেওয়া হয়েছে।

নয়াদিল্লি: রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু সংবিধানের ৮০ অনুচ্ছেদ অনুসারে রাজ্যসভার জন্য চার নতুন ব্যক্তিত্বকে মনোনীত করেছেন। এই চারজন ব্যক্তি তাঁদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে বিশেষ কাজ ও অবদানের ভিত্তিতে উচ্চ সদনে এসেছেন। এঁদের মধ্যে রয়েছেন আইনজীবী উজ্জ্বল নিকম, প্রাক্তন বিদেশ সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা, ইতিহাসবিদ ড. মীনাক্ষী জৈন এবং সমাজকর্মী সি. সদানন্দন মাস্টার। রাজ্যসভার শূন্যপদ পূরণের জন্য তাঁদের এই মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

উজ্জ্বল নিকম: সন্ত্রাসবাদ থেকে শুরু করে হাই-প্রোফাইল মামলা পর্যন্ত আইনি লড়াই

উজ্জ্বল নিকম দেশের অন্যতম প্রসিদ্ধ আইনজীবী। তিনি বহু হাই-প্রোফাইল ফৌজদারি মামলায় সরকারি পক্ষের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। তাঁর সবচেয়ে আলোচিত মামলা ছিল ২৬/১১ মুম্বাই সন্ত্রাসী হামলা, যেখানে তিনি অভিযুক্ত আজমল কাসাবের সাজা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। এছাড়াও, তিনি মমতা কুলকার্নি মাদক মামলা, প্রেমনাথ হত্যা মামলা এবং যশবন্ত সোনवणे হত্যা মামলার মতো গুরুত্বপূর্ণ মামলাগুলিতেও প্রভাবশালী ভূমিকা পালন করেছেন।

হর্ষবর্ধন শ্রিংলা: বিদেশ নীতির সুদক্ষ কৌশলবিদ

হর্ষবর্ধন শ্রিংলা ভারতীয় বিদেশ পরিসেবার একজন সিনিয়র অফিসার ছিলেন। তিনি জানুয়ারি ২০২০ থেকে এপ্রিল ২০২২ পর্যন্ত ভারতের বিদেশ সচিব ছিলেন। বিদেশ বিষয়ক বিষয়ে তাঁর গভীর অভিজ্ঞতা রয়েছে এবং তিনি আমেরিকা, থাইল্যান্ড, বাংলাদেশ সহ বিভিন্ন দেশে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। শ্রিংলা কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে ভ্যাকসিন কূটনীতির মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। রাজ্যসভায় তাঁর উপস্থিতি বিদেশ নীতি, জাতীয় নিরাপত্তা এবং বৈশ্বিক বিষয়গুলির উপর সরকারের বোঝাপড়াকে আরও শক্তিশালী করতে পারে।

ড. মীনাক্ষী জৈন: ভারতীয় ইতিহাসের নিরপেক্ষ ভাষ্যকার

ড. মীনাক্ষী জৈন ইতিহাসের একজন সুপরিচিত পণ্ডিত। তিনি দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাসের অধ্যাপক ছিলেন। ভারতীয় সংস্কৃতি, ঐতিহ্য এবং ইতিহাসের উপর তাঁর গবেষণা এবং লেখালেখির কাজ ব্যাপক প্রশংসা পেয়েছে। রাম মন্দির, জাতি ব্যবস্থা এবং ভারতীয় সমাজের শিকড় নিয়ে তাঁর লেখা বইগুলি জনসাধারণের আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করে। তাঁর রাজ্যসভায় আসার ফলে শিক্ষা, ইতিহাস এবং সংস্কৃতির উপর ভিত্তি করে নীতিগুলিতে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি আসতে পারে।

সি. সদানন্দন মাস্টার: সমাজসেবা এবং শিক্ষার শক্তিশালী স্তম্ভ

কেরলের সমাজকর্মী সি. সদানন্দন মাস্টার দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষা ও সমাজসেবামূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। তিনি এমন কয়েকজন ব্যক্তির মধ্যে একজন, যিনি রাজনৈতিক সহিংসতার শিকার হওয়া সত্ত্বেও সমাজসেবা থেকে পিছপা হননি। তিনি কেরলের অনগ্রসর সম্প্রদায়ের জন্য শিক্ষা, পুনর্বাসন এবং কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য কাজ করেছেন। তাঁর জীবন সমাজের দুর্বলতম শ্রেণির জন্য অনুপ্রেরণা।

সংবিধানের ৮০ অনুচ্ছেদ এবং মনোনয়ন প্রক্রিয়া

ভারতীয় সংবিধানের ৮০ অনুচ্ছেদ রাষ্ট্রপতিকে রাজ্যসভায় ১২ জন সদস্যকে মনোনীত করার অধিকার দেয়। এই মনোনীত সদস্যরা সাহিত্য, বিজ্ঞান, কলা এবং সমাজসেবার মতো ক্ষেত্রগুলিতে বিশেষ অবদান রেখেছেন এমন ব্যক্তিদের মধ্য থেকে নির্বাচিত হন। এবার যে চার সদস্যকে মনোনীত করা হয়েছে, তাঁরা এই সমস্ত ক্ষেত্রগুলির প্রতিনিধিত্ব করেন।

Leave a comment