অনুপ্রবেশকারীর অভিযোগে সরব বিজেপি
পশ্চিমবঙ্গকে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের আস্তানা বানানো হয়েছে— এমন অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরেই তুলছে বিজেপি। এসআইআর নিয়ে তৈরি হওয়া রাজনৈতিক আবহে ফের একই ইস্যু সামনে আনলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর বক্তব্য, যদি এসআইআর কার্যকর হয়, তবে ভুয়ো ভোটার ও অনুপ্রবেশকারীদের নাম বাদ যাবে ভোটার তালিকা থেকে, যা তৃণমূল কংগ্রেসকে ক্ষমতাহীন করে দেবে। আর তাই শাসকদল মরিয়া হয়ে এই প্রক্রিয়ার বিরোধিতা করছে বলে অভিযোগ তাঁর।
প্রধানমন্ত্রীর সামনে সরাসরি আবেদন
রাজ্যের বিরোধী নেতা এবার সরাসরি দেশের প্রধানমন্ত্রীর দিকেই আঙুল তুললেন। বিজেপির দমদম সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, “এই রাজ্যের সরকার সীমান্ত খুলে দিয়ে ৫৪০ কিলোমিটার এলাকা দিয়ে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের ঢুকিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গকে বাঁচাতে হলে আপনাকেই এগিয়ে আসতে হবে।” তাঁর দাবি, বাংলাকে অনুপ্রবেশমুক্ত করার একমাত্র পথ হল কেন্দ্রীয় সরকারের কড়া পদক্ষেপ।
বাংলার বাঙালিদের অস্তিত্বের ডাক
শুভেন্দুর ভাষণে উঠে আসে আবেগঘন আবেদনও। তিনি প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জীর স্বপ্নের বাঙালি হিন্দু হোমল্যান্ড আপনাকেই রক্ষা করতে হবে। আমরা বাঙালিরা বাঁচতে চাই।” বক্তব্যে স্পষ্ট, ২০২৬ সালের নির্বাচনের আগে তিনি এই ইস্যুকেই রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু করতে চাইছেন।
রাজনৈতিক তাৎপর্য গভীর
রাজনীতির পর্যবেক্ষকদের মতে, বিরোধী নেতার এই প্রকাশ্য আবেদন শুধু বক্তব্য নয়, নির্বাচনের আগে কৌশলও বটে। বিজেপি বারবার অভিযোগ করছে, বর্তমান সরকার অনুপ্রবেশকারীদের প্রশ্রয় দিয়ে নিজেদের ভোটব্যাঙ্ক শক্ত করছে। তাই বাংলাকে "হিন্দু হোমল্যান্ড" হিসেবে বাঁচিয়ে রাখার বার্তা বিজেপির প্রচারে বড় অস্ত্র হয়ে উঠতে পারে।
প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকায় কৃতজ্ঞতা
তবে শুধু অভিযোগেই সীমাবদ্ধ থাকেননি শুভেন্দু। তিনি প্রকাশ্যে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। বাংলায় এসে তিনটি মেট্রো রুটের উদ্বোধন থেকে শুরু করে উন্নয়নের নানা প্রকল্প শুরু করেছেন নরেন্দ্র মোদী— সেই প্রসঙ্গ টেনে বিরোধী নেতা বলেন, “উন্নয়নের আরেক নাম নরেন্দ্র মোদী। বাংলার মানুষ তাঁর কাজে খুশি।” একইসঙ্গে তিনি প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও রাজ্য বিজেপি সভাপতিকে প্রণাম ও শ্রদ্ধা জানান।
উন্নয়ন ও অনুপ্রবেশ— দুই মেরুর রাজনীতি
ফলে একদিকে উন্নয়নের বার্তা, অন্যদিকে অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে লড়াই— এই দুই মেরুর ইস্যু মিলিয়েই শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্য ঘিরে তৈরি হচ্ছে নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ। বাংলার মানুষের ভোটে কোনটি কতটা প্রভাব ফেলবে, তা বোঝা যাবে আগামী নির্বাচনে। তবে আপাতত বিজেপির পক্ষ থেকে বাংলাকে বাঁচানোর ডাক জোর গলায় তুলে দিলেন শুভেন্দু অধিকারী।