ভারত ও সিঙ্গাপুর ২৮ জুলাই থেকে ১ অগাস্ট পর্যন্ত সিমবেক্স ২০২৫ নামক একটি যৌথ নৌ-মহড়া করেছে। এই মহড়াটি সামুদ্রিক সুরক্ষা এবং কৌশলগত অংশীদারিত্বকে শক্তিশালী করার দিকে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ছিল।
Indian-Singapore: ভারত ও সিঙ্গাপুরের নৌবাহিনী ২৮ জুলাই থেকে ১ অগাস্ট ২০২৫ পর্যন্ত যৌথ বার্ষিক নৌ-মহড়া 'সিমবেক্স ২০২৫'-এর আয়োজন করেছে। এই মহড়াটি সিঙ্গাপুর প্রজাতন্ত্রের নৌবাহিনী (RSN) এবং ভারতীয় নৌবাহিনীর মধ্যে দীর্ঘতম ধারাবাহিক দ্বিপাক্ষিক মহড়া। এটির শুরু ১৯৯৪ সালে এবং এইবার ৩২তম সংস্করণ আয়োজিত হয়েছে।
উপকূলীয় এবং সামুদ্রিক পর্যায়ে বিভক্ত ছিল মহড়া
সিমবেক্স ২০২৫ দুটি প্রধান পর্যায়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রথম পর্যায়টি সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি নৌঘাঁটিতে একটি উপকূলীয় অনুশীলন ছিল, যেখানে কৌশলগত আলোচনা, পরিকল্পনা তৈরি এবং সমন্বয়ের উপর জোর দেওয়া হয়েছিল। দ্বিতীয় পর্যায়টি ছিল সামুদ্রিক মহড়া, যা দক্ষিণ চীন সাগরের দক্ষিণ প্রান্তে পরিচালিত হয়েছিল। এই পর্যায়টি কৌশলগত রণকৌশল, আকাশপথে সমন্বয় এবং নৌবাহিনীর সম্মিলিত ক্ষমতা মূল্যায়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
প্রধান জাহাজ এবং বিমান অন্তর্ভুক্ত
ভারতীয় নৌবাহিনীর পক্ষ থেকে এই মহড়ায় 'শিवालিক' শ্রেণির ফ্রিগেট আইএনএস সাতপুরা অন্তর্ভুক্ত ছিল। এই জাহাজটি দেশীয় প্রযুক্তিতে নির্মিত এবং উন্নত রাডার, অস্ত্র ব্যবস্থা এবং হেলিকপ্টার ডেক দিয়ে সজ্জিত।
সিঙ্গাপুর নৌবাহিনীর পক্ষ থেকে 'ফর্মেডেবল' শ্রেণির ফ্রিগেট আরএসএস সুপ্রিম এবং 'ভিক্টরি' শ্রেণির মিসাইল করভেট আরএসএস ভিজিল্যান্স মহড়ায় অংশ নিয়েছে। এছাড়াও সিঙ্গাপুরের বিমানবাহিনী অর্থাৎ RSAF-এর একটি এস৭০বি নৌসেনা হেলিকপ্টার, দুটি ফকার-৫০ সামুদ্রিক টহল বিমান এবং দুটি এফ-১৫এসজি জঙ্গি বিমানও মহড়ায় অংশ নিয়েছিল।
কৌশলগত দক্ষতা বাড়ানোর প্রচেষ্টা
সিমবেক্সের উদ্দেশ্য শুধুমাত্র দুটি নৌবাহিনীর মধ্যে পারস্পরিক সমন্বয় এবং বিশ্বাসকে শক্তিশালী করা নয়, বরং এই মহড়া জটিল সামুদ্রিক পরিস্থিতিতে যৌথ অভিযানের ক্ষমতাকেও উন্নত করে। এই মহড়ায় যুদ্ধকালীন কৌশল, আকাশপথে আন্তঃকার্যকারিতা, অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান, অস্ত্রের ব্যবহার এবং যোগাযোগ দক্ষতার প্রদর্শন করা হয়েছে।
কমান্ডিং অফিসারদের প্রতিক্রিয়া
আরএসএস সুপ্রিম-এর কমান্ডিং অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্নেল অ্যারন কোহ বলেছেন, "সিমবেক্স উভয় দেশের নৌবাহিনীর মধ্যে দীর্ঘমেয়াদী এবং স্থায়ী সম্পর্কের প্রতীক। এই মহড়া আমাদের নৌসেনা কর্মীদের জন্য অপারেশনাল দক্ষতা, পারস্পরিক বোঝাপড়া এবং বিশ্বাসকে বাড়ানোর একটি শক্তিশালী প্ল্যাটফর্ম।"
ভারতীয় নৌবাহিনীর কর্মকর্তারাও মনে করেন যে এই ধরনের যৌথ মহড়া সামুদ্রিক অঞ্চলে ভারতের কৌশলগত নাগাল এবং অংশীদারিত্বকে শক্তিশালী করে।